সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল হয়নি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ নির্মম আচরণের মাধ্যমে বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি নির্মমতার চিত্র উঠে এসেছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কোনো চেষ্টাই করেনি পুলিশ। ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, হাজারো শিক্ষার্থী, এমন কী শিক্ষকরাও পুলিশের বর্বর আচরণের শিকার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করা হয় এবং তাদেরকে নির্বিচারে আটক ও গ্রেপ্তার করা হয়। কয়েকটি ক্যাম্পাসে ইহুদি ছাত্র সংঘটনও ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভে হামলা করেছে।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের লেবাসধারী যুক্তরাষ্ট্রর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রবিক্ষোভে পুলিশী হামলার সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর কিছু চিত্র ও সংবাদ সংক্ষেপ:
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথের বাইরে বিক্ষোভকারীদের ওপর নজর রাখছে পুলিশ। ছবি: রয়টার্স
এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছেন পুলিশের সদস্যরা। ছবি: এএফপি
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের মুখোমুখী বিক্ষাওভকারী শিক্ষার্থীরা। ছবি: এএফপি
সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছেন পুলিশের সদস্যরা। ছবি: রয়টার্স
উপরোক্ত ছবিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কলঙ্কজনক নমুনা!
এই যুক্তরাষ্ট্র আবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার চবক দেয়। এইসব চবক শুনে আবার এই দেশের কিছু তথাকথিত সুশীল পাছার কাপড় তুলে নাচে। বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের চবকের কিছু উদাহরণ বিভিন্ন পত্রিকা থেকে হুবহু তুলে ধরলাম:
শ্রমিকদের উপর দমন-পীড়নে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
বাংলাদেশে সহিংস পন্থায় শ্রমিক আন্দোলন দমনে নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে বাংলাদেশে শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর বিরুদ্ধে চলমান দমন-পীড়ন নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন পীড়নে উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের
অথচ কয়দিন পরপর দেখা যায় বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন ও রাজনৈতিক সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ওয়াশিংটনে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিও মিলার বলেন, "আমরা সপ্তাহান্তের রাজনৈতিক বিক্ষোভকে ঘিরে বাংলাদেশে দমন-পীড়ন ও রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্র এসব সহিংসতার পুঙ্খানুপুঙ্খ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে এবং জড়িত অপরাধীদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যেন শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে পারে এবং তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে, সে জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে মৌলিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনকে সম্মান করতে এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের মতো কাজ থেকে বিরত থাকতে আমরা সব পক্ষকে আহ্বান জানাই।"
বাংলাদেশে হিরো আলমের মতো একজন বিকৃত রুচির মানুষকে একটা চড়-তাপ্পড় মারলে পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টিতে মানবাধিকার ভূলুন্ঠিত হয়ে যায়, আর গাজায় হাজার হাজার নীরিহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করলেও মানবাধিকারের ঘুম ভাঙে না! যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর এই দুইমূখী নীতির জন্য এদের কোনো লজ্জা নেই। এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকেরা বলেন, "আমরা সব সময় সব পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিই।" আর আমাদের দেশের কিছু নব্য রাজাকার যারা নিজের দেশের চেয়ে পাকিস্তানের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয় তারা বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে ভুলবাল তথ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রতিদিন ধর্না দেয়।
সূত্র: দেশ-বিদেশের সংবাদপত্র
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৫