দরজা- ঘর থেকে বের হওয়া বা ঘরে ঢোকার একমাত্র মাধ্যম যার প্রধান কাজ বাড়ী বা কক্ষের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হলেও কখনো কখনো এই দরজাই হয়ে উঠতে পারে ঘরের সৌন্দর্যের একটি প্রধাণ উপকরণ। প্রচলিত উপকরণগুলোর মধ্যে আধুনিক স্থাপনার কাঁচ, ব্যাংকের ভল্টের স্টীল, সাধারণ টয়লেটের পারটেক্স বা প্লাইউড ইত্যাদি জনপ্রিয় হলেও এখন পর্যন্ত সনাতন ঘরানার কাঠের দরজার চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। আর এই কাঠের দরজার মধ্যেও অতি অভিজাত শ্রেণীর দরজা হলো "ডিজাইনস ডোর" বা কারুকার্য খচিত দরজা। এই ডিজাইনস ডোর নিয়েই বলবো এখন।
কাঠের কারুকার্য বা নকশাতো যেকোন দরজাতেই থাকতে পারে কিন্তু "ডিজাইনস ডোর" এর ধারণাটা একেবারেই অনন্য। ডিজাইনস ডোর বলতে বুঝায় "একদম ইউনিক ডিজাইনের একটি মাত্র দরজা"।
এটি একপ্রকার বিমূর্ত শিল্প যার একটি মাত্র কপিই তৈরী হয়। পরে কখনো হুবহু একই ডিজাইনের দরজা আর তৈরী করা হয়না।
"ডিজাইন ডোরস্"এর বিশেষত্ব কি? এর মূল বৈশিষ্ঠ হল এর কাঠ। সাধারণ বার্মাটিক এ তৈরী হলেও এই কাঠের জন্য একটি বিশেষ প্রকার সিজনিং প্রয়োজন হয়। এই সিজনিং টি সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুলও বটে। সিজনিং করা কাঠটির ওপর করা হয় নকশা। সাধারণত ফুল, লতা-পাতা, পাখি ও প্রজাপতি, মাছ এমনকি কখনো কখনো বিমূর্ত শিল্পও ডিজাইন করা হয়। সিজন করা থেকে শুরু করে ডিজাইন শেষ করা পর্যন্ত ৩ থেকে (ক্ষেত্রভেদে) ৬ মাস পর্যন্ত লেগে যায়।
একটি সাধারণ ডিজাইন ডোরের উচ্চতা ৮ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। সিজনিংটা স্পেশাল হওয়ায় সাধারণ দরজার তুলনায় ডিজাইন ডোরের স্থায়িত্ব বেড়ে যায় বহুগুণে। কোন কোন ডিজাইন ডোরের ক্ষেত্রে ১০০ বছর পর্যন্ত স্থায়িত্বের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। ডিজাইন, কাঠের কার্ভ ও রং এর নিশ্চয়তাও বাড়ে বহুগুনে।
ডিজাইন ডোরস তৈরী করতে মূলত যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তা হলো Wood Curving বা কাঠ খোদাই। এজন্য ডিজাইন ডোরসকে উড কার্ভড ডোরসও বলা হয়। উড কার্ভিং এর জন্য বিশেষ যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, যথেষ্ট ব্যয়বহুলও বটে। সাধারণ কাঠমিস্ত্রি নয় বরং বিশেষ প্রশিক্ষণ পাওয়া ৫-৬ জন দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হয় প্রতিটা ডিজাইন ডোর তৈরীতে। আর তাছাড়া মূল "ডিজাইন"টি আর্কিটেক্ট বা ডিজাইনারের মেধাস্বত্ব যাতে অন্যকেউ কোন হস্তক্ষেপ করতে পারবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:৫৪