মাজার ভাঙ্গার পক্ষে যারা যুক্তি দেন, তাদের উদ্দেশ্যে একটি প্রশ্ন: মাজার ভাঙা কি সমস্যার একমাত্র সমাধান হতে পারে? নাকি মাজারে যদি কোনো অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড ঘটে থাকে, সেগুলো বন্ধ করে সবাইকে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনা বেশি জরুরি?
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কেমনভাবে মানুষকে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে এনেছিলেন? তিনি কি কখনো পথভ্রষ্টদের আঘাত করে, শক্তি প্রয়োগ করে তাদের ইসলামের পথে এনেছিলেন, নাকি তাদের বুঝিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে, ইসলামের সঠিক শিক্ষা দিয়ে তাদের পথ দেখিয়েছিলেন? ইসলামের মর্মবাণী যে ভালোবাসা, সহনশীলতা, এবং শিক্ষা—তা তিনি দেখিয়েছেন।
উগ্রতা ও ধর্মান্ধতা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা নয়
আমরা যেন ভুলে না যাই যে উগ্রতা এবং ধর্মান্ধতা মহানবী (সঃ) এর প্রচারিত ইসলামের সঙ্গে সম্পূর্ণ বেমানান। ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম, যেখানে প্রতিটি মানুষের মর্যাদা এবং ভালোবাসা রয়েছে। উগ্রতা দিয়ে কখনো সত্য দ্বীনের প্রচার সম্ভব নয়।
মাজার জিয়ারত ও ইসলামের শিক্ষা
ইসলামে মাজার জিয়ারত করা একটি সুন্নাত। মহানবী (সঃ) নিজেও তাঁর পিতামাতা এবং অন্যান্য প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করতেন। তবে ইসলামে মাজারে গিয়ে সেজদা করা সম্পূর্ণ হারাম। কুরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে আল্লাহ ছাড়া কাউকে সেজদা করা যাবে না। এই শিক্ষা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের আকিদার মূল ভিত্তি।
তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সমস্যাটা আসলে ভুল বোঝাবুঝি এবং শিক্ষার অভাবে। যারা মাজার জিয়ারতকে পূজা হিসেবে গণ্য করে, তারা আসলে ইসলামের মূল আকিদা এবং শিক্ষা থেকে দূরে।
পূজা ও জিয়ারতের পার্থক্য
যারা মাজার জিয়ারতকে পূজার সঙ্গে তুলনা করেন, তারা কি আসলেই বিয়ে এবং যিনার মধ্যে পার্থক্য বোঝেন? যেমন বিয়ে বৈধ এবং যিনা হারাম, তেমনি মাজার জিয়ারত বৈধ কিন্তু মাজারে সেজদা করা হারাম। ইসলাম এই সূক্ষ্ম পার্থক্যগুলো বুঝতে এবং মানতে শিখিয়েছে।
সুতরাং, মাজার ভাঙা নয়, বরং শিক্ষার মাধ্যমে, ইসলামের সঠিক বার্তা দিয়ে, মানুষকে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনার দিকেই আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত। ইসলামের সৌন্দর্য যে সহনশীলতা এবং ভালোবাসায়—এই বার্তা সবার কাছে পৌঁছানো জরুরি।