রেজা হাসান ত্বকি। দু'জনের চারটি চোখে একই রকম স্বপ্ন দেখতাম আমরা। শিক্ষকের প্রিয় ছাত্র হয়ে, বন্ধুদের মধ্যমণি থেকে পরিবারের একনিষ্টতায় সে ছিল অনবদ্য।
কিন্তু জীবনটা শুরুতেই থেমে যেতে যাইছে তার। থামিয়ে দিয়েছে গুটিকয়েক মানুষের কালো থাবা। 'ত্বকি' হতে পারে একটি সাধারণ নাম কিন্তু অসাধারণ হবার সব গুণাবলি নিয়েই এগিয়ে চলছিল। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ এর ৪৮-ব্যাচের ৪র্থ বর্ষের মেধাবী ছাত্র রেজা হাসান ত্বকি। পরিবারের সবচেয়ে ছোট ছেলেটি মানুষের তরে নিজেকে নিবেদিত করার তরেই ডাক্তার হতে চেয়েছিল। ছাত্র থাকা অবস্থাতেই বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে নিজ গ্রামের মানুষ গুলোকে এক সুতোয় গেঁথে রেখেছিল। তার তত্ত্বাবধানে নিজ গ্রামের তরুণদের মাধ্যমে প্রতি মাসে ৫০-৬০ জন রক্ত দাতা নিয়মিত রক্ত দান করতো মেডিসিন ক্লাবে। নিজ এলাকার মানুষের বিপদে সবচেয়ে আপনজন, চোখের মণি।
সেই নয়নের মণি আজ হাসপাতালের 'নিবির পরিচর্চা কেন্দ্রে' চিকিৎসাধীন। গত ১৪ জুন, ২০১৪ তারিখে ময়মনসিংহ শহরে বোনের বাসা থেকে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পর রাস্তায় তাকে এলোপাতারি আঘাত করে সন্ত্রাসী লিমন কোন পূর্ব শত্রুতা না থাকা স্বত্ত্বেও। তাড়াতাড়ি তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
আঘাতের কারণে ত্বকির ফুসফুস,Spinal Cord/Cervical এ ক্ষতিগ্রস্থ হয় মারাত্বক ভাবে। ত্বকির বেঁচে যাওয়াটাই ডাক্তারদের কাছে অবাক করা বিষয় তখন! দীর্ঘদিন ধরে যন্ত্রের সাহায্যে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে ত্বকিকে। বিভিন্ন যন্ত্রে আবদ্ধ ত্বকি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ-১ এ চিকিৎসাধীন। বর্তমানে তার ডান ফুসফুস অকেজো, যার কারণে শরীরের ডান পাশ প্রায় প্যারালাইজড। স্পাইনাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় শ্বাসতন্ত্র কাজ করছে না এখনও। কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে, এখনও কথা বলতে পারছে না সে। শুধুই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে চোখের পানি ঝরছে অবিরত। ইতিমধ্যে দেশের বড় বড় নিউরোসার্জন, এপোলো, স্কয়ার, ইউনাইটেডের বড় বড় ডাক্তারদের সাথে কথা বলা হয়েছে। কেউ কোন ধরনের চিকিৎসা নিশ্চয়তা দিতে পারেননি। বাংলাদেশে Spinal Cord Injury/Cervical Injury কোন চিকিৎসা নেই। ভারতের মাদ্রাজেও কথা বলা হয়েছে, লোক পাঠানো হয়েছিল মাদ্রাজের হাসপাতালেও। সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়ায় এর চিকিৎসা সম্ভব। বিদেশের কয়েকটি হাসপাতাল হতে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গিয়েছে ত্বকির সমস্যা গুলোর চিকিৎসায়।
কতদিন এভাবে নিজ সন্তানকে, নিজের সবচেয়ে আদরের ভাইটিকে বিছানায় কাঁদতে দেখা যায়? তাই সব ভাই-বোন ও পরিবারের সবার ইচ্ছেতে ত্বকিকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সিঙ্গাপুরে এয়ার এম্বুলেন্সের ভাড়া ৬৪ লাখ টাকা (সাধারণ যাত্রী বিমানে নেয়া সম্ভব না)। চিকিৎসা বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা প্রয়োজন। অংকটা হইত অনেক বেশি। কিন্তু সবার সম্মিলিত চেষ্টায় অসম্ভব নয়। এ দেশে এখনও অনেক ভাল মানুষ রয়েছে, যারা মানুষের তরে এগিয়ে আসার জন্য দুই পায়ে দাড়ানো। পরিবারের সম্পত্তি-জমি ও ব্যাঙ্কে জমানো টাকা হতে ১ কোটি ম্যানেজ হয়ে যাবে হইত তবুও থেকে যায় লাখ-লাখ টাকা।
চলুন না সবাই মিলে এগিয়ে আসি আমাদের প্রিয় ত্বকিকে বাঁচিয়ে তুলতে। একজন হবু ডাক্তারকে বাঁচাতে কি আপনার হাতটি প্রশস্থ হবে না? একজন ভাল মানুষকে বাঁচাতে কি এগিয়ে আসবেন না?
দৃষ্টি আকর্ষণ করছি সমাজের বিত্তশালীদের, নেতা-মন্ত্রীদের/অভিভাবক/শিক্ষক সমাজ/চিকিৎসক/চিকিৎসা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের/এনজিও/ঔষধ কোম্পানি/ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি ত্বকিকে সাহায্যের জন্য।
সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ত্বকিকে ফিরিয়ে আনতে পারবে আগের জীবনে, মানুষ-দেশের কল্যানে নিবেদিত রেখে নিজের স্বপ্নগুলোকে এগিয়ে নিতে।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা:
জামিল আহমেদ ভুইঁয়া
সঞ্চয়ি হিসাব নং: ৩৪০০৩৪৩৬
অগ্রণী ব্যাঙ্ক লি:, ছোট বাজার শাখা, ময়মনসিংহ।
বিকাশ করুন:
০১৭১৮-৩৪৩৫৫৪
০১৭১৭-৬২৫৯৬৫
০১৭২৯৯৫৬৫৯৫
ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাঙ্কিং:
০১৭১৬-৩২৭৭৫৯৭
আরো জানতে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করুন:
০১৭১৫-৯১৫৪৭২, ০১৭৭১১-১৯২৬৪২
বি:দ্র: একই সাথে ত্বকির জন্য কাজ করছে ত্বকির মেডিক্যাল কলেজের বন্ধুরা।
১. ২৬ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৪১ ০
আল্লাহ যেন তাকে ভাল করেন আমিন