দ্যা হিপোক্রেসি - হাজী বাড়ির মেয়ের হ্যালুসিনেশন.
(১)
'সুযোগের সদ্ব্যবহার' করতে হলে নাকি বুদ্ধিমান হতে হয়। এইরকম কথা শুনলে নিজের অজান্তেই আমার হাসি চলে আসে। এটা ঠিক যে, বোকার দলেরাই কেবল বলতে পারে সুযোগের লিখিত- অলিখিত ব্যবহার জানতে হলে সংবিধান ও শাস্ত্র মানতে হবে। আর সেইসাথে আরেকটি বিশেষ গুন তীক্ষ্ণ ও সুক্ষ বুদ্ধিমান সম্পন্ন হতে হবে। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, বোকা সেজে ধোঁকা দেয়া যুতসই শিল্পকর্ম।সেই সাথে বোকাসোকা হয়ে সুযোগের মোক্ষম ব্যবহার করাটা ঈশ্বর প্রদত্ত এক অমোঘ উপহারও বটে। যাতে বিপত্তি ও বাঁধা সৃষ্টির আশংকা কম থাকে, আবার কখনো যদি ভুলক্রমে পথভুলা সময়ে অযাচিত কোন বিপর্যয় নেমে আসে তবে তা সহনীয় ও নিমন্ত্রিত পর্যায়ে থাকে। বোকামির এমন গোপন সুন্দরকে অনায়াসে সেইফ সাইড বা ড্রাইভিং পজিশনের সংজ্ঞায় ফেলা যায়। উদাহরণস্বরূপ এই আমি হাজী বাড়ির একমাত্র আদরের দুলালী আছিয়া সরকার। আমার মরহুম দাদাজান এতদ অঞ্চলের একসময়ের তুমুল প্রভাবশালী মৌলভী মোতালেব সরকার কে সবাই "বড়হাজী" হিসাবেই চিনতো। দাদাজান ভারতের ঐতিহাসিক দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে কুরআন ও হাদিসের উপর অগাধ জ্ঞান অর্জন করে দেশ- বিদেশে মাহফিলে ওয়াজ নসিহত করতেন। আজ দাদাজান ইহকালে নেই কিন্তু উনার লাখ লাখ মুরীদগন আছেন। উনাকে প্রতিনিয়ত স্মরণ করে চলছেন তার ভক্তকুল। দাদাজানের দুই ছেলের মধ্যে আমার বাবাজান বয়সে বড় সবাই তাকে 'ছোটহাজী'বলে ডাকে। আমার বাবাও দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে তালিম ও ইলিম নিয়ে প্রয়াত দাদাজানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলছেন। আমার একমাত্র ছোট চাচাজান ডঃ মোজাম্মেল সরকার মদিনা ইউনিভার্সিটি থেকে ইসলামী শরিয়া আইনের উপর পিএইচডি করেছেন। তিনি বর্তমানে বৃটেনের বিখ্যাত হেরিয়েট ওয়াট ( Harriet watt University) বিশ্ববিদ্যালয়ের দুবাই শাখায় একাডেমিক ডিন হিসাবে কর্মরত আছেন। চাচার বদৌলতে শত ঘাত প্রতিঘাত ও হাজী বাড়ির পুরাতন ঐতিহ্যের বৈপরীত্যে বাড়ির বাহিরে গিয়ে আধুনিক ইংলিশ ও বিজ্ঞান বিষয়ে আমার পড়ার সুযোগ হ'য়েছে। আর সেজন্য চাচাজানের প্রতি আলাদা সম্মান ও ভালোবাসা কাজ করে। চাচাজানকে বলতে শুনেছি ঘরের বাহিরে গিয়ে লেখাপড়া করলে আমার মনের ভেতরে ভয় ও জড়তা কেটে যাবে, নতুবা আমি নাকি হাঁদারাম হতেই থাকবো। সে যে কারণেই হোক পড়ালেখা ও জগতকে দেখার সামান্যতম সুযোগ পাওয়াতে আমি মহাখুশি।
আমরা একমাত্র বড় ভাই আরিফ সরকার আর আমি এই নিয়ে আমাদের যৌথ পরিবার। পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য নাকি সবার আদর সমাদরে বেড়ে ওঠাতে একটু বোকা হয়। আর আমিও বোকার দলের একজন নব্য গর্বিত সদস্য হিসাবে যুক্ত হলাম। কট্টর ইসলামি অনুশাসনের মধ্যে আমার বেড়ে ওঠা। কিন্তু এই বোকামির মধ্যে আমার ভাবনা ছিল, জীবন'তো একটাই তাই হাসি, ফূর্তি, রঙ, তামাশা কখনো ভন্ডুল হতে দেয়া যাবে না। যখনি হাফ সুযোগ এসেছে তাকে ফুল সুযোগ করে নিয়েছি বুদ্ধি দিয়ে নয় বরং আমার বোকামি দিয়ে৷ যেহেতু কনজারভেটিভ পরিবারে আমার জন্ম সেহেতু বেগানা পুরুষ বা পরপুরুষ আমাদের চৌহদ্দির আশেপাশে আসার সুযোগ পেতো না। তাহলে পুরুষের সঙ্গ তো দূরে থাক তাদের দেখার সুযোগও ছিল না। ছোটবেলায় আমি ও আমার ভাইকে আরবি তালিম দিতে হুজুর আমাদের পড়ার রুমে আসতেন। ভাইয়ের চোখ,বাড়ির সবার কড়া নিরাপত্তা সবকিছু ফাঁকি দিয়ে কতদিন যে হুজুরের কোলে চড়েছি। হুজুর আমাকে তার কোলে নিয়ে কতবার পড়নের কাপড়চোপড় ভিজিয়ে দিয়েছেন তা কাউকে বুঝতে দেইনি। হুজুরের সামনে লম্বা কালো বোরকা পড়ে যেতাম। হুজুরের কোলে ওঠার সময় বোরকা খুলে দিতাম আর কোল থেকে নেমে সোজা বোরকা পড়তাম সেজন্য অতি সহজেই কাপড়ের সব দাগগুলো ঢেকে দিতাম ৷ সেতো গেলো শিশুকালের কথা।
প্রাথমিকের গন্ডি শেষ করে আমাদের বাড়ির পাশের গার্লস স্কুলে পড়তে গেলাম তখন কোনরকম ছেলে ক্লাসমেট না থাকাতে সুযোগের কি হেরফের হতে দিবো ! একদিন আমার বান্ধবী মল্লিকা পাল ডেকে নিয়ে ফিসফিস করে বলে আমার সাথে "লেজ- বিয়া" গেইম খেলবে। কি অদ্ভুত সুন্দর খেলার নাম। বিয়ের সাথে লেজ, আর দেরী না করে মল্লিকাকে বলি চলো তো কি সেটা খেলে দেখি। মল্লিকা বলে চোখ বন্ধ করে ভাববে আমি মল্লিক একজন পুরুষ। মল্লিকা আলতো করে আমার নাভিমূলে ছোঁয়ে দেয় আমি চোখ বন্ধ করে এমন সুখময় স্পর্শের ভালোলাগায় অস্হির হয়ে যাই। সে ছিলো এক মজার ও লোমহর্ষক অভিজ্ঞতার শুরু । কতদিন কত আদর মাখা স্পর্শে মল্লিকা আমাকে শ্যামল সুখ দিয়েছে তা আসলেই বেহিসাবি ও মনভুলানো সুখময় স্বস্তির। আজও ভালোলাগার রেশটুকু বুকে নিয়ে বেড়াই আনমনে, পুষে রাখি এমনে আমোদ আহ্লাদে। বড় হওয়ার সাথে ভাগ্যাকাশে এলো কাল বৈশাখীর ঝড়,চুরমার হয়ে গেলো ছিলো যত প্রেম সঙ্গোপন।
কে এমন হুতাশনে-
বলেছিলো বড় হতে !
কি'ই বা হতো ক্ষতি এমন,
স্কুলের গন্ডিতে যদি থেকে যেতাম আজীবন
মল্লিকার অম্ল মধুর ছোঁয়াকে করে বরণ --
কাঠিন্যে মোড়া পথের হয়ে যেতো সহজিয়া সমাপন।
স্কুল জীবন শেষ করে ভর্তি হলাম স্হানীয় মহিলা কলেজে। হাজী বাড়ির মেয়ে হ'লেও আরবী থেকে ইংরেজি আমার কাছে সহজ মনে হতো। ছোটবেলায় যখন একটি শব্দের বিপরীতে কয়েকটি সমার্থক শব্দ ইংরেজি সাহিত্যে পেয়ে পুলকিত হয়েছিলাম। সেই থেকে ইংরেজির প্রতি অগাধ টান আর ভালোবাসা জন্ম নিলো। বিদেশি ভাষা সবার কাছে কঠিন মনে হলেও আমি স্কুল কলেজের সব পরীক্ষায় সর্বোচ্চ মার্ক পেতাম ইংরেজিতে। আমার বড় ভাই মাদ্রাসা থেকে আলিম শেষ করে বর্তমানে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়াতে উচ্চ শিক্ষা নিতে গেছে। যদিও চাচাজান আমার ভাইয়ের জন্য তিনি যে ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত আছেন সেখান থেকে দু'বার স্কলারশিপের জন্য কাগজপত্র পাঠান কিন্তু ভাইয়ের আবেদনগুলো কোন অজানা কারণে নাকচ হয়ে যায়। পরবর্তী আমার ভাই মালয়েশিয়ায় উচ্চ শিক্ষা চলে যায়।
এবার আমাকে একটা সুযোগ নিতেই হবে। নিজে থেকে আগ বাড়িয়ে কিছু বললে কেউ রাজী হবে না এটাই বড় সত্য। কারণ একটাই হাজী বাড়ির অতি প্রাচীন প্রথা ভেঙে বাড়ির বাহিরে গিয়ে পড়ালেখা যেখানে বারমুডা ট্রায়াংগেল পাড়ি দেয়া সেখানে আমার বিদেশে পড়তে যাওয়ার কথা বলাটাই সংগত কারণেই বালখিল্যতা ব'লেই ধরে নিতে হবে৷ তাহলে এমন পরিস্থিতিতে এ শিলাস্তরের বিচ্যুতি ঘটাতে হলে যথেষ্ট সাবধানী হতে হবে যদিও শিলাস্তরকে গুড়ি করার শিল্পকর্ম ইতিমধ্যে ভালোভাবে রপ্ত করে ফেলেছি। এবার ফাইনাল চালটা খেলতে হবে ......
( বাকি অংশ জানতে আগ্রহী??)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:১২