দেশের মুক্তিযোদ্ধারা না খেয়ে মরে আর বিদেশী মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মান বাড়ে !
প্রথম আলো নিউজ করেছে- " বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া ভারতীয় নাগরিকদের সম্মাননা জানাবে সরকার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারগুলোকে নগদ অর্থও দেওয়া হবে। এ অর্থ দেওয়া হবে মোট ১৭০০ পরিবারকে । মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ জন্য ১১৭ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়ে ১৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
## টঙ্গির মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন ভুঁইয়া, ঝাল মুরি বিক্রি করে দুবেলা দু মুঠো ভাত জুটান ক্ষুদার জ্বালা মিটাবার জন্যে। দারিদ্রের টানাপড়েনে এখনো পর্যন্ত বিয়েও করেন নি এই মহান মুক্তিযোদ্ধা ।
## কুড়িগ্রামের রাজারহাটে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোবারক আলী ৬১ বছর বয়সেও রিক্সাচালক । রিক্সাই তার শেষ সম্বল। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও আজও তাকে তিন চাকার উপর ভর করে সংসারের ঘানি টানতে হচ্ছে। খাবার জুটাতে হচ্ছে ২ ছেলে ও তিন মেয়ের জন্যে ।
## ১৯৭১-এর রণাঙ্গনে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন সূর্য সন্তান নবী হোসেন। বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই বীর মুক্তিযোদ্ধার দিন আজও কাটে সকাল থেকে রাত্র পর্যন্ত রিক্সার পেডেল ঘুরিয়ে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই ব্যক্তির ক্লান্তিহীন দিন কাটে ১১ সন্তানের আহার যোগাতে।
## মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল হোসেন(৬৫) আজ জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে রাস্তায় মুড়ি বিক্রি করে পরিবার পরিজন নিয়ে কোন রকম বেচে আছে। তিন ছেলে এক মেয়ে স্ত্রীসহ ছয় জনের পরিবার চলে মনতলা রেলওয়ে ষ্টেশনের প্লেটফর্মে রোধ বৃষ্টিতে ভিজে ঝালমুড়ি বিক্রি করে অর্জিত আয় থেকে।
## শেরপুর শহরের নবীনগর এলাকার মুক্তিযুদ্ধের শহীদ তালেব আলীর ছেলে ইদ্রিস মিয়া (৫২) রিক্সাচালক । নবীনগর এলাকার আরেক শহীদ আকবর খাঁর ছেলে জলিল খাঁ (৪৩) রিক্সাচালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেছে।
## সন্তানকে জঙ্গি বানিয়ে দেবার ভয় দেখিয়ে ঘুষের ৫০ হাজার টাকা না দেওয়ায় জামালপুর রেল পুলিশের ওসি “গৌর চন্দ্র মজুমদারের” নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা “আবদুল বারীকে” নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এখানে শুধুমাত্র কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার ও তাদের সন্তানদের জীবন কাহিনী তুলে ধরলাম । বাংলাদেশে এখনও কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার রয়েছেন যারা দু বেলা দু মুঠো ভাত ঠিকভাবে খেতে পারছেন না । অনেককে আবার মুক্তিযোদ্ধার লিস্টেও লিপিবদ্ধ করা হয়নি ।
এ দেশের মানুষ না খেয়ে মরে, ক্ষুদার জালায় কংকাল হয়ে দুনিয়া ত্যাগ করে, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ক্ষুদার জালায় ভিক্ষা করে অথচ রাষ্ট্রের ১১৭ কোটি টাকা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভিন দেশীদের ত্যাগ স্বীকারে । ইতিহাস সাক্ষী দেয় ভারত যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশে সীমাহীন লুটপাট চালায় এমনকি আজ ও এই দেশোকে দখলের পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে । রাষ্ট্রের এমন নীতিকে ঘৃণা করি যে নীতিতে দেশের মুক্তিযোদ্ধারা না খেয়ে মরে আর ভিনদেশী মুক্তিযোদ্ধারা লাখপতির কাতারে ঠাই নেয় ।
যতদিন না দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সন্মান না দেওয়া হবে ততদিনে দেশ সিঙ্গাপুর তো দুরের কথা আজিমপুরের গোরস্থানেই পতিত হবে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৫