somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আম জনতা থেকে সরকার বাহাদুর স্টকহোম সিন্ড্রোম থেকে মুক্তি পাক সবাই।

২৬ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্টকহোম সিন্ড্রোম নামে একটি মানসিক রোগ আছে। এই রোগটি নির্যাতিত বা জিম্মিদের মধ্যে দেখা যায় এমন একটি মানসিক অবস্থা। যার দরুন নির্যাতিতরা অত্যাচারকারীদের প্রতি আনুগত্য ও আবেগপ্রবণ টান অনুভব করে। ১৯৭৩ সালে সুইডেনের স্টকহোমে সংঘটিত এক ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার সময় ৬ দিন ধরে জিম্মি হয়ে থাকা ব্যক্তিরা তাঁদের আটককারী ডাকাতদের প্রতি দূর্বলতা ও আনুগত্য প্রকাশ করে। সেই থেকে এই রোগটি প্রচলিত। এখন একটি প্রশ্নে আসা যাক, আমাদের দেশের ম্যাক্সিমাম মানুষগুলো কি স্টকহোম সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ? আসুন হালকা করে উত্তর খোঁজা যাক,

একাত্তরে আমাদের ওপর যে বর্বর নৃশংসতা পাকিস্তানীরা চালিয়েছে তা পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞের একটি। তারা এই গণহত্যা আর ধর্ষণ চালিয়েছিল তাদের এদেশীয় দোসরদের নিয়ে। এখন যখন ওইসব রাজাকার-আলবদর নরপশুদের বিচার শুরু হল তখন এদেশেরই কিছু মানুষের মধ্যে দেখা গেল স্টকহোম সিন্ড্রোম। এরা যে আমাদের ওপর নির্যাতন করেছে এটা জানা সত্ত্বেও আমাদের অনেকে তাদের প্রতি একটি মধুর টান অনুভব করছেন। এবং এই অনুভবকারী-কারীণীদের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। এমনকি এরা একজন চিহ্নিত আলবদর কমান্ডারকে বাঁচানোর জন্য অনলাইন থেকে দূতাবাস দাপিয়ে বেরিয়েছে। শেষ রক্ষা যখন হলনা তখন বেটাকে পাকিস্তানের নিশান-ই-বালামার খেতাব দেয়াতেও তারা বেজায় খুশি। প্রথম আলো এক জরিপ করে রীতিমত ভড়কে গিয়েছিল, আর তা হল জরিপে অংশ নেয়া ম্যাক্সিমাম মানুষই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না এমনকি মুসলমান দেশ হওয়ায় পাকিস্তানের সাথে সুসংহত সম্পর্ক চায়। এমনকি এটি জানার পরও যে পাকিস্তানের বিভিন্ন কূটনীতিক এদেশে জঙ্গীবাদ প্রসারে অর্থায়ন করে থাকে। ফলাফল এমন হওয়ায় জরিপটি পরে আর প্রকাশ করেনি প্রথম আলো। আশা করি স্টকহোম সিন্ড্রোমটি মালুম করতে পেরেছেন। এখানে একটি প্রশ্ন রাখি, আমরা এই এতগুলো বিকারগ্রস্তের মানসিক চিকিৎসা কোথায় করাব ?
স্টকহোম সিন্ড্রোমের আরেকটি উদাহরণ দেই।



এটা তো অস্বীকার করার কোন জো নেই যে ভারত আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে আগ্রাসন চালাচ্ছে। সংস্কৃতি থেকে অর্থনীতি প্রায় সবই তাদের কাছে জিম্মি। এবং তারা সীমান্তে আমাদের মানুষদের গুলি করে মারছে। ফারাক্কা বাঁধ আর টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ করে এদেশটাকে মরুভূমির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। তবুও ভারতের প্রতি এদেশীয় লাট-বাহাদুরদের স্টকহোম সিন্ড্রোমটা স্পষ্ট। একটা উদাহরণ দেই,

কলকাতা থেকে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় পণ্য নিতে দুই দেশের নৌ প্রটোকলের আওতায় ট্রানজিটের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ট্রানজিটের প্রথম চালান হিসেবে আগরতলায় যাবে এক হাজার টন ঢেউটিন। এ জন্য প্রতি টনে ১৯২ টাকা করে মাশুল দিতে হবে। আর মজার ব্যাপার হল ট্যারিফ কমিশনের নেতৃত্বে গঠিত ট্রানজিট-সংক্রান্ত কোর কমিটির টনপ্রতি ১ হাজার ৫৮ টাকা মাশুল আদায়ের সুপারিশ করেছিল। সুপারিশ মেনে নিলে বাংলাদেশ এক হাজার টন পণ্য ট্রানজিটে কেবল মাশুল হিসেবেই পেত ১০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। আর এখন পাবে মাত্র ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
এখানেই আমার প্রশ্ন, আমাদের ওপর দিয়ে বাঁশডলা দিচ্ছে ভারত। তাদের আগ্রাসনের সামনে আমরা রীতিমত জিম্মি তবু্ও তাদের প্রতি এই মধুর টানটা কিসের ? আবার যে টানে ক্ষতি হবে ৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা। গ্যাসের অভাবে অনেক কারখানা চালু হচ্ছেনা কিন্তু গ্যাস রপ্তানি হচ্ছে ভারতে। ডেটার খরচ আমাদের দেশে অপরিবর্তিত থাকলেও ভারত কম দামে ঠিকই ব্যান্ডউইথ পাচ্ছে। এখানেও আরেকটা প্রশ্ন, এসব দাপ্তরিক দালালদের স্টকহোম সিন্ড্রোমের চিকিৎসা কোথায় হবে ? তবে যেখানেই এদের চিকিৎসা হোক না কেন আমার প্রত্যাশা একটাই থাকবে যে আম জনতা থেকে সরকার বাহাদুর সবাই যেন এই স্টকহোম সিন্ড্রোম থেকে মুক্তি পান।



(সবার উদ্দেশ্যে বলি, আমি পাকিস্তানী শুয়োরদের সাথে ভারতীয়দের তুলনা করছিনা। কারণ পাকিস্তানের বর্বরতা বিচারের কোন মাপকাঠি নেই। আমি কেবল আমাদের বিপরীতে আগ্রাসন চালাচ্ছে এমন দুটি দেশের প্রতি সাধারণ জনগণ আর সরকারের মনোভাব তুলে ধরেছি)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৬ দুপুর ২:০২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×