নিজের মাটির কাছে ঋণ অনেক - তাই স্বপ্ন পুরনের জন্যে নিজের গ্রামকেই বেছে নেয়া । অর্থনৈতিক বিবেচনায় , স্থান নির্বাচন সঠিক হয়নি। কিন্তু দেশের প্রতি ভালোবাসা , মমতা , দায়িত্ব হুদা সাহেবকে টেনে এনেছে এই চন্দ্র মহলের মাটিতে।
চন্দ্র-মহল - ইকো পার্ক। অনেক সুন্দর একটি জায়গা। চতুর্দিকে ঘন নারিকেল গাছ বেষ্টিত শান্তিময় এক পরিবেশ। যেখানে আপনি দেখতে পাবেন , তাজমহলের একটি মডেল এবং অন্যান্য অনেক কিছু।
প্রধান প্রবেশ পথ দিয়ে প্রবেশ করুন। প্রথমেই দেখবেন মুক্তিযুদ্ধকে। মাটিতে পুতে রাখা বাঙালীর লাশ
এবং আমাদের গর্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা
ডানদিকে দেখুন বাংলাকে যারা এগিয়ে নিয়ে এসেছেন এতদুর , সেই সব কবি- সাহিত্যিক গনের কিছু লেখা সহ তাঁদের নাম। এসব আছে এই চত্বরটিতে , যেখানে আছে ট্রেন , বাড়ী ঘড় , সিমান্ত চৌকি সহ অনেক অনেক কিছুর মডেল।
এগিয়ে যান সামনের দিকে
বায়ে দেখবেন বাগেরহাটের ঐতিহ্য কুমিরের মডেল
আর একটু সামনে গেলেই বাম পাশে দেখুন চারদিকে পানির লেক , যেন যমুনার মাঝে আছে তাজমহল। পানির নীচ দিয়ে যেতে হবে আপনাকে তাজমহলের অভ্যন্তরে। প্রথম ছবিটায় আছে - পানির নিচ দিয়ে যাবার গুহা।
ডানে দেখবেন সুন্দর বাঁধানো ঘাটলা সহ এক পুকুর। যেখানে আছে শামুক , ঝিনুক , কাকড়া , ময়ূরপঙ্খি নাও ।
সব কিছু সহ এক ব্লগারকে দেখুন
আপনারা যাতে একাকী কথা বলতে পারেন , তার জন্য নির্মান কাজ চলছে। ভাবুন , চারদিকে পানি , আপনারা একাকী কথা বলছেন - ভাবনা চলুক যার যার সীমা পর্যন্ত ।
নির্মাণ চলছে দারুচিনি দ্বীপের , যদিও এর পিছনে যাদের শরীরের ঘাম , তারা হয়ত নির্মাণের পরে আর ওখানে যেতে পারবেন না ।
ইকো পার্কটিতে আছে প্রশস্ত মাটির রাস্তার দুপাশে ঘন নারিকেল গাছের সারি । হেটে যেতে ভালোই লাগবে আপনার।
গ্রাম বাংলার রূপ দেখার আগে রাজাকারদের ফাঁসি দিতে ভুলবেন না যেন
দেখি আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে
পালকি চড়ে যাচ্ছে বধূ
ছুটাছুটি
কুড়াল দিয়ে কাঠ কাটা
ঢেকিতে পার দিচ্ছে বাড়ীর বধূ
মুড়ি বানানো হচ্ছে - বাবুটা কত্ত খুশী
দাদুজান বুনছে মাছ ধরা জাল
জাতা ঘুরাচ্ছেন বাড়ীর বধূ
একটি মিনি চিড়িয়াখানাও কিন্তু আছে ওখানে।
আর্ট গ্যালারী নির্মাণের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। নির্মাণের পরে এখানে দেখতে পাবেন - এস,এম সুলতান , কামরুল হাসান সহ বিখ্যাত চিত্র শিল্পীদের চিত্রকর্ম। আমি এসব অমূল্য চিত্রকর্মের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হলে , হুদা সাহেব অভয় দিয়ে বললেন " এর ডুপ্লিকেট রাখা হবে "। হাফ ছেড়ে যেন বাঁচলাম আমি। কয়েক কোটি টাকা মূল্যের চিত্র কর্ম এখানে থাকলে তো চোরের সৌভাগ্য ছিল । আপাতত চোরেরা মনখারাপ করুক
ওখানে পিকনিক করতে পারেন। প্রতিজন প্রবেশ মুল্য ২০ টাকা। গ্রুপ গেলে কিছু ছাড় আছে । আমার ১৮০ জনে ৩০ টি টিকেট ছাড় ছিল।
যেভাবে যাবেন :
বাগেরহাট থেকে মংলা বন্দর যাবার পথে রনজিতপুর ।
খুলনা থেকে আসলে - বাগেরহাট আসার প্রয়োজন হবে না।
ঢাকা থেকে - গোপালগন্জ হয়ে মংলা বন্দর সড়ক
যোগাযোগ : মো: মুরাদ , ম্যানেজার।
মোবাইল : ০১৯২০-৭৬০৬২৯ , ০১৭৪৫-৭৮৮০০৯
চন্দ্রমহল ইকোপার্ক , রনজিতপুর , বাগেরহাট ।
একটি সতর্কতা : প্রধান সড়কে গাড়ী থেকে নেমে কিছুটা হেটে যেতে হবে। খুব বেশী দুরত্ত নয়। রিক্সা ভ্যান , ইঞ্জিন চালিত ভ্যান আছে । যেহেতু আপনি প্রথম যাচ্ছেন - জানেন না , তাই আপনার কাছে ভাড়া চাইবে ১৫ টাকা প্রতিজন । ইকোপার্কে পৌঁছে আপনার মন খারাপ হবে - এটুকু পথ এত ভাড়া ? ফিরবার সময়ে ভ্যান চালকরা আপনার কাছে ৫ টাকা নিবে , কারন আপনি তখন দুরত্ত জেনে গিয়েছেন
আমি দ্বিতীয় বার গিয়ে আর মদন হতে চাইনি
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ৯:১৩