সকাল থেকে আকাশ অন্ধকার করা মেঘ নিয়ে আমাদের দ্বিতীয় দিনের শুরু। আমাদের নৌকা তখন ফারুয়া বাজারের ঘাটে। আমরা কয়েকজন নামলাম সকালের বাজারটা একটু ঘুরে দেখতে। ঐদিন ছিলো ফারুয়া বাজারের হাট। সকাল থেকেই তাই বেশ মানুষের আনাগোনা। নদীতে মাছ ধরাও চলছিলো তখন।
এক.
দুই.
তিন.
চার.
পাঁচ.
কিন্তু এসব দেখতে দেখতেই শুরু হয়ে গেল ঝুম বৃষ্টি। ক্যামেরাটা বাঁচানোর জন্যই দ্রুত ঢুকে পড়লাম একটা দোকানে। কিন্তু এভাবে কতক্ষন? বৃষ্টি কমার কোন লক্ষনই দেখা গেল না। শেষে রেইনকোটে ক্যামেরার ব্যাগটা জড়িয়ে বৃষ্টিভিজে কোন ভাবে ফিরলাম নৌকায়। কিন্তু আমাদের মাঝি তার নৌকা নিয়ে আর সামনের দিকে এগুতে রাজি না। মাঝির মতে এখন সামনের দিকে পানি কম, নৌকার প্রপেলর নদীর নীচে লেগে ভেঙে যেতে পারে। সুতরাং আমরা ছোট নৌকার খোঁজ শুরু করলাম। কিন্তু এই বৃষ্টিতে কিছুই পাওয়া যাচ্ছিলো না। তাই অপেক্ষা করে থাকতে হলো বৃষ্টি থামার। সকালের নাস্তাটা সেরে নিলাম এর ফাকে ফারুয়া বাজারে। দুপুরের দিকে বৃষ্টি খানিকটা কমে এলে আমরা একটা ছোট নৌকা রাজি করাতে পারলাম। যখন ছোট নৌকার জন্য খোজাখুজি চলছে তার মধ্যেই আমরা ঘুরে এলাম ফারুয়া বাজারের ওপারের বৌদ্ধ মন্দির থেকে। বাজারটাও ঘুরলাম আরও খানিকটা।
ছয়.
সাত.
আট.
নয়.
দশ.
এগারো.
বারো.
তেরো.
চৌদ্দ.
পনেরো.
এবার যেহেতু নোকাও ছোট তাই নিজেদের একেবারে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ছাড়া বাকি সব জিনিসপত্র রেখে দিলাম বড় নৌকায়। কিন্তু সে ছোট নোকায় উঠে বুঝলাম এ নৌকায় আমাদের সবার জায়গা হবে না। সুতরাং আবার আরেকটা নৌকা খোঁজা চলল। এবং অবশেষে মাঝদুপুরে আমরা দুইটা ছোট নৌকাতে করে কিছু খাবার নিয়ে আরও সামনে এগিয়ে চললাম।
ষোল.
সতেরো.
আঠারো.
উনিশ.
বিশ.
একুশ.
বিকেলে আমরা পৌছালাম চ্যাংড়াছড়িতে। ওখানেই আমাদের রাত কাটানোর কথা। এদিকে গতকাল থেকে আমাদের কারোই ভালোভাবে গোসল হয়নি, পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি ভীষণ ঘোলা। তবে আমরা কয়েকজন বৃষ্টিতে খানিকটা গোসল সেরে নিয়েছি। শুনলাম আরেকটু এগুলে সামনেই পানছড়িতে ঝরনা আছে একটা। আমরা চ্যাংড়াছড়ি ছেড়ে তাই আরও সামনে এগুলাম পানছড়ির দিকে। পানছড়ির ঝরনাটা পেলাম তবে তা আহামরি কিছু না, পাহাড় বেয়ে কলের পানির মত পানি পড়ছে। আমরা সবাই ঐ ঝরনাতেই আরাম করে গোসল করে নিলাম।
বাইশ.
তেইশ.
চব্বিশ.
পঁচিশ.
ছাব্বিশ.
সাতাশ.
আঠাশ.
উনত্রিশ.
ত্রিশ.
একত্রিশ.
ওখান থেকে সন্ধ্যায় ফিরে এলাম আবার চ্যাংড়াছড়ি। আমাদের থাকার জন্য ওরা নদীটার পাড় ঘেষা দারুন একটা ঘর দিলো। এই ঘরের মালিক চাষের জন্য অন্য পাহাড়ে গেছে, ঘর খোলাই রেখে গেছে। আমরা নিজেরা রান্না করে খাওয়া দাওয়া সেরে আবার বের হলাম রাতে খানিকটা ঘুরতে।
আমাদের কারও সময়ের আসলে কোন হিসাব ছিলো না। আড্ডা দিয়ে তাই কখন যে আবার ফিরে এসে ঘুমিয়েছি, সময় বলতে পারবো না।
_____________________________________________
ছবিব্লগ: রাইখ্যং-এর উজান বেয়ে পানছড়ি: শেষ পর্ব (ঝর্ণার খোঁজ আর ফিরে আসা): Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১০ বিকাল ৪:২৩