২৭ বছর আগে একটি ছোট গল্প লিখে পেয়েছিলান নগদ ১০ টাকা (উল্লেখ্য যে, আমার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে)। এরপর এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকাশিত 'বাংলাপিডিয়া' নামক জাতীয় কোষগ্রন্থটির ভুক্তিগুলো লিখে জীবনে প্রথম চেকের মাধ্যমে অনেক টাকা সম্মানী পেয়েছিলাম।
তখন ছাত্র জীবনে ঢাকার কমলাপুরের সরদার কলোনিতে আমার মেস ভাড়া (ছিট) ছিলো ৪০০ টাকা আর খাওয়া বাবদ খরচা হতো ৭০০/৯০০ টাকা। সে হিসেবে এ বই লিখে সম্মানীর টাকায় আমার অনেক মাস চলার কথা, চলেছিও তাই। দুঃখের বিষয় হলো, সেসময় আমার কোনো ব্যাংক একাউন্ট ছিলো না। বাবার তার অফিসিয়াল একাউন্টে চেক জমা দিয়ে সেই টাকাগুলো তুলে আমার হাতে দিলেন। আমার চোখে তখন খুশির ঝিলিক। আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলাম। ভেছিলাম, লেখালেখি করেও তাহলে অনেক টাকা পাওয়া যায়?! তারপরে দূরন্তগতিতে আমার সাহিত্য চর্চা শুরু হলো। ১৯৯৫ সালে আমার সম্পাদনায় প্রথম আমার সাহিত্য পত্রিকা 'মুক্তি' প্রকাশিত হলো। এর পরে, বাংলাকাগজ, মানবজীবন, মুক্তি, জাগরণ, মানচিত্র, সময়, ভুমিপত্র, কালেরবৃক্ষ, মনোভূমি, সাহিত্য দিগন্ত ইত্যাদি সাহিত্য পত্রিকাগুলো প্রকাশ করলাম। একে একে প্রকাশিত হলো আমার লেখা ১৪ টি গ্রন্থ। সেই থেকেই আমার কপাল পুড়লো! পোড়া কপাল নিয়ে আজ জীবনের মাঝামাঝিতে এসে দেখি আমি লেখক হতেও পারলাম না আবার টাকাওয়ালাও হতে পারলাম না। জীবনে কিছুই হতে না পারায় অবশ্য আমার তেমন কোনো দুঃখ বা আক্ষেপ অথবা ক্ষোভও নেই। তবে, এসব কিছু না পেলেও ব্যর্থ এই জীবনে অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি! মানুষের এই ভালোবাসাই আমাকে কিছুই না হওয়ার দুঃখ থেকে বাঁচিয়ে রাখে।
জায়েদ হোসাইন লাকী
সম্পাদক, ত্রৈমাসিক সাহিত্য দিগন্ত
প্রধান সম্পাদক, সাপ্তাহিক অপরাধ সূত্র
উপদেষ্টা সম্পাদক, দৈনিক বাঙালির কণ্ঠ
(এটা কোনো বিজ্ঞাপন নয়, আত্মকথন মাত্র)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:২৯