ছাত্রছাত্রীদের সামনে দাঁড়িয়ে দুইটা কথা বলার যোগ্যতাও নেই এই লোকের
বুয়েট লাইফে ভিসি পেয়েছিলাম মোট দুইজনকে। ২০০৮-এ ক্লাস শুরুর সময় ভিসি শফিউল্লাহ স্যার। ২০০৮-এ তত্ত্বাবধয়ক সরকার ছিল। ২০০৯-এ আওয়ামীলীগ সরকার শুরু হলেও সম্ভবত মেয়াদ শেষ হয়ে এসেছিল কিংবা তার মেরুদন্ডে জোর ছিল, যেকারণেই হোক ছাত্রলীগকে সেভাবে তোয়াজ করে চলেন নাই।
২০১০ এ ভিসি হিসেবে আসেন নজরুল ইসলাম স্যার। এই লোকের পলিটিক্যাল কানেকশান অনেক স্ট্রং ছিল, তবুও এই লোক ছাত্রলীগ তোয়াজ করে চলত।শক্তশালী রাজনৈতিক লিংক সম্ভবত মেরুদন্ডে জোর আনতে পারে না।
২০১১ সালের শেষদিকে, সম্ভবত ৩১শে ডিসেম্বর ছাত্রলীগের শুকর ছানারা ইশান ভাইকে পেটায়।প্রতিবাদে ছাত্ররা প্রোভিসিকে (এতদিন আমার ধরণা ছিল দলীয় লেজুড়বৃত্তির ক্ষেত্রে এই লোকটা বুয়েটে সবচেয়ে নিকৃষ্ট উদাহরণ) ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ করে। যদ্দূর মনে পড়ে নজরুল ইসলাম স্যার তখন কক্সবাজারে ছিলেন। পরদিন ঢাকা ফিরে এসেই তিনি ক্যাম্পাসে আসেন।
হলে আমার ঠিক উপর তলাতেই থাকতেন ছাত্রফ্রন্টের গৌতমদা আর মামুন ভাই। একদিন ক্লাস থেকে ফেরার সময় দেখি (সালটা মনে পড়ছে না) হলের বাগানে তাদের পোড়ানো তোষক পড়ে আছে, তাদের দুজনকে রুম থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসবই ছিল ছাত্রলীগের শুকর ছানাদের কীর্তি। কয়েকদিন পর আহসান উল্লাহ হলের ক্যান্টিনে এই শুকর গুলাই গৌতমদাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।যদ্দূর মনে পড়ে গৌতমদাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন নজরুল স্যার।
এমনকি ২০১২ সালে ভিসি বিরোধী আন্দোলন চলাকালেও শুনেছিলাম নজরুল স্যার তার পরিবারকে বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে একা ভিসি'র বাংলোয় থাকতেন।
নজরুল স্যার কোন ভাল শিক্ষক কিংবা প্রশাসক ছিলেন না। ভাল মানুষ ছিলেন কিনা সেটা নিয়েও আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।ভাল মানুষ হয়ে থাকলে ছাত্রলীগের অপকর্মগুলাকে প্রশ্রয় দিতেন না কখনোই। আজকে অনুভব করলাম একটা গুণ তার ছিল। যখনই ক্যাম্পাসে কিংবা হলে কোন ঘটনা কিংবা দূর্ঘটনা ঘটেছে, এই লোক অন্তত পালিয়ে বেড়ান নাই। ছাত্রছাত্রীদের মুখোমুখি হয়েছেন।
আজকে এক নতুন মাল দেখলাম। বর্তমান ভিসি সাইফুল ইসলাম আবরারের জানাজায় যান নাই, আবরারের পিতার সাথে দেখা করেন নাই, হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার অফিস থেকে কোন অফিশিয়াল বিবৃতি আসে নাই। জানাজায় না আসার সাফাই গাইতে গিয়ে সেতু মন্ত্রীকে দিয়ে বলিয়েছেন তিনি অসুস্থ, অথচ সন্ধ্যায় লাইভ টিভিতে তার মধ্যে অসুস্থতার কোন লক্ষন দেখলাম না। আবার তার ব্যক্তিগত সহকারীও স্বীকার করল ভিসি অসুস্থ ছিলেন না।
খালেদা ইকরাম ম্যাডামের পর ভিসির চেয়ারে বসে গত তিন বছরে এই লোক বুয়েটের কোন দৃশ্যমান উন্নয়নতো করতে পারেই নাই, উলটা আজকে তার যে পলায়নপর মানসিকতা আর মিথ্যাচার দেখলাম, তাতে ভয়টা বরং আরো বেড়ে গেল। এই মেরুদন্ডহীন অযোগ্য লোকটা চেয়ারে থাকলে বুয়েটের পরিস্থিতি দিনকে দিন আরো খারাপ হবে, আল্লাহ না করুক, হয়ত ছাত্রলীগের শুকর ছানাদের হাতে হয়ত আরো আবরার একই পরিণতি বরণ করবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:৫০