প্রতিটা ছেলের জীবনে সম্ভবত ভাল লাগাটা("ভাল লাগা" বলছি, "ভালবাসা" বা "প্রেমে পড়া" নয়) শুরু হয় কোন সিনিয়র আপুকে দেখে। সেই সিনিয়র আপু হতে পারে এলাকার কোন আপু, স্কুলের কোন আপু কিংবা বড় ভাই বা বোনের বান্ধবী। ছেলেবেলায় সেই আপুর কোলে উঠে "বড় হলে আমি তোমাকে বিয়ে করব"- এই ডায়লগ দেয় নাই, এমন ছেলে মনে হয় না খুজে পাওয়া যাবে।
সেই বয়সে এসব "বিয়ে করব" বলাটা বলা হয় আসলে না বুঝেই। কিন্তু কিছুদিন পর একটু বড় হলেই শুরু হয় সিনিয়র আপুদের ওপর ক্রাশ খাওয়া।আপু হয়ত সামনে দিয়ে হাওয়ায় আচল উড়িয়ে চলে যায়, ছেলেটা মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকে।কিছু বলার জন্য মনটা আকুপাকু করে, কিন্তু বলার সাহস হয়ে ওঠে না। কখনো অন্য কোন বড় ভাইয়ের ভয়, কখনো আপু আমাকে কি ভাববে সেই ভয়।
চলতে গিয়ে আপু হয়ত পিছে ফিরে তাকায়, কখনো হাত নেড়ে মিষ্টি করে বলে,"আচ্ছা,আসি"। ছেলেটার মনে তখন প্রেমের জোয়াড়, আপুর উদ্দেশ্যে হাত নাড়ার জন্য হাতটা উঠতে গিয়েও ওঠে না।কেননা ততক্ষনে ছেলেত বুঝে যায়, এই হাত তার জন্য নয়, বিদায় জানাচ্ছে তারই পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা কোন বড় ভাইকে। সাথে সাথে তার "বুক ভরা আশা" একেবারে "দপ করে নিভে যায়"... ...
এতকিছু বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে একটু আগে শেভ করেছিলাম এক কাজিনের বিয়েতে যাব বলে। হঠাত ০৯ ব্যাচের এক জুনিয়র এসে শেভ করা শুরু করল।
মজা করার জন্যই বললাম, কি মিয়া, এই সন্ধ্যাবেলা শেভ কর ক্যান? বিয়াতে যাবা?
- জ্বি ভাই।
-কার? ডিপার্টম্যান্টের লেকচারার না সিনিয়র ভাই?
- কেউই না। আমাদের ব্যাচের এক ফ্রেন্ড ০৮ এর এক আপুকে বিয়ে করে ফেলছে। আজকে অনুষ্ঠান।
শোনার পর আমার সময় থমকে দাড়িয়েছিল কিছুক্ষনের জন্য।ক্লাস টেনে থাকতে দুই ব্যাচ সিনিয়র এক আপুর উপর সেরকম ক্রাশ খেয়েছিলাম, একটু একটু পরপর খালি তার চেহারাটাই চোখের সামনে ভেসে উঠছিল।
শালার আফসোস।বুয়েটে এখন যেদিকেই চোখ যায় সব খালি জুনিয়র।ইশ, ০৩ থেকে ০৬-অন্তত এক ব্যাচের একজন এই দুঃসাহসটা করে দেখাই দিত, আজকে শালার জীবনটাই অন্যরকম হইত... ...
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭