সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ গল্পটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লিখিত। গল্পে অশ্লীল সংলাপ ও শব্দের ব্যবহার রয়েছে।অতি মাত্রায় সুশিলেরা লগ অফ করে পোস্টে প্রবেশ করুন।
এক
তীব্র ব্যথা নিয়ে জেগে উঠলাম।
মাথায় সবার আগে যে প্রশ্নটা এল, কোথায় আমি?
চারপাশটা দেখার জন্য চোখ খুললাম।
কিন্তু এ কি?
চারপাশ অন্ধকার কেন? আমি কি তবে অন্ধ হয়ে গেছি?
নাহ, বিপদে আতংকিত হলে চলবে না।মানুষ অনেক সময় স্ট্রেস কিংবা শকের কারনে সাময়িক অন্ধ হয়ে যায়।আমারও তাই হয়েছে, মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম।
কোথায় আছি?
চোখে দেখতে পাচ্ছি না, কিন্তু হাততো আছে।চারপাশে হাত বুলিয়ে নিলাম।মনে হল কোন মেঝেতে শুয়ে আছি।
ছেলেমেয়েদের হৈ হুল্লোড়ের শব্দ কানে আসছে। পার্টি বলেই মনে হচ্ছে। সেই পার্টিতে আমি অন্ধ হয়ে শুয়ে আছি কেন?
কিছুই বুঝতে পারছি না।
উঠে বসার চেষ্টা করলাম কয়েকবার, কিন্তু পারলাম না। উঠতে গেলেই শরীরের পেছনের অংশে মারাত্মক ব্যথা করছে।
কোমরটা কি ভেংগেই গেল নাকি?
হায়, হায়, তাহলে আমি হাঁটব কি করে?
নাহ, আমাকে উঠতেই হবে।
শরীরের সবটুকু শক্তি প্রয়োগ করে উঠে বসার চেষ্টা করলাম।
তখনই কে যেন এসে আমার পিঠে হাত বুলিয়ে দিল।ফিসফিসিয়ে কানের কাছে জার্মান ভাষায় বলল, ওহ, বেবি, এত স্ট্রেস নিও না।দিস ইজ ইয়োর ফার্স্ট টাইম।কোমরটাকে একটু বিশ্রাম দাও। দেখবে, ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি ঘাড় ঘুরিয়ে পিছন ফিরে তাকালাম।তখনই আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরে এল।একটা সাত ফুট লম্বা দানব আমার দিকে দাত কেলিয়ে হাসছে। নিগ্রো দানবটার পৈশাচিক হাসি দেখে ভয়ের একটা শীতল স্রোত বয়ে গেল মেরুদন্ড দিয়ে।
দুই
ঘুম ভাংগল পাশের বাসার বুড়িটার চিৎকারে।ওফ, বিরক্তিকর বুড়ি। কম করে হলেও পঞ্চাশ বছর বয়স হয়েছে, এখনো বিয়ে শাদি করার নাম নেই। প্রতিরাতে নতুন নতুন ছোকরা নিয়ে আসবে বাসায় আর সকালবেলা চিৎকার চেচামেচি করে তাদের বের করে দেবে।এই তার প্রতিদিনকার রুটিন।
ফোনটা বেজে উঠল।
বিরক্তিকর।এই সাতসকালে আবার কে ফোন করল?
মোবাইলটা হাতে নিলাম।বিপ্লব।
এত সাতসকালে কি? তোদের জন্য ঘুমানো যাবে না নাকি?
*উয়া, তুমি সাত সকাল মারাও আমার সাথে? কয়টা বাজে খেয়াল আছে?
যয়টা বাজবে বাজুক, তাতে আমার কি?
মারা খা হারামজাদা।বড় ভাই যে কালকে পোস্ট দিতে বলছিল দিছস?
দেই নাই মানে? কালকে রাতেই দিছি।আমার প্রোফাইল চেক করে আয়। আমার এই পোস্টে যত লাইক আর শেয়ার পড়ছে, তোর সব পোস্ট আর ছবি মিলেও অত লাইক শেয়ার পায় নাই।
বালামার। ডায়লগবাজি না করে ফেসবুকে ঢোক।তোর ওইসব ঢং সহ্য করার সময় আমার নাই।
সহ্য করতে বলছে কে? ফোন রাখ, শালা।ফোনটা কেটে দিলাম রাগ করে।
উঠে বসলাম।
কাল রাতে ডোজটা একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিল, এখনো মাথা ঝিমঝিম করছে।
এমন না যে কালকেই প্রথম খেলাম।এই জার্মানীতে আসার আগেও আমি ঢাকা শহরে বসে মদের বহু বোতল খালি করেছি।নিজের টাকায় না হোক, কিন্তু খালি করেছি তো।
শুরুটা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়। চেনা পরিচিত সবাই কোন না কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন ভর্তি হয়ে গেছে।আমি শালা বেশি ট্যালেন্টেড, বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই আমার প্রতিভাকে চিনতে পারছিল না।শেষে বাবা কিভাবে যেন চিপাগলির এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দিল।
প্রথমদিন ক্লাস করতে গিয়ে আমি পুরাই বেকুব।তিনতলার একটা বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে নাম দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।তাও যদি পুরো তিনতলা হত। গ্রাউন্ড ফ্লোরে একদিকে ফ্ল্যাট আর অন্য দিকে পার্কিং।
শুরু হল আমার রাজধানী জীবন।
ঢাকা শহরে টিকে থাকার খরচ অনেক।বাবার পক্ষে দেয়াটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছিল, শেষে বাধ্য হয়ে বললেন টিউশানী করতে।
আরে, যেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলা আমার প্রতিভা চিনল না, সেই দেশের ওই অর্ধশিক্ষিত গার্ডিয়ানগুলা কি আমার প্রতিভা চিনবে?
হলও তাই। একমাসে তিনটা টিউশানী ধরলাম আর ছাড়লাম। যদিও ওই গার্ডিয়ানগুলা বলে ওদের মেয়েদের সাথে অশ্লীল আচরনের জন্য আমাকে বের করে দিয়েছে, কিন্তু ওরাও জানে আর আমিও জানি ওদের মেয়েগুলোই আমার ওপর ঢলে ঢলে পড়ছিল।
সে যাই হোক, টিউশানী নাই, এদিকে বাবাও জানিয়ে দিয়েছে সে আমার সেমিস্টার ফী ছাড়া আমার আর কোন খরচ দেবে না।আমার মত কুলাংগার ছেলের পেছনে সে আর ইনভেস্ট করতে আগ্রহী নয়।
আমিও বলে দিলাম, তোমার টাকার আমি নিকুচি করি।
বাসায় তো বলে দিলাম, টাকার নিকুচি করি। কিন্তু টিকেতো থাকতে হবে।
আর তখনই আমার জীবনে এলেন বড় ভাই।
বড় ভাইয়ের নাম আমরা কেউ জানতাম না।তার বয়স সম্পর্কেও কারো ধারনা ছিল না।কেউ বলত পয়ত্রিশ, কারো চোখে তার বয়স চল্লিশ।বড় ভাই এসব কথায় মাইন্ড করতেন না। তিনি বলতেন, যেদিন তিনি পাশ করে বেরোবেন, সেদিন তার বয়স হবে চব্বিশ।
বড় ভাই যদিও দাবী করতেন তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কিন্তু তাকে কোনদিন কোন ক্লাস আমি করতে দেখিনি। অবশ্য ক্লাসের নামে যা হোত, তাতে উপস্থিত থেকেও কোন লাভ হত না।আর পরীক্ষার কথাতো বাদ দিলাম।
একেতো টাকার সমস্যা, তার ওপর লেখাপড়ার এই ফ্রাস্টেশান।এর ওপর যুক্ত হল ঐন্দ্রিলার চড়। বললাম, লেটস মেক লাভ ইন ভ্যালেন্টাইন্স ডে আর সে কিনা আমাকে সবার সামনে চড় মেরে বলল, ইতর, ছোটলোক, ক্যারেকটারলেস। আরে *গী, ওই টাইট জিন্স আর ট্রান্সপারেন্ট জামা পড়িসইতো নিজের সব দেখিয়ে বেড়ানোর জন্য।তোর আবার ক্যারেকটার কিসের?
চড় খেয়ে একা একা বসেছিলাম, তখনই বড় ভাই কাধে হাত রেখে বললেন, কি ছোটভাই, মনখারাপ?
না ভাই, আনন্দে নাচতে ইচ্ছা করতেছে। নাচব?
আরে, তোমার দেখি সত্যিই অনেক মন খারাপ। আরে, ছেড়ে দাও।মেয়েগুলাতো এমনই, সারাদিন ঢলাঢলি করে শেষবেলায় এসে সতী সাজবে।ওসব নিয়ে মন খারাপ করলে চলবে?
আমি চুপ করে রইলাম।
ম্যাগাজিনে সেদিন তোমার একটা লেখা পড়লাম।বিজ্ঞানমনস্কতা নিয়ে।ভাল লেগেছে।
বড় ভাইয়ের মুখে নিজের লেখার প্রশংসা শুনে আমার মুখে হাসি ফুটল।একটু আগে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি-ভাবতে নিজেরই খারাপ লাগল।থ্যাংক্স ভাই।
তোমার আরো একটা লেখা আমি পড়েছি।ওটাও বেশ ভাল ছিল।
তাই নাকি ভাই? কোনটা? আমি আগ্রহভরে জানতে চাইলাম।আজ পর্যন্ত কেউ এভাবে সামনাসামনি আমার লেখার প্রশংসা করেনি।
যৌবনজ্বালায়।অবশ্য চটিটা আমার কমন পড়ছে। তা লেখা কপি পেস্ট করার অভ্যাস কবে থেকে?
আমার মেজাজ হঠাৎ লাগামছাড়া হয়ে গেল।কি বলেন এইসব? আমি সবসময় মৌলিকতায় বিশ্বাস করি। কপি পেস্ট আমি করিনা।
তুমি কপিপেস্ট কর না?নকল করতে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় একবার তুমি বহিস্কার হইছিলা, সেই খবর আমি আগেই পাইছি।কপিপেস্টের অভ্যাস তোমার বহু পুরানো, এই লেখাটাও সেই অভ্যাসেরই ফসল।
অপমানে আমার গা জ্বলে গেল। আপনি যা জানেন সব ভুল জানেন। কাজের কথা থাকলে বলেন, নাহয় ফুটেন। মেজাজ কিন্তু বহুত খারাপ আছে।
আমার কথা শুনে হঠাত বড় ভাইয়ের মুখটা গম্ভীর হয়ে গেল। দেখ ছেলে, আমার এলাকায় দাড়ায়ে কখনো আমাকে মেজাজ দেখাবা না। তোমার মত বহুত টেরা পোলারে সিধা করছি আমি।এখন চুপচাপ পাশে আইসা বস আর যা বলি তা মনযোগ দিয়ে শুন।
বড়ভাইয়ের চোখে কি যেন ছিল, আমি চুপচাপ তার পাশে বসে পড়লাম।বড়ভাই বলতে শুরু করলেন।তার এই কথাগুলোই চিরতরে আমার জীবন বদলে দিল।
তিন
জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম।
শিট।সত্যিই অনেকবেলা হয়ে গেছে।
কালকে মাল খাওয়ার পর পুরাই টাল হয়ে গিয়েছিলাম, আর কোন হুশ জ্ঞান ছিল না।কিভাবে আমি বাসায় এলাম, কে আমাকে পৌছে দিল- কিছুই জানি না।
ল্যাপীটা অন করে ফেসবুকে ঢুকলাম।পরিস্থিতি কি বোঝা দরকার।
কিন্তু যা দেখলাম তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।চোখ কচলে ভাল মত মনিটরের দিকে তাকালাম।যা দেখছি তা স্বপ্ন নয়, বাস্তব।
তিন হাজার।
তিনের পরে আরো তিনটা শুন্য দিয়ে তিন হাজার।
হ্যা, তিন হাজার লোক আমার ইভেন্টে গোয়িং দিয়েছে।আরে,আমিতো পুরাই হিট খায়া গেলাম।
নিশ্চয়ই এই জিনিস দেখে বিপ্লব হারামজাদাটার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। নিজে জীবনে কখনো একটার বেশি দুইটা লাইক কামাতে পারল না (সেই একমাত্র লাইকও তার নিজের দেয়া) আর এখন আমাকে হিট দেখে হিংসায় জ্বলে পুড়ে ঘুমের বারটা বাজিয়ে দিল। হারামজাদা।
বিপ্লবকে ফোন দিলাম।
হ্যালো।
আমার ইভেন্ট দেখছস?
কোন ইভেন্ট? বিপ্লব নির্লিপ্ত কন্ঠে জানতে চায়।
আরে ভ্যালেন্টাইনস ডে'র ইভেন্ট।ভালবাসা দিবসে পুলিশি প্রহরায় ন্যাংটা হয়ে নাচব।
হ্যা, দেখছি।
তিন হাজার লোক গোয়িং দিছে।
তো?
তো মানে? জীবনে একটা ইভেন্টের হোস্ট ছিলি? তিন হাজার লোকের 'গোয়িং' পাওয়া কতবড় ব্যাপার জানিস?
বিপ্লব হঠাৎ হো হো করে হেসে উঠল।এহ, আমাকে খুব উদ্ধার করছে উনি।তোর কি মনে হয় তিন হাজার লোক গোয়িং দিছে মানেই ১৪ তারিখ সবাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে ন্যাংটা হয়ে নাচা শুরু করবে? আরে হারামজাদা, জার্মানিতে এসাইলাম নিয়ে বসে আছস, তুই নিজে ওই ইভেন্টে যাইতে পারবি?
মেজাজটা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল।কিন্তু কি জবাব দেব বুঝতে পারছিলাম না।
তোর সাথে যে মেয়েটাকে ইভেন্টের হোস্ট করছস ওইটা কে?
তুই চিনবি না। মেয়েটাও আমার মতই মুক্তচিন্তার ধারক বাহক। কিন্তু ওইসব প্রতিক্রিয়াশীল গোড়ালোকগুলোর জন্য দেশে টিকতে না পেরে এখানে আসছে।
নাটক *দাইস না।আমি চিনব না? হারামজাদা, তুই কয়টা ব্লগার চিনস? এই মেয়েকে আমিই বড় ভাইয়ের সাথে পরিচয় করায় দিছি।জার্মানিতে এই মাইয়ারে এসাইলাম পাওয়ানোর জন্য কত দৌড়াদৌড়ি করছি তুই জানস?
আজাইরা কথা কইস না।
কিসের আজাইরা কথা? এই মাইয়ার সাথে তোর ঢলাঢলি কিন্তু বড় ভাই ভাল চোখে দেখতেছে না।
আরে তুই নিজে জীবনে নিজের ছাড়া অন্য কারো লাইক পাইছস।আমি ব্লগার বন্য বেজাত, এইসব আমাদের বড় বড় সেলিব্রেটিদের ব্যাপার, তোরা চুনোপুটিরা বুঝবি না।অফ যা।
কি বললি? আবার বলতো।
এক কথা বারবার বলতে হবে কেন? কানে শুনস না?
তুই শালা আমার সাথে সেলিব্রেটিগিরি *দাস? নিজে জীবনে দুই কলম লিখছস? দশটা পোস্ট থেকে কপিপেস্ট মাইরা কিভাবে একটা পোস্ট বানাইতে হয়ে সেটা তোরে কে শিখাইছে? আমি।তুই পোস্ট দেয়ার সাথে সাথে এতগুলা নিক থেকে তোরে প্লাস দিয়ে, কমেন্ট দিয়ে কে হিট করছে? আমি।আরে কেউ যখন তোর কপিপেস্ট ধরায় দিছে, তখন মাল্টি নিয়ে ঝাপায় পড়ে তারে ছাগু দিছে কে? আমি
আরে যা যা।
কিসের যা যা? আমি আর বড় ভাই না থাকলে তুই জার্মানি দূরে থাক, ঢাকা শহরেইতো টিকতে পারতি না। মনে রাখিস যখন পকেটে খাওয়ার পয়সা ছিল না তখন ধর্মবিরোধী ব্লগিং করে তোর রুটি রুজির ব্যবস্থা করছি আমি আর বড় ভাই।আমরা না থাকলে তুই জার্মানি আইতে পারতি?
উফ, এইসব ছাগলের সাথে কথা বলার কোন মানেই হয় না। ফোনটা কেটে দিলাম।
চার
ফোনটা বেজে উঠল।
আমি স্ক্রীনের দিকে তাকাই।বড় ভাই।
হ্যালো।
কিরে, তোর খবর কি?
এইতো, চলতেছে।
এত শুকনা গলায় কথা বলতেছস ক্যান? কি হইছে?
আমি বিপ্লবের সাথে কথাবার্তা বিস্তারিত খুলে বললাম।
ভাই, পোলাটা কিন্তু বারবার লিমিট ক্রস করতেছে। আমার কিন্তু আর সহ্য হচ্ছে না।আমার ইভেন্টে কো হোস্ট হবে না হবে সেটা আমার ব্যাপার। এইসব ব্যাপারে কথা বলার ওই হারামজাদা কে? সে আবার আপনার নাম ভাংগায় কয় আপনি নাকি আমার ওপর খেপছেন।
খেপি নাই, তবে তোর পারফরম্যান্সে কিন্তু আমি খুশিও না।
কেন ভাই?
ওই যে সেদিন তোর পোস্টে দুইটা পোলা আইসা তোরে লেখাচুর কইয়া মেইন লেখার লিংক দিয়া গেল আর তুই কিছু কইতে পারলি না?
কি কমু ভাই?
আরে ট্যাগ দিয়ে দিবি।ট্যাগিং, গালাগালি,ফাপড়বাজি-এইসব হল আমাদের হাতিয়ার।তোরে না দুইশ গালির একটা লিস্ট বানায় দিছি?এইসব ছাড়া অনলাইনে টিকতে পারবি? পারফরম্যান্স না দেখাইতে পারলে কিন্তু স্পন্সররা টাকা দিবে না।
তাইলে কি করতে কন ভাই?
আপাতত ওই পোস্টে যা হইছে, হইছে।এখন গে-দের নিয়ে তোরে একটা লেখা রেডি করতে বলছিলাম।করছস?
হ ভাই। যে ছয়টা পোস্টের লিংক দিছিলেন ওইগুলা মিশায়া ভালই ককটেল বানাইছি।
শিরোনাম কি দিবি?
আমি ভাবতেছি- পুটুবাদীতা:ভালবাসার আরেক নাম।
সুন্দর নাম।পুটুবাদ একদিন প্রতিষ্ঠিত হবে।
জ্বি ভাই।
তাহলে তাড়াতাড়ি লেখাটা পোস্ট করে দে।সন্ধ্যায় একটা পার্টি আছে।চলে আসিস। তোর কো হোস্টও আসবে।
কিসের পার্ট?
স্পন্সররা দিচ্ছে। সময়মত চলে আসিস।
পাঁচ
এতক্ষনে মনে পড়েছে।আমি আছি বড় ভাইয়ের বলা সেই পার্টিতেই।নিগ্রোটার পরিচয়ও মনে পড়েছে।এই শালা আমার মতই ওদের স্পন্সরশীপে অনলাইনে কাট পেস্ট চালায়।আমি মূলত ধর্মবিদ্বেষী লেখা লিখি আর নিগ্রোটা লেখে এলজিবিটি নিয়ে। শালারে এলবিজিটি মানে জিজ্ঞেস করেছিলাম। ব্যাটায় আমার প্রশ্ন শুনে মুচকি হেসে বলেছে, সুন ইউ উইল ফাইন্ড আউট।কাম অন, হ্যাভ এ ড্রিংক উইথ মি।
শালার সাথে মাল টানতে গেলাম, তারপরেই সব অন্ধকার।
জ্ঞান ফিরতেই দেখি অন্ধকার ঘরে পড়ে আছি।কোমরে প্রচন্ড ব্যথা।
কোথায় আমি?
ঠিক তখনই বুঝতে পারলাম, কেউ আমার প্যান্ট টানছে।
একি, প্যান্ট আবার টানাটানি করে কে?
আমি প্রানপনে কাপড় ধরে রাখার চেষ্টা করছি,কিন্তু হাত দুটো যেন অবশ হয়ে গেছে।
কাম অন বেবি, এভ্রি ওয়ান হ্যাজ এ ফার্স্ট টাইম। ডোন্ট বি শাই।নিগ্রোটা হাসতে থাকে।
আমি যেই মাইয়ারে টার্গেট করছি তার লগে তুই ঢলাঢলি করস? বড় ভাইয়ের কন্ঠ শুনতে পাই আমি। খুবতো ন্যাংটা হওয়ার ইভেন্ট খুলছিলি, দেশেতো যাইতে পারবি না, এখানেই ন্যাংটা হ।বড় ভাই আর বিপ্লব হেসে ওঠে।
পাশের রুম থেকে আমি মেয়েটার চিৎকার শুনতে পাই। আমাদের চিতকার ঢাকা পড়ে যায় বাকিদের হাসির শব্দে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫২