somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনুবাদ গল্পঃ ♣♣SATAN ♣♣ -কাহলিল জিবরান

১২ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

♣♣♣♣ SATAN ♣♣♣♣


সকল প্রকার পাপ এবং স্বর্গ ও নরক সম্পর্কে ফাদার সামানের অগাধ জ্ঞান ছিল। তাই ধর্মীয় আর আত্মিক পরামর্শের জন্য লোকজন তার ওপর আস্থা রাখত।
ফাদার সামানের দায়িত্ব ছিল উত্তর লেবাননে। মানুষকে পাপ আর শয়তানের ধোঁকা থেকে রক্ষার জন্য তিনি সেখানে বলতে গেলে যুদ্ধই শুরু করেছিলেন।
গ্রামের চাষীরা তাকে প্রচন্ড সম্মান করত আর বিপদেআপদে তার কাছেই পরামর্শ চাইত। প্রতি মৌসুমে পাদ্রীর ঘর ভরে উঠত চাষীদের দেয়া ফসলে।
শরতের এক বিকেলে, পাহাড় আর উপত্যকা পাড়ি দিয়ে, পাদ্রী সামান এগিয়ে যাচ্ছিলেন গ্রামের দিকে। হঠাত তিনি কান্নার শব্দ শুনতে পেলেন। শব্দটা ভেসে আসছিল খাদের নিচ থেকে।
কৌতুহলী হয়ে তিনি খাদের কিনারে গিয়ে দাড়ালেন। দেখলেন খাদের নিচে পরে আছে এক নগ্ন পুরুষ, তার গলা আর বুক বেয়ে রক্ত নেমে আসছে।প্রচন্ড যন্ত্রনার লোকটা কাতরাচ্ছে। পাদ্রীকে দেখে সে কেঁদে উঠল।"দয়া কর, আমাকে সাহায্য কর। আমি মারা যাচ্ছি, আমাকে বাঁচাও।"
পাদ্রী লোকটার দিকে সন্দেহের তাকালেন আর ভাবলেন, "লোকটা মনে হয় চোর। নিশ্চয়ই চুরি করতে গিয়ে ব্যাটা ধরা পড়েছে আর লোকজন পিটিয়ে তার এই অবস্থা করেছে। এখন যদি আমি এখানে থাকি আর লোকটা মরে যায় তাহলে খুনের দায়ে আমার ফাসি হবে। তার চেয়ে বরং সময় থাকতে এখান থেকে কেটে পড়ি।"
এই ভেবে পাদ্রী আবার হাঁটতে শুরু করলেন। পাদ্রীকে চলে যেতে দেখে আহত লোকটা চিৎকার করে কেঁদে উঠল, "আমাকে ফেলে যেও না। এখানে একা পড়ে থাকলে আমি মারাই যাব।"
লোকটার কথা শুনে পাদ্রী থমকে দাঁড়াল।"নিজেকে আমি মানবতার সেবক দাবী করি, অথচ একজন আহত লোককে সাহায্য করার মত মন-মানসিকতা আমার নেই"-এই ভেবে পাদ্রীর মন খারাপ হয়ে গেল।
নিজেকে পাদ্রী বললেন, "চোর না হলে এই লোকটা নিশ্চয়ই কোন পাগল, একা একা জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। হয়ত কোন হিংস্র প্রানীর আক্রমনে লোকটার এই অবস্থা হয়েছে। লোকটার ক্ষত দেখে আমার ভয়ই লাগছে, না জানি কখন আবার মরেটরে যায়। আমি মানুষের আত্মার চিকিৎসা করতে পারি, কিন্তু শরীরের জখমের চিকিৎসা করার সাধ্য আমার নেই।"
সব ভাবতে ভাবতে যেই পাদ্রী কয়েক কদম এগিয়েছেন, ওমনি লোকটা দম ফুরিয়ে হাফাতে হাফাতে চিতকার করল, "যেও না, আমার কাছে এসো। তুমি আর আমি অনেককাল ধরে বন্ধু। আমি তোমাকে চিনি সামান। তুমি একজন পাদ্রী, তোমার ভেড়ার পাল আছে। আমি কোন চোর না, জঙ্গলে একাকী ঘুরে বেড়ানো কোন পাগলও না। আমার কাছে এসো, কান পেতে শুনে নাও আমার নাম।"
পাদ্রী লোকটার কাছে গেলেন, হাটু গেড়ে লোকটার পাশে বসলেন, চেয়ে দেখলেন লোকটার মুখ। আশ্চর্য বৈপরীত্যে ভরা লোকটার চেহারা। পাদ্রী দেখলেন সেই মুখে বুদ্ধির সাথে বোকামি, সৌন্দর্যের সাথে কদর্য আর শয়তানির সাথে সরলতা।পাদ্রী ছিটকে লোকটার কাছ থেকে সরে এলেন আর বিস্ময়ভরা কন্ঠে জিজ্ঞেস করলেন, "কে তুমি?"
মলিন কন্ঠে মুমূর্ষু লোকটা বলল, "আমাকে ভয় পেয়ো না, পাদ্রী। তোমার আর আমার মাঝে বহু বছরের শক্ত বন্ধুত্ব।আমাকে দাঁড়াতে সাহায্য কর, কাছের কোন নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাও আর তোমার ওই পরিস্কার কাপড় দিয়ে আমার ক্ষতস্থান মুছে দাও।"
"আগে বল তুমি কে? আমি তোমাকে চিনিনা, তোমার চেহারাও আগে কখনো দেখিনি।"পাদ্রী জবাব দিলেন।
"তোমার সাথে আমার হাজারবার দেখা হয়েছে।তুমি প্রতিদিন আমার কথা বল, নিজের জীবনের চেয়ে তুমি আমাকে বেশি ভালবাস।"লোকটা জবাব দিল।
লোকটার ফাজলামিপূর্ন কথা শুনে পাদ্রী রাগে ফেটে পড়লেন।"মিথ্যুক কোথাকার। একজন মৃত্যুপথযাত্রীর সবসময় সত্য বলা উচিত।তোর ওই কুটিল চেহারা আমি জীবনেও দেখিনি।বল তুই কে নাহয় মরার আগে আমিই তোকে মেরে ফেলব।"
লোকটা তার রক্তাক্ত দেহ নিয়ে একটু নড়ে উঠল, ধর্মযাজকের চোখের দিকে তাকাল, তার ঠোঁটে একটা রহস্যময় হাসি ফুটে উঠল।আশ্চর্য শান্ত কন্ঠে লোকটা জবাব দিল,"আমি শয়তান।"
ভয়ানক শব্দগুলো শুনে পাদ্রী চিৎকার করে উঠলেন। তার চিৎকারের শব্দে উপত্যকার প্রতিটি কোন কেঁপে উঠল।পাদ্রী আবার লোকটার দিকে তাকালেন আর তার ক্ষতবিক্ষত দেহের বিকৃতি দেখে বুঝতে পারলেন, শয়তানের এই চেহারা তিনি আগেও দেখেছেন, গ্রামের গির্জায় ঝুলে থাকা ছবিতে।
পাদ্রী কেঁপে উঠে বললেন,"স্রষ্টা আগেও আমাকে তোর ওই কুৎসিত চেহারা দেখিয়েছেন আর সঠিক কারনেই আমি তোকে ঘৃণা করি।তোকে আমি এখন আগের চেয়েও বেশি ঘৃণা করি।প্রতিটি রাখালের দায়িত্ব রোগাক্রান্ত ভেড়াটিকে হত্যা করে তার ভেড়ার পালকে রক্ষা করা।"
"ফালতু কথা বলে এই পলায়নপর সময়কে নষ্ট কোর না পাদ্রী। তারচেয়ে তুমি আমার ক্ষত সারানোর দিকে মনযোগ দাও।"শয়তানের জবাব।
"যে হাত প্রতিদিন স্রষ্টার প্রার্থনা করে তা নরকের আগুনে তৈরী ওই শরীর স্পর্শ করবে না। তুই সমগ্র মানবতার শত্রু, পৃথিবীর সমস্ত সদগুণ ধবংস করার শপথ করেছিস তুই।তোর মরেই যাওয়া উচিত।"
শয়তান কোনরকমে তার কনুইয়ের ওপর ভর দিয়ে পাদ্রীর দিকে চেয়ে বলল, "তুমি জানই না কি বলছ আর বুঝতেই পারছ না নিজের অজান্তে কি পাপের ভাগীদার হচ্ছ।আমার কথা ভালমত শোন। আজ এই উপত্যকার মধ্য দিয়ে আমি হেটে যাচ্ছিলাম।যখন আমি এখানে পৌছালাম তখন একদল ফেরেশতা আমাকে আক্রমন করল। বাকি সবাইকে হয়ত আমি হারিয়ে দিতাম, কিন্তু একজন ফেরেশতা, আমার ধারণা ও সম্ভবত মাইকেল, একটা অসাধারণ ধারাল তলোয়ার দিয়ে আমাকে আক্রমণ করল। মাইকেলের বীরত্ব আর সেই তলোয়ারের ধারের কাছে আমি হেরে গেলাম।যদি আমি এখানে পরে থেকে মরার ভান না করতাম, তাহলে আজ মাইকেলের তলোয়ার আমাকে শেষ করে দিত।"
শুনে আকাশের পানে চেয়ে সোল্লাসে পাদ্রী বলে উঠলেন, "মানবজাতিকে যে এই নিকৃষ্ট শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে, সেই মাইকেলের জয় হোক।"
শয়তান প্রতিবাদ করে বলল, "মানবজাতিকে আমি যতটা ঘৃণা করি, নিজেকে তুমি তার চেয়ে কম ঘৃণা কর না।এখন তুমি মাইকেলের নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছ, অথচ সে তোমাকে কখনো উদ্ধার করতে আসেনি।আমার পরাজয়ের মুহূর্তে তুমি আমাকে অভিশাপ দিচ্ছ। অথচ অতীত আর বর্তমান-সবসময়ই আমি তোমার সুখশান্তির উৎস ছিলাম।তুমি আমাকে দয়া দেখাতে অস্বীকার কর, অথচ তোমার বেঁচে থাকা আর উন্নতি-দুটোই আমার ছায়ার নীচে।আমার অস্তিত্বই তোমার জীবকার উৎস আর আমার নাম ভাঙ্গিয়েই তুমি নিজের সব কাজ জায়েজ করে নাও। আমার অতীতের কারণেই বর্তমান আর ভবিষ্যতে আমাকে তোমার প্রয়োজন।তুমি কি প্রয়োজনীয় অর্থসম্পদ জমা করে ফেলেছ? আমার নাম ভাঙ্গিয়ে ভক্তদের কাছ থেকে এখন আর সোনা-রূপা হজম করতে পারছ না?"
"তুমি কি বুঝতে পারছ না আজ আমি যদি না থাকি তাহলে কাল তুমিও না খেয়ে মারা যাবে?তুমি যদি আজ আমাকে না বাঁচাও তাহলে কাল তোমার প্রয়োজনীয়তা কোথায়?আমার নাম মুছে গেলে তুমি কোন নতুন পেশায় যাবে?বছরের পর বছর তুমি গ্রামে গ্রামে ঘুরে লোকজনকে আমার ধোঁকায় না পড়ার জন্য বলেছ। গরীব লোকগুলো তাদের জমানো টাকা আর জমির ফসল ভেট দিয়ে এসেছে তোমার পরামর্শের জন্য।কাল যদি তারা জানতে পারে শয়তান মারা গেছে, তবে তারা কি জন্য আসবে তোমার কাছে?আমি মরলে লোকেরা আর পাপ করবে না, তাই আমার সাথে তোমার পেশারও মৃত্যু হবে।"
"একজন ধর্মযাজক হয়েও কি তুমি বুঝতে পারছ না শয়তানের অস্তিত্বই তার শত্রু গির্জা তৈরি করেছে? এই প্রাচীন যুদ্ধই বিশ্বাসীদের সঞ্চয় থেকে স্বর্ণ আর রূপামুদ্রা সরিয়ে ধর্মযাজকদের পকেট ভরিয়েছে।কিভাবে তুমি আমাকে মরতে দিতে পার যখন তুমি জান আমার মৃত্যুর মধ্য দিয়েই তুমি তোমার সম্পদ, তোমার পেশা,এমনকি তোমার গির্জাও হারাবে।
শয়তান এক মুহূর্তের জন্য চুপ করল। ইতোমধ্যেই তার দূর্বল কন্ঠস্বর হয়ে উঠেছে আত্মবিশ্বাসী।"পাদ্রী, তুমি অহংকারী, সাথে অনেক কিছুই দেখ না।আমি তোমাকে বিশ্বাসের ইতিহাস শোনাই। তখনই তুমি বুঝতে পারবে তোমার আর আমার অস্তিত্ব একই সুতোয় গাথা।"
"সৃষ্টির আদিতে, মানুষ সূর্যের দিকে চেয়ে, তার দুবাহু মেলে বলে উঠেছিল এই আকাশে আছে এক উপকারী-বদান্য স্রষ্টা।এরপর মানুষ সূর্যের দিকে পিঠ দিয়ে মাটির ওপর দেখতে পেল নিজের ছায়া আর বলে উঠল, এই মাটির গভীরে থাকে এক শয়তান, যে কেবল মন্দকেই ভালবাসে।"
"এরপর গুহায় ফিরতে ফিরতে সে নিজেকে বলল, আমি দুটো বিপরীতমুখী শক্তির মাঝে বাস করি। আমাকে অবশ্যই এক শক্তির কাছে আশ্রয় নিতে হবে আর এক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।"
"এরপর বহু শতাব্দী চলে গেল।মানুষ তখনও এই দুই শক্তির মাঝেই বাস করে। একটা শক্তিকে সে ভালবাসে, কারন এটা তাকে শান্তি দেয়। আর একটা শক্তিকে সে ঘৃণা করে, কারণ এই শক্তিকে সে ভয় পায়। কিন্তু এই ভালবাসা বা ঘৃণার স্বরূপ সে কখনোই বুঝতে পারেনি।"
"এরপর সভ্যতার শুরু হল, সমাজের ক্ষুদ্রতম একক হিসেবে এল পরিবার।তারপর এল গোষ্ঠী, যখন মানুষের সক্ষমতা অনুসারে কাজ করার রীতি শুরু হল।কেউ কৃষিকাজ করে, কেউ ঘরবাড়ি বানায়, কেউ কাপড় বোনে আর কেউবা খাবার শিকার করে।এভাবেই সমাজে শ্রেনীবৈষম্য চলে আসে।"
এই বলে শয়তান একটু থামল আর অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। তার হাসির শব্দে পুরো উপত্যকা ভয়ংকরভাবে কেঁপে উঠল।সেই সাথে তার ব্যথাগুলো তাদের অস্তিত্ব জানান দিল, প্রচন্ড যন্ত্রনায় ক্ষত চেপে ধরে সে বসে পড়ল।
"সময়ের সাথে সাথে এই শ্রেনীবিভেদ আশ্চর্যজনকভাবে বাড়তে থাকল।প্রথম গোষ্ঠীতে একটা লোক ছিল, নাম লা উইস। আমি জানিনা তার নামের উৎস বা অর্থ কি? লোকটা ছিল প্রচন্ড ধূর্ত, কিন্তু ভয়াবহ রকমের অলস। সে না কৃষিকাজ করত, না ঘরবাড়ি বানাত, না সে মাঠে গরুছাগল চড়াত।মোট কথা, সব রকম শারীরিক পরিশ্রমে তার প্রচন্ড অনীহা ছিল। যেহেতু সে যুগে খাবার উদ্বৃত্ত থাকত না, তাই কাজ না করলে কোন খাবারও পাওয়া যেত না।তাই বহু রাত লা উইস পার করেছিল খালি পেটে।"
"এক রাতে সবাই একত্র হয়েছিল তাদের গোত্রপ্রধানের ঘরের সামনে। উদ্দেশ্য আজকের দিনের কাজ নিয়ে আলোচনা করা আর আগামীদিনের করণীয় ঠিক করা। হঠাত একজন লাফ দিয়ে পিছিয়ে গেল, আকাশের দিকে চেয়ে ভয়ে প্রচন্ড চিৎকার করে উঠল, চাঁদের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বলল, দেখ, রাত্রি দেবতার কি অবস্থা!চাঁদটা কালো হয়ে গেছে, তার সব আলো নষ্ট হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে আকাশের বুকে একটা কালো গোলক ঝুলে আছে।"
"লোকটার কথা শুনে সবাই আকাশের দিকে তাকাল।যা দেখল তাতে সবার আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার যোগাড়। চাঁদটাকে ধীরে ধীরে অন্ধকার গ্রাস করে নিচ্ছে, চাঁদের আলো মিলিয়ে যাচ্ছে, আশেপাশের পাহাড় আর উপত্যকা ঢেকে যাচ্ছে কালো চাদরে।"
"লা উইস এর আগেও চন্দ্রগ্রহন দেখেছে।সে খুব ভাল করেই জানত এটা খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার।লোকজনের এই ভয় আর অস্থিরতার সুযোগের সে পূর্ণ সদ্ব্যবহার করল। লোকজনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে, আকাশের দিকে আঙুল তুলে সে বলল, ভাইয়েরা, হাত তুলে প্রার্থনা শুরু কর। রাত্রি দেবতা আর শয়তানের মাঝে লড়াই শুরু হয়েছে। সবাই হাটু গেড়ে মাটিতে মুখে লুকিয়ে প্রার্থনা শুরু করে, যত্তক্ষন না এই লড়াই শেষ হচ্ছে ততক্ষন পর্যন্ত কেউ মাথা তুলবে না। যদি কেউ একবার দুই দেবতাকে লড়াই করতে দেখে, তবে তাদের আক্রোশে সে সারাজীবনের জন্য অন্ধ হয়ে যাবে। মনে রাখবে, এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। যদি রাত্রিদেবতা জয়ী হয় তবেই আমরা টিকে থাকব, নতুবা আমাদের ধবংস নিশ্চিত।"
"লা উইস কথা বলেই যেতে লাগল নিজের তৈরী নানান রকমের উদ্ভট শব্দ ব্যবহার করে। উপস্থিত লোকেরা দূরে থাক, লা উইস নিজেই এসব শব্দের মানে জানে না।লা উইসের কথার মাঝেই, গ্রহন শেষে চাঁদ তার আগের অবস্থায় ফিরে এল। লা উইস এবার আরো জোরে চিৎকার করে উঠল,ভাইয়েরা আমার, মাথা তুলে দেখ, রাত্রি দেবতা শয়তানকে পরাস্ত করে তারাদের মাঝে আবার তার যাত্রা শুরু করেছেন।তোমাদের প্রার্থনাই রাত্রি দেবতাকে শক্তি যুগিয়েছে।রাত্রি দেবতা তোমাদের ওপর খুশি হয়েছেন।চাঁদ এখন আগের চেয়ে আরো উজ্জ্বল, আলো সুন্দর।"
"লোকজন মাথা তুলে দেখে অন্ধকার কেটে গেছে, কালো চাঁদ আবার আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে। তাদের অন্তরে শান্তি নেমে এল, তাদের ভয় পরিণত হল আনন্দে।লোকজন নেচেগেয়ে চাঁদের ফিরে আসা উদযাপন করল, পুরো উপত্যকা মুখোরিত হয়ে উঠল তাদের আনন্দ সংগীতে।"
"সে রাতে গোত্রপ্রধান লা উইসকে ডেকে বলল, আজ তুমি এমন কিছু করে দেখিয়েছ যা আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারেনি। তোমার কাছে এমন জ্ঞান আছে যার সম্পর্কে আমাদের কারো কোন ধারনাই ছিল না। তাই গোষ্ঠীর সবার ইচ্ছা অনুযায়ী আজ থেকে আমার পরে তুমিই এই গোত্রের সবচেয়ে সম্মানিত লোক। আমি সবচেয়ে শক্তিশালী লোক, আমি সবাইকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করব আর তুমি সবচাইতে জ্ঞানী লোক, তুমি আমাদের আর দেবতাদের মাঝে যোগাযোগ রক্ষা করবে।তুমি দেবতাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা আমাদের জানাবে, শিখিয়ে দেবে কিভাবে তাদের খুশি করতে হয়।"
"লা উইস সলজ্জভাবে জবাব দিল, দেবতারা স্বপ্নে আমাকে যা কিছু জানান তা-ই আমি আপনাদের জানিয়েছি। এখন থেকে আমি আমার ভাই এবং দেবতাদের মাঝে সেতু হিসেবে কাজ করব।"
"শুনে গোত্রপ্রধান নিশ্চিন্ত হলেন।পুরস্কার স্বরূপ তিনি লা উইসকে দুইটি ঘোড়া, সাতজন দাস, সত্তরটি ভেড়া আর সত্তরটি ভেড়াশাবক উপহার দিলেন আর জানিয়ে দিলেন,লোকেরা তোমার জন্য ঘর বানিয়ে দেবে আর প্রতি মৌসুমের শেষে আমরা সবাই তোমাকে ফসলের ভাগ দেব। এখন থেকে তুমি আমাদের মাঝে একজন সম্মানিত লোক হিসেবে বাস করবে।"
"লা উইস চলে যেতে উদ্যত হল এমন সময় গোত্রপ্রধান তাকে প্রশ্ন করল, আচ্ছা, এই 'শয়তানটা' কে? আমরা কেউতো তার কথা জানতাম না। রাত্রি দেবতার সাথে লড়াই করার সাহস তার কি করে হয়?"
"লা উইস তার মাথা চুলকে জবাব দিল, একেবারে আদিতে, যখন মানুষ সৃষ্টি হয়নি, তখন দেবতারা সবাই তারাদের মাঝে সুখে শান্তিতে বাস করতেন। তাদের স্রষ্টা, যাকে তারা 'পিতা' বলে ডাকত, তিনি এমন জিনিস জানতেন যা আর কেউ জানত না আর তার এমন ক্ষমতা ছিল যা আর কারো ছিল না।সৃষ্টির মাঝে যত লুকায়িত জ্ঞান ছিল তা তিনি অন্য কাউকে দেন নি।"
"বাহতার নামে একজন এই মহান দেবতাকে ঘৃণা করত। সপ্তম রাতে সে তার পিতার সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করল, কেন তুমি সমস্ত জ্ঞান আর ক্ষমতা নিজের কাছে কুক্ষিগত করে রেখেছ? আমরা কি তোমার সন্তান নই? আমরা তোমায় বিশ্বাস করি না? তাহলে তুমি কেন এসব সবার মাঝে বিলিয়ে দিচ্ছ না?"
"শুনে দেবতাদের দেবতা উত্তেজিত হয়ে বললেন, সমস্ত ক্ষমতা আর নিয়ন্ত্রণ আর প্রয়োজনীয় কেবল আমার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এই জ্ঞান দিয়ে অন্য কাউকে বিশ্বাস করা যায় না।"
"শুনে বাহতার পাল্টা জবাব দিল, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি নিজের জ্ঞান আর ক্ষমতা আমার সাথে ভাগ করে নেবে না ততক্ষণ পর্যন্ত আমি ও আমার সন্তানেরা এবং তাদের সন্তানেরা তোমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম।"
"বাহতার এর এই ঘোষণা শুনে দেবপিতা ক্রোধে ফেটে পড়লেন। স্বর্গের মাঝে সিংহাসনের ওপর দাঁড়িয়ে, এক হাতে খোলা তলোয়ার আর অন্যহাতে সূর্যকে ঢাল হিসেবে নিয়ে তিনি গর্জন করে উঠলেন যার শব্দে সৃষ্টিজগতের প্রতিটি কোনা কেঁপে উঠল। এই বিদ্রোহী পুত্র, আজ থেকে তোকে আমি অনন্তকালের জন্য অন্ধকারে নির্বাসিত করলাম। "
"সাথে সাথেই বাহতার আলোকজ্জ্বল স্বর্গ থেকে নেমে এল অন্ধকারে যেখানে সব অপবিত্র আত্মাকে নির্বাসিত করা হয়।সেই অন্ধকারে দাঁড়িয়ে সে শপথ করল আমৃত্যু তার পিতা আর ভাইদের বিরুদ্ধে সে লড়াই করবে এবং লড়াই করবে তাদের বিরুদ্ধে যারা তার পিতা আর ভাইদের ভালবাসে।"
"গল্প শুনে গোত্র প্রধানের কপাল কুঁচকে গেল, ভয়ে চেহারা সাদা হয়ে গেল।প্রধান বলল, তার মানে এই অপদেবতার নাম 'বাহতার'?
লা উইস জবাব দিল, যখন সে স্বর্গে বাস করত তখন তার নাম ছিল 'বাহতার'। অন্ধকারে নির্বাসিত হওয়ার সে 'শয়তান' নাম ধারন করে। এই নামেই সে এখন পরিচিত।"
"গোত্রপ্রধান কয়েকবার শয়তান নামটা আওড়াল, কিন্তু তার মুখের শব্দ শুনে মনে হল যেন গাছের শুকনো পাতাকে ছুয়ে বাতাস চলে যাচ্ছে।এরপর সে বলল, বুঝলাম শয়তান সমস্ত দেবতা আর তাদের পিতাকে ঘৃণা করে।কিন্তু সে মানুষকে কেন ঘৃণা করে?"
"শয়তান মানুষকে ঘৃণা করে, কারণ মানুষতো এই দেবতাদেরই সন্তান।
শুনে গোত্র প্রধান অবাক হয়ে গেলেন।তাহলে শয়তান কি আমাদের ভাই?
অবজ্ঞার সুরে লা উইস বলল, হ্যা, তবে এটাও মনে রাখতে হবে, শয়তান আমাদের সেই শত্রু যে আমাদের দিনগুলো কষ্টে আর রাতগুলো দুঃস্বপ্নে ভরিয়ে তোলে। শয়তান আমাদের সেই শত্রু যে ঝড়কে পথ দেখিয়ে আমাদের ঘরের কাছে নিয়ে আসে, যে আমাদের ফসল আর আমাদের গরুছাগলকে হত্যা করে আমাদের জন্য দুর্ভিক্ষ নিয়ে আসে। শয়তান সেই শক্তি যে আমাদের কষ্ট পেতে দেখলে আনন্দিত হয় আর আমাদের আনন্দ যাকে দুঃখিত করে তোলে। শয়তান আমাদের শত্রু, তাই ওকে ভালভাবে জানতে হবে। ওকে আমাদের চিনতে হবে, যাতে ওর ধোঁকা থেকে আমরা বাঁচতে পারি।"
"গোত্রপ্রধান বলল, আজ আমি এমন এক শক্তি সম্পর্কে জানতে পারলাম যে ঝড় বয়ে এনে আমাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে এবং আমাদের ফসল আর পশুপাখি হত্যা করে দুর্ভিক্ষ বয়ে আনে। আমি এই অপদেবতা সম্পর্কে জানতে পেরেছি, বাকি সবারও তার সম্পর্কে জানতে হবে।লা উইসকে ধন্যবাদ, তুমি না থাকলে আমরা কিছুই জানতে পারতাম না।"
"এরপর লা উইস নিজের ডেরায় ফিরে গেল। নিজের বুদ্ধিমত্তা আর সুযোগের সদ্ব্যবহার তার ভাগ্য ফিরিয়ে এনেছে। সে রাতে সবাই প্রথমবারের মত তাদের চারপাশে অপদেবতা আর শয়তানকে নিয়ে ঘুমোতে গেল। সবাই যখন দুঃস্বপ্ন দেখছে, লা উইস তখন ডুবে রইল মদ আর আমোদ ফূর্তিতে।"
শয়তান ক্ষনিকের জন্য থামল। পাদ্রী সামান এক দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে রইল।শয়তান আবার শুরু করল, "এভাবেই পৃথিবীতে ধর্মযাজকদের উদ্ভব ঘটে। সুতরাং বুঝতেই পারছ আমার অস্তিত্বই ধর্মযাজকদের উত্থানের কারণ। লা উইস হল প্রথম ব্যক্তি যে আমার নিষ্ঠুরতাকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করেছিল। লা উইসের মৃত্যুর পর তার বংশধরদের মধ্যে এই পেশা ছড়িয়ে পড়ে আর ধীরে ধীরে অন্যসব পেশার মত এটাও একটা সত্যিকারের পেশায় পরিণত হয়।এখন এই পেশায় শুধু তারাই আসে যাদের জ্ঞান সমুদ্রের মত বিশাল, যাদের আত্মা পবিত্র, যাদের মন পরিশুদ্ধ আর যাদের মন আকাশের মত উদার।"
"ব্যবিলনের লোকজন ওই পুরোহিতের সামনে সাতবার মাথা নত করেছিল সে আমার সাথে লড়াই করেছিল বলে।নিনেভায়, এক লোক দাবী করেছিল সে আমার সব গোপন কথা জানে, লোকজন তাকে নিজেদের আর স্রষ্টার মাঝে সেতু হিসেবে ধরে নিয়েছিল।তিব্বতে এক লোক দাবী করেছিল সে আমার সাথে যুদ্ধ করেছে, লোকেরা তাকে চন্দ্র-সূর্যের পুত্র বলে স্বীকার করে নিয়েছিল।ইফেসুসে, ব্যবিলাসে আমার প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য তারা নিজেদের সন্তানের জীবন উৎসর্গ করতে চেয়েছিল।রোমে, যেরুযালেমে যারা আমাকে ঘৃণা করে ও আমার বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল-লোকেরা তাদের জীবন দিয়ে বিশ্বাস করে।"
"সব শহরেই আমার নামকে ঘিরে ধর্ম, কলা ও দর্শন শিক্ষা পরিচালিত হয়েছে।আমি না থাকলে কোন মন্দির তৈরী হত না, আমি সেই সাহস যা মানুষের মধ্যে উদ্দেশ্য তৈরী করে, আমি সেই উৎস যা মানুষকে ভাবতে বাধ্য করে। আমি সেই হাত যা মানুষকে কাজ করতে বাধ্য করে। আমি সেই শয়তান যার বিরুদ্ধে টিকে থাকার জন্য মানুষ লড়াই করে।ভেবে দেখ যদি আমি মারা যাই মানুষের কি হবে? তাদের জীবনে কি উদ্দেশ্য থাকবে? আমি আছি বলেই আমার হাত থেকে বাঁচতে নারী-পুরুষ প্রার্থনা করে।"
"আমি আছি বলেই ভয়ের ওপর ভিত্তি করে সব প্রার্থনালয় গড়ে উঠেছে আর আমি গড়ে তুলেছি মদ আর বেশ্যালয়। আমি মারা গেলে না থাকবে ভয়, না থাকবে আনন্দ।আর এই দুটো না থাকলে মানুষের মন থেকে সব আশা আকাংখা মিলিয়ে যাবে?জীবন হয়ে দাঁড়াবে শুন্য, শীতল।"
"আমি সমস্ত মিথ্যা, প্রতারণা,ধোঁকাবাজি আর শয়তানির উৎস।ভেবে দেখ এসব ছাড়া পৃথিবী কেমন হবে? আমিই সমস্ত পাপের উৎস। পৃথিবী পাপ মুছে গেলে প্রয়োজন হবে কি কোন ধর্মযাজকের? তাই আমার মৃত্যু মানেই তোমারও মৃত্যু।এবার ভেবে দেখ হে ধর্মযাজক, তুমি কি আমাকে এই নির্জন উপত্যকায় মরতে দেবে?"
পাদ্রী সামান নার্ভাসভাবে হাত দুটো একসাথে ঘষতে লাগলেন আর ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে বললেন,"আমি এখন যা জানি তাতো এক ঘন্টা আগেও জানতাম না। এখন আমি জানি, তোমার অস্তিত্ব মানুষের মনে কামনা-লালসা তৈরি করে আর এই কামনা-লালসা দিয়ে স্রষ্টা মানুষের আত্মাকে পরিমাপ করেন।আমি নিশ্চিত যদি কামনা-লালসা না থাকে তবে সেই আদর্শ শক্তিও নষ্ট হয়ে যাবে যা মানুষকে পাপ সম্পর্কে সচেতন করে তোলে।"
"তোমাকে অবশ্যই বাঁচতে হবে।কারন যদি তোমার মৃত্যু হয় আর মানুষ সে কথা জানতে পারে তবে তারা প্রার্থনা করা ছেড়ে দেবে কেননা তাদের মন থেকে নরকের ভয় মুছে যাবে।তোমাকে বাঁচতে হবে, তোমার অস্তিত্বের কারণেই মানুষ পাপ থেকে বাঁচতে চাইবে।আর তোমার প্রতি আমি সমস্ত ঘৃণা বিসর্জন দেব, কারণ আমি মানবজাতিকে ভালবাসি।"
ভূমি কাঁপানো এক হাসি দিয়ে শয়তান বলল,"কি অসাধারণ বুদ্ধিমান মানুষ তুমি পাদ্রী, কি গভীর তোমার ধর্মীয় জ্ঞান।নিজের জ্ঞানের শক্তি দিয়ে তুমি আমার অস্তিত্বের কারণ বুঝতে পেরেছ যা আমি নিজেও আজ পর্যন্ত বুঝতে পারিনি।এখন আমি বুঝতে পারছি পরস্পরকে আমাদের প্রয়োজন।"
"কাছ এসো ভাই আমার।আমার শরীরের অর্ধেক রক্ত মাটিতে মিশে গেছে, আমার চারপাশে অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে।যদি তুমি আমাকে না বাঁচাও তবে মৃত্যু আজ আমাকে পরাজিত করবে।"
পাদ্রী সামান তার কাপড়ের হাতা গুটিয়ে শয়তানের দিকে এগিয়ে গেল আর শয়তানকে তার পিঠে তুলে নিয়ে নিজের গ্রামের দিকে রওয়ানা দিল।
অন্ধকার আর নিস্তব্ধতার বুক চিড়ে পাদ্রী সামান উপত্যকা অতিক্রম করে এগিয়ে চলল।রক্তের স্রোতে তার কালো পোশাক আর লম্বা দাড়ি ভিজে গেল, তবুও প্রচন্ড কষ্ট করে পাদ্রী সামনে এগিয়ে যেতে লাগল।তার ঠোট দুটো তখন কাঁপছে, সেই ঠোট বিড়বিড় করে প্রার্থনা করছে শয়তানের জীবনের জন্য!!!


♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦


আমার অনুবাদ করা কাহলিল জিবরানের আরো কিছু গল্পঃ

১.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের গল্প-১: The Field of Zaad
২.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের গল্প-২: The Eagle and the Skylark
৩.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের গল্প-৩: The King
৪.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের গল্প-৪: History and the Nation
৫.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের গল্প-৫: She Who Was Deaf
৬.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের গল্প-৬: Lady Ruth
৭.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের গল্প-৭: SATAN
৮.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের গল্প-৮: THE KING OF ARADUS
৯.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের দুইটি গল্প
১০.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের তিনটি গল্প-১
১১.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের তিনটি গল্প-২
১২.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের তিনটি গল্প-৩
১৩.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের তিনটি গল্প-৪
১৪.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের চারটি গল্প
১৫.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের পাঁচটি গল্প-১
১৬.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের পাঁচটি গল্প-২
১৭.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের পাঁচটি গল্প-৩
১৮.অনুবাদ গল্পঃ কাহলিল জিবরানের পাঁচটি গল্প-৪
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪০
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×