তো বেশ কিছুদিন হয়েছে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীর স্ত্রী স্বর্গ ভ্রমনে গেছেন।দেখেছেন স্বর্গ জুড়ে শুধুই ঘড়ি আর ঘড়ি।এই ঘড়িগুলো পৃথিবীর একেক দেশের তথ্যমন্ত্রির জন্য বরাদ্দ।যিনি যত বেশি মিথ্যা কথা বলেন তার ঘড়ির সময় তত এগিয়ে যায়।প্রতিটি মিথ্যা কথার জন্য সময় ১৫ মিনিট এগিয়ে যায়। আর তার স্বামী প্রতিনিয়ত মিথ্যা কথা বলেন, ফলে তার ঘড়ির কাটা ঘুরতে থাকে ফ্যানের মতই দ্রুত।
এই ঘটনা জানার পর তার মন একটু খারাপ হল।তাই তিনি এক দেবতাকে প্রশ্ন করলেন, ‘আচ্ছা, খালি কি তথ্যমন্ত্রীদের জন্যই ঘড়ি বরাদ্দ? বাকিদের জন্য ঘড়ি বরাদ্দ নেই?’
দেবতা জবাব দিলেন, ‘থাকবে না কেন? অবশ্যই আছে।তবে সেগুলো অন্য দেবতাদের জন্য।জিউসের এখানে খালি তথ্যমন্ত্রীদের ঘড়িই আছে।’
‘আচ্ছা বাকি মন্ত্রীদের ঘড়িতেও কি সময় এগিয়ে যায়?’
‘জানি না।’
‘জানেন না মানে? আপনার জন্য কোন ঘড়ি দেয়া হয় নাই?’
দেবতা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, ‘আরে না।আমি হইলাম যাকে বলে পাতি দেবতা। পাতি নেতারা পৃথিবীতে যেমন বড় বড় নেতার পিছে ঘুরতে থাকে, আমি তেমনি বড় বড় দেবতাদের পিছে স্বর্গে ঘুরতে থাকি।’
মহিলা জিহ্বা দিয়ে চুকচুক করে বললেন, ‘আহারে’। তারপর জানতে চাইলেন, ‘আমি কি বাকি দেবতাদের ঘড়িগুলো দেখতে পারব?’
দেবতা হেসে বললেন, ‘তারচেয়ে বলুন আপনি দেখতে চান আর কারো ঘড়ির সময় আপনার স্বামীর চেয়ে দ্রুত ঘোরে কিনা।’
মহিলা মাথা চুলকে বললেন, ‘না না কি যে বলেন’
দেবতা বললেন, ‘আপনার ঘড়ির সময় ১৫ মিনিট এগিয়ে গেল?’
মহিলা অবাক হয়ে বললেন, ‘আমার নামেও ঘড়ি বরাদ্দ আছে?’
দেবতা হেসে বললেন, ‘মশকারী করছিলাম।চলুন আমরা যুদ্ধদেবতা থরের ঘড়ির কালেকশান দেখতে যাই।’
০২.
মহিলা আর দেবতা থরের প্রাসাদের সামনে নামলেন।
‘চলুন ভিতরে ঢুকি’ দেবতা বললেন।
কিন্তু ভিতরে ঢুকেই দুজনের চক্ষু ছানাবড়া।প্রাসাদ থেকে ধোয়া উঠছে, জিনিসপাতি চারদিকে ছড়ানো, দেয়াল ধ্বসে পড়েছে। মনে হচ্ছে স্বর্গে দেবতার প্রাসাদে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
‘এ কি’ মহিলা অবাক হলেন।
‘আমিও কিছু বুঝতে পারছি না’ দেবতা চিন্তিত।
এমন সময় তারা দেখলেন দেবতা থরকে স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে।দ্রুত দুজন ছুটে গেলেন সেদিকে।
দেবতা জানতে চাইলেন, ‘মহামান্য থর আপনার এ অবস্থা হল কি করে?’
থর বহু কষ্টে জবাব দিলেন, ‘আর বলিস না। জিউসের টেবিল ফ্যান দেখে লোভ হয়েছিল।তাই ভাবলাম আমিও কোন বাংলাদেশী পলিটিশিয়ানের ঘড়ি নিজের টেবিল ফ্যান হিসেবে ইউজ করি।’
‘তো?’
‘এনেছিলাম সাহারা খাতুনের ঘড়িটা। এতদিন তাও ভাল সার্ভিস দিয়েছিল। কিন্তু আজকে বেটি যেই পত্রিকায় একটা মন্তব্য দিল সাথে সাথে ঘড়ির সময় ইনফাইনাইট পরিমান আগায় গিয়ে শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরন ঘটায় ফেলছে।’
‘পত্রিকায় কি কমেন্ট করছে সাহারা?’
‘২০১০ সালের তুলনায় ২০১১ সালে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।’
=============================================
অনেককাল আগে একটা গল্প পোস্ট করেছিলাম। তথ্যমন্ত্রীর ঘড়ি।ওই গল্পটা মৌলিক ছিল না। একটা শোনা গল্পকে নিজের মত করে লিখেছিলাম। এই গল্পটা তারই পরবর্তী পর্ব। তবে এটা মৌলিক গল্প। দুটোই পরিপূর্ণ গল্প।আশা করছি পাঠকের ভাল লাগবে।
=============================================
অন্যান্য রম্য গল্পসমূহঃ
টিভি অথবা একজন নোয়াখাইল্যার গল্প
হাসিনা-খালেদা-এরশাদের স্বর্গযাত্রা
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৫৭