অসামান্য প্রতিভাবান কবি কাজী নজরুল ইসলাম যখন ইসলামি হামদ , নাত , গজল রচনা শুরু করলেন , তখনকার একটি ঘটনা । শিল্পী আব্বাসউদ্দিন একদিন অনকে খোজাখুজি করে নজরুলকে না পেয়ে সকালে তার বাসায় গেলেন । বাসায় গিয়ে দেখলেন নজরুল গভীর মনোযোগ দিয়ে কি যেন লিখছেন । নজরুল ইশারায় আব্বাসউদ্দিনকে বসতে বললেন । আব্বাস উদ্দিন অনকেক্ষন বসে থাকার পর জোহরের নামাজের সময় হলে তিনি উসখুস করতে লাগলেন ।
নজরুল বললেন “কি তাড়া আছে , যেতে হবে ? ”
আব্বাসউদ্দিন বললেন “ঠিক তাড়া নেই, তবে আমার জোহরের নামাজ পড়তে হবে । আর এসেছি একটা ইসলামি গজল নেবার জন্য । গজল না নিয়ে আজ যাওয়া হচ্ছে না” । [ নজরুলকে যেহেতু বাউন্ডেলে স্বভাবের কারনে পাওয়া যেত না , তাই সবাই এইভাবে লেখা আদায় করত ]
নামাজ পড়ার কথা শুনে নজরুল তাড়াতাড়ি একটি পরিস্কার চাদর তার ঘরের আলমারি থেকে বের করে বিছিয়ে দিলেন । এরপর আব্বাস উদ্দিন যথারীতি জোহেরর নামাজ শেষ করার সাথে সাথে নজরুল আব্বাসউদ্দিনের হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন “এই নাও তোমার গজল” ।
আব্বাস উদ্দিন বিস্ময়ের সাথে দেখলেন তার নামাজ পড়তে যে সময় লেগেছে ঠিক সেই সময়ের মধ্যে নজরুল সম্পুর্ণ একটি নতুন গজল লিখে ফেলেছেন। নীচে গজলটি দেয়া হলো :
হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ
দিলাম তোমার চরণ তলে হ্রদয় জায়নামাজ
আমি গোনাহগার বে-খবর
নামাজ পড়ার নাই অবসর
তব, চরণ-ছোওয়ার এই পাপীরে কর সরফরাজ । ।
হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ । ।
তোমার অজুর পানি মোছ আমার পিরহান দিয়ে
আমার এই ঘর হউক মসজিদ তোমার পরশ নিয়ে ;
যে শয়তান ফন্দিতে ভাই
খোদার ডাকার সময় না পাই
সেই শয়তান থাক দূরে (শুনে ) তকবীরের আওয়াজ ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১২ রাত ১২:৪০