আজকের পোস্ট শুরু হবে একটা লাখ টাকার প্রশ্ন দিয়ে। বলুনতো, মাইনাস উঠে যাওয়ার পর সামুতে সবচেয়ে বেশী কি বেড়েছে আর সামু কি হারিয়েছে?
আপনাদের কষ্ট করে ভাবার দরকার নেই। আমিই বলে দিচ্ছি।মাইনাস উঠে যাওয়ার পর সামুতে সবচেয়ে বেশী বেড়েছে আবাল ব্লগার ও তাদের গুপ্তকেশ ভরা পোস্টের সংখ্যা।যারা মাইনাস থাকার সময় সামুকে দেখেছেন তারা নিঃসন্দেহে স্বীকার করবেন, মাইনাস উঠিয়ে দেয়ার পর সামুতে লিঙ্ক পোস্ট, রিপোস্ট, কপিপেস্ট এবং পোস্ট ফ্লাডিং এত বেশী বেড়ে গেছে, কষ্ট করে একটা পোস্ট তৈরী করলে তা প্রথম পাতায় ১০ মিনিট থাকবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নাই। একটা পোস্ট দেয়ার পর দোয়া দরূদ পড়তে হয় যাতে বেশী সময় পোস্টটা প্রথম পাতায় থাকে।
সামু বাংলা ভাষার সর্ববৃহৎ ব্লগ। আমার জানামতে সামুর ব্লগার সংখ্যা সম্ভবত ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। সুতরাং অন্যান্য ব্লগের তুলনায় সামুতে পোস্ট অবশ্যই বেশী হবে এবং পোস্ট লটকানো না হলে তা কম সময়ই প্রথম পাতায় থাকবে (অন্যান্য ব্লগে একটা পোস্ট যতটুকু সময় প্রথম পাতায় থাকে সেই তুলনায়), এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।কিন্তু তাই বলে ২০ মিনিটও একটা পোস্ট প্রথম পাতায় থাকবে না- এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
কেন এই ঘটনা ঘটল?
কারণগুলো আমাদের কারোরই অজানা নয়। মাইনাস উঠিয়ে দেয়ার পর কতৃপক্ষের যুক্তি ছিল মাইনাস দেয়ার ফলে একজন নতুন ব্লগার নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন,ব্লগিং-এ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু তারা এটা বলতে ভুলে গিয়েছিলেন উপযুক্ত পোস্টে প্লাসও দেয়া হয় এবং এর ফলে ব্লগাররা যথেষ্ট উৎসাহ বোধ করেন।
স্বাভাবিকভাবেই ব্লগারদের প্রশ্ন ছিল তাহলে কিভাবে তারা আজেবাজে পোস্টের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে?
সামু কতৃপক্ষের জবাব ছিল পোস্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা। কিন্তু সব পোস্টতো রিপোর্ট করার মত নয়। যেমন আজকের পরিস্থিতি। ব্লগার অ্যাঙ্গেল বয় নামে জনৈক ব্লগারের হঠাত হঠাত প্রসব বেদনা ওঠে এবং তিনি তীব্র গতিতে পোস্ট প্রসব করা শুরু করেন।যেমন আজকে বিকালে তীব্র প্রসব বেদনা ওঠায় মাত্র ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট সময়ে তিনি পোস্ট প্রসব করেছেন ৬ টি। সমস্যা হল তার সবগুলো পোস্টই কপি পেস্ট এবং তিনি কেবল পোস্ট দিয়েই তার দায়িত্ব সমাপ্ত করছেন। কোন কমেন্টের জবাব তিনি দিচ্ছেন না।
এর আগে ২৩ অক্টোবর রাতেও মারাত্মক প্রসব বেদনা ওঠায় তিনি মাত্র ১ ঘন্টা ২৭ মিনিটে তিনি পোস্ট প্রসব করেছিলেন ৭ টি।মাত্র ৪ মাস ৪ সপ্তাহ অর্থাৎ সর্বোচ্চ ১৪৮ দিনে তিনি পোস্ট প্রসব করেছেন ১৫২টি যেখানে তিনি মোট কমেন্ট করেছেন এর অর্ধেকেরও কম, মাত্র ৭০ টি।দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন প্রসব বেদনা না ওঠা সত্ত্বেও গড়ে তিনি প্রতিদিন ১ টির বেশী পোস্ট দিয়েছেন।
জুলাই মাসে ব্লগিং শুরু করার পর জুলাই মাসে তিনি পোস্ট দিয়েছেন ১টি, আগস্ট মাসে কোন পোস্ট দেননি। এরপরই শুরু হল তার প্রসব বেদনা। ফলে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর তিনি প্রসব করলেন যথাক্রমে ৬৬ ও ৬৩ টি পোস্ট। এই মাসে তার এখন পর্যন্ত ডেলিভারী ২০টি পোস্ট। প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার পর সম্ভবত এই মাসেই তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরী মিস হয়ে যাচ্ছে, এই ভয় থেকেই মনে হয় আজ থেকে তিনি আবার নতুন করে পোস্টানো শুরু করেছেন।
এর আগে ব্লগার আমি অমানুষ মাত্র ৫ ঘন্তায় ২৬টি পোস্ট দিয়ে রীতিমত সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। ভয়াবহ গদাম খাওয়ার পর তিনি থেমেছেন। একসময় ব্যাপক মাত্রায় ফ্লাডিং করা "প্লাগ এন্ড প্লে" ও এখন ফ্লাডিং থেকে সরে এসেছেন। কিন্তু অ্যাঙ্গেল বয় মনে হয় ডিফারেন্ট অ্যাঙ্গেল থেকে চিন্তা করেন বলে সাধারন ব্লগারদের মনের ভাব বুঝতে পারছেন না, ফলে সমানে ফ্লাডিং করে চলেছেন।
একই সমস্যা শুরু করেছেন ব্লগার বিদ্যুৎ বিশ্বাস। গত দুই মাসে এই ব্লগারও পোস্ট দিয়েছেন শখানেক।
সময় এসেছে এইসব ফ্লাডারকে গদাম দিয়ে থামানোর। সামুর প্রথম পাতার গুনগত মান ও সৌন্দর্য রক্ষায় এর কোন বিকল্প নাই।
ফ্লাডিং মুক্ত সামু চাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০২