প্রেমের শুরুও সময়টা বয়ঃসন্ধিকালের প্রথম মুহূর্তে ঘটে। যৌবন আগমনের প্রথম মুহূর্ত হচ্ছে বয়ঃসন্ধিকাল। যৌবনে প্রবশ করার সময় থেকেই প্রতিটি যুবক ও যুবতী জীবনের নতুন দরজা খোলার চাবি আবিষ্কার করার চেষ্টা করে। তাদের চিন্তা-ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু হয় প্রেম। ছেলে মেয়ের প্রতি এবং মেয়ে ছেলের প্রতি প্রচন্ডভাবে আকৃষ্ট হয়। জীবনের অর্থ, ন্যায় ও অন্যায় প্রেমের কাছে পরাজিত হয়। হৃদয়ের সবটুকু স্থান দখল করে নেয়। এ হচ্ছে যৌবনের প্রধান ধর্ম। যারা মন ও আবেগ দ্বারা পরিচালিত তারা খুব সহজে সরল মনে প্রেমের পথে বিপদে পড়তে বাধ্য। আর যারা বিবেক ও নিজের দ্বারা মন পরিচালিত (ভাগ্যের লিখন ব্যতীত), সঠিক সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে হতে বাধ্য।
ডা. লুৎফর রহমানের ‘প্রেম ও যৌবন’ প্রবন্ধের কতগুলো লাইন উল্লেখ করব। তিনি লিখেছেন ‘‘কাম জীবনকে উন্নত করে না- বাসনার তীব্র পিপাসা উত্তরোত্তর বেড়ে তাকে সর্বনাশের গভীর গুহায় টেনে নিয়ে যায়। প্রেম তাকে সংযমী এবং মহৎ করে। দুঃখের বিষয় যুবকেরা এই বয়সে প্রেমের নব উন্মাদনায় প্রায়ই পাপ পথে ধাবিত হয়-উন্মত্ত নারী সঙ্গ হতে বঞ্চিত থেকে এদেশে যুবকেরা প্রায়ই কুচরিত্রা রমণীর গৃহে আসা যাওয়া করতে থাকে। ফলে তার পতন ও সর্বনাশ আরম্ভ হয়। এই জন্য আমাদের দেশের লোকেরা প্রেমকে অতি ঘৃণার চোখে দেখেন। প্রেমের অর্থ তারা বোঝেন-বেশ্যালয়ে গমন, পাপ এবং ব্যভিচারের পথে বিচরণ।’’ দ্বিতীয় প্যারার শেষের দিকে লিখেছেন ‘‘যুবক-যুবতীকে বৈধ ও ভদ্রভাবে অভিভাবকদের দৃষ্টির সম্মুখে কেন মিশতে দেওয়া হয় না, তা বলা যায় না। নারীকে একেবারে যুবকের দৃষ্টি হতে গোপন করে রেখে, দেশের নৈতিক আরও দূষিত করা হবে না? গোপনে অভিসারের পথে কে বাধা দেবে? মানব জীবনে প্রেমের যে একটা অতি মহৎ সার্থকতা আছে, সাধারণ শ্রেণীর মানুষ তা অনুভব করে না।’’ তাঁর কথার সাথে যুবতী কথাটা যোগ করে লিখতে চাই। প্রেম মানুষকে সংযমী, চরিত্রবান, বলবান, সাধনায় দৃঢ়বান করে-যুবক যুবতীকে সংগ্রামশীল, মহৎ ও গৌরবশীল করে। প্রেম না করলে বিরাট বড় তি হবে এমন নয়। কোন দিন প্রেম, বেশ্যালয়ে গমন, পাপ এবং ব্যভিচার না করে বিয়ে করেছে এমন সংখ্যা অল্প হলেও আমাদের দেশে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:২৫