somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পর্দা একটি ইবাদত

২২ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্দা একটি ইবাদত, সালাত যেমন ইবাদত।এটি আল্লাহর নির্দেশ।বিষয়টি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণএবং সময়োপযোগী। আল্লাহ তাআলা কুরআনে মাজীদে এরশাদ করেন,” হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের স্ত্রীদেরকে বল, তারা যেন
তাদের জিলবাবের কিছু অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়। তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে।ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়াময়।” (সূরা আহযাবঃ ৬০)
বেপর্দা আর নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশা সমাজে কেমন বিরূপ পরিস্থিতির
সৃষ্টি করেছে এবং নারীকে কীভাবে ভোগ্য-পণ্যের বস্তুতে পরিণত করেছে তা আমরা আমাদের চারদিকে লক্ষ্য করলেই দেখতে পাই। পারিবারিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা, অশান্তি, দাম্পত্য-কলহ ও পারস্পরিক অবিশ্বাস, বিবাহ-বিচ্ছেদ, নারী- নির্যাতন ইত্যাদি সবকিছুর পেছনেই একটি প্রধান কারণ হলো পর্দাহীনতা এবং নর-নারীর অবাধ
মেলা-মেশা।যদিও ইসলামের পর্দা- ব্যবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞতা অথবা এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্যকে না বুঝার কারণে কেউ কেউ একে পশ্চাৎপদতা, সেকেলে, নারীকে শৃঙ্খলিতকরণের পন্থা, উন্নয়নের অন্তরায় এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে একটি বৈষম্য
সৃষ্টির প্রয়াস বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। মূলতঃ এই ভুল বুঝাবুঝির জন্য মুসলিম বিশ্বের কতিপয় এলাকায় ইসলামের সত্যিকার শিক্ষার অপপ্রয়োগ আর পাশ্চাত্য গণমাধ্যমের নেতিবাচক ভূমিকাই দায়ী। পাশ্চাত্য গণমাধ্যমের এটা একটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, ইসলামের কথা উঠলেই তার প্রতি একটা কুৎসিৎ আচরণ প্রদর্শন করা হয়। আর তাদের এই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে আমাদের এই অঞ্চলেও অনেকে পর্দাপ্রথা সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পোষণ করে থাকেন। একজন খ্রীষ্টান ‘নান’ বা ধর্মজাজিকা যখন লম্বা গাউন আর মাথা-ঢাকা পোশাক পড়ে থাকেন তখন তা আর পশ্চাৎপদতা, উন্নয়নের অন্তরায় বা নারীকে শৃঙ্খলিতকরণের প্রয়াস বলে বিবেচিত হয় না। বরং তা শ্রদ্ধা, ভক্তি বা মাতৃত্বের প্রতীক রূপেই বিবেচিত হয়। অতএব, ইসলামের পর্দা-ব্যবস্থা নারীকে শৃঙ্খলিত করার পরিবর্তে তাঁকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে, সমাজে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ- ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছে। ইসলাম নারীকে কিরূপ আসনে অধিষ্ঠিত
করেছে বা পর্দাপ্রথা নারীকে কী মর্যাদা দিয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে আসুন আমরা দেখি, তথাকথিত প্রগতি, নারী-স্বাধীনতা, নারী-পুরুষের অবাধ
মেলামেশা সমাজকে বা নারীকে কী দান করেছে। বর্তমান যুগে, বিশেষত পাশ্চাত্য- বিশ্বে নারীকে তাঁর নিজের ভাগ্যনিয়ন্তা রূপে আখ্যায়িত করা হয়। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সাথে তাল-মিলিয়ে এবং অনেক ক্ষেত্রে নারীকে পুরুষের তুলনায় অধিকতর যোগ্য বা efficient বলেও চিহ্নিত করা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সত্যিই কি নারী লিঙ্গ-বৈষম্যকে অতিক্রম করে পুরুষের সমান মর্যাদা লাভ করতে পেরেছে?
‘কলঙ্কময় অতীতের’ নিগ্রহ ও দমন-নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেয়েছে? তথাকথিত নারী-
স্বাধীনতা কি নৈতিকতা সম্বৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ একটি নতুন সমাজ-ব্যবস্থার ইঙ্গিত প্রদান করে? সত্যিই কি নারী প্রকৃত সামাজিক ন্যায়- বিচার লাভে সমর্থ হয়েছে? আমরা যদি বর্তমান
পাশ্চাত্য-সমাজের দিকে তাকাই তাহলে এর উত্তর হবে : ‘না’. অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারী তাঁর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হলেও পাশ্চাত্যের সমাজ-ব্যবস্থা আজ এক ভয়াবহ সঙ্কটের সম্মুখীন। তাই এককালের ‘সেকেলে’ বা ‘out dated family concept’ বা পারিবারিক প্রথা নিয়ে সমাজবিজ্ঞানীগণ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। নারী-নির্যাতন, শিশুহত্যা, পতিতাবৃত্তি, ধর্ষণ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, লিভিংটুগেদার, মাদকাসক্তি, কুমারী-মাতৃত্ব বা single mother, ইত্যাদি সমস্যা আজ পাশ্চাত্য-সমাজকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। কেবল পাশ্চাত্য বা উন্নত বিশ্বই নয়, আজ আমাদের সমাজেও এ-সকল ব্যাধির ক্রমশ সংক্রমন ঘটছে। বাহ্যিক চাকচিক্য আর উন্নতির খোলস ভেদ করতে পারলেই আমরা সেই অন্তর্নিহিত সমস্যা গুলো দেখতে পাই। প্রচলিত সাধারণ ধারণায় বিংশ শতাব্দি, বিশেষ করে দ্বিতীয়-বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময় থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত সময়কে নারী স্বাধীনতার স্বর্ণযুগ বলে আখ্যায়িত করা হলেও এক সমীক্ষায় দেখা যায় যে, এই সময়ে বিশ্বে নারী-নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা পঁচিশ ভাগ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫৫
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×