রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপুকে আটক করা হয়েছে। রাজপারা থানা পুলিশ আজ বিকেল সাড়ে ৬টায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আটক করে। থানা সূত্রে জানা গেছে, রাবি শাখা সভাপতিকেও খোঁজা হচ্ছে। এর আগে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের
দুগ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন গুলিবিদ্ধসহ উভয় গ্রুপের ১০ কর্মী আহত হয়। সভাপতি আওয়াল কবির জয় গ্রুপের আহত কর্মীরা হলো মেহেদী, ডিলস, পলাশ, শাকিব, শরিফ, নাহিদ ও সালাম। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ শাকিব ও মেহেদীর অবস্থা গুরুতর। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু গ্রুপের আহত কর্মীরা হলো আজিজ, ফারদিন ও তানিম। ঘারে কোপ লাগায় ফারদিনের অবস্থাও গুরুতর। আহতদের নগরীর বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আজ শনিবার দুপুর ২টার সময় রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু তার কর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসের টুকিটাকি চত্বরে বসে ছিল। সভাপতি গ্রুপের কর্মী আরিফ, নয়ন, রকি ও আমিনও সেখানে উপস্থিত ছিল। সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মী ফারদিনের সঙ্গে সভাপতি গ্রুপের কর্মীদের কথা কটাকাটির এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
এর প্রেক্ষিতে সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা রামদা, হকিস্টিক, লোহার রড ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপুর সামনেই তার গ্রুপের কর্মী আজিজ, ফারদিন ও তানিমের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর আহত করে। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এরপর সেখান থেকে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে সশস্ত্র অবস্থান নেয়। সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে রিভলবার, চাইনিজ কুড়াল, রামদা ও দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সোহরাওয়ার্দী হলে হামলা চালায়। এ সময় জয় গ্রুপের কর্মী আরিফ, মোস্তফা ও অপু গ্রুপের কর্মী তানিমের হাতে রিভলবার দেখতে পাওয়া যায়।
সেখানে তারা মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে প্রায় ২০ রাউন্ড গুলি চালায়। অপু গ্রুপের কর্মীর গুলিতে জয় গ্রুপের শাকিবের দুহাতে ও মেহেদীর পিঠে গুলি লাগে। তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে রিভলবারসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র থাকলেও ও ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হলেও ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও অস্ত্রধারীদের কাউকে আটক করা হয়নি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কেউই সে সময় উপস্থিত ছিলেন না।
মতিহার থানার ওসি আবুল খায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে তেমন কোনো অস্ত্র দেখতে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হলে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র মজুদ আছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাবি প্রক্টর চৌধুরী মোহম্মদ জাকারিয়া বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি জানান, সংঘর্ষের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
পুরো ঘটনার জেরে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।