মগজ ধোলাই কথাটির সাথে অনেকের পরিচয় থাকলেও এর প্রকৃতি, পরিধি ও প্রাঙ্গণ সম্বন্ধে অধিকাংশ সাধারণ মানুষেরই কোনো ধারণা নেই। ‘খোলা মাঠে তলোয়ার ঘোরানো’র কথা আমরা শুনেছি এবং তার অর্থ কী তাও আমরা বুঝতে পারি। তবে ‘মগজ ধোলাই’ বিষয়টা অস্পষ্ট এবং কে কাকে টার্গেট করে বাধাহীনভাবে মগজ ধোলাই করছে তাও পরিষ্কার না। ইংরেজিতে এই মগজ ধোলাইয়ের কার্যক্রম অনেক নামে পরিচিত ; যেমন- ব্রেইন ওয়াশ, মাইন্ড কন্ট্রোল, আইডলজিকাল সাবভারশান, অ্যাকটিভ মেজার কিংবা সাইকলজিকাল ওয়ারফেয়ার। নাম যাই হোক, কাজ কিন্তু এক, লক্ষ্য (টার্গেট) জনগোষ্ঠীকে তাদের ঐতিহ্যবাহী বিশ্বাস, কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও আচরণমূলক উপলব্ধিসমূহ থেকে সরানো এবং মৌল বিশ্বাসগুলোর পরিবর্তন করে পরিকল্পিতভাবে ওইসব ক্ষেত্রে নতুন উপলব্ধি প্রবেশ করানো।
বিষয়টি সাধারণের ধরা ছোঁয়ার বাইরে বলে বুঝতে সমস্যা। এ বিষয়ে সবচেয়ে দক্ষ জাতি হচ্ছে ইহুদিরা। ওরা হলো মগজ ধোলাইয়ের ওস্তাদ। ওদের আছে শক্তিশালী মিডিয়া, অত্যন্ত দক্ষ গোয়েন্দা বাহিনী আর আছে বিভিন্ন প্রকার আন্তর্জাতিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান ; যেমন- বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা - এমন আরো অনেক।
সার্বিকভাবে এই বিষয়ে গভীর জ্ঞান ও প্রায়োগিক দক্ষতা সম্পূর্ণটাই আছে অমুসলিম দেশসমূহের হাতে। “অন্তর্দৃষ্টি-দূরদৃষ্টিহীন এবং একই সঙ্গে প্রজ্ঞাহীন মুসলমান নেতৃবৃন্দদেরকে মগজ ধোলাই সম্বন্ধে ভ্রান্ত ধারণা দেয়া যতখানি সহজ, এ বিষয়ে সঠিক উপলব্ধি ঘটানো ততখানিই কঠিন।”
চরিত্র ধ্বংসের মাধ্যমে একটি জাতিকে যদি ধ্বংস করা যায় তবে যুদ্ধের কী প্রয়োজন? আর এই চরিত্র ধ্বংস প্রক্রিয়ার সর্বশেষ যে সংস্করণ তা হচ্ছে- ‘ব্যাটেল অফ মাইন্ড।’ যা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবন্দের চেতনা বহির্ভূত একটি বিষয় তাই আলোচনার নামকরণ করা হয়েছে ‘খোলা মাঠে মগজ ধোলাই।’
নিত্যনতুন চালু করা বিশ্ব দিবসসমূহ ; যেমন- মা দিবস, বাবা দিবস, শ্রমিক দিবস, প্রেম (ভ্যালেন্টাইন) দিবসসহ সকল প্রকার খেলাধুলার বিশ্বকাপ - সবই হচ্ছে বিশ্বায়নের সূক্ষ্ম পরিকল্পনার এক আনন্দ ঘন বহিঃপ্রকাশ। আমাদের স্বাধীনতা/ বিজয় দিবসে (২৬ মার্চ/ ১৬ ডিসেম্বর) যত জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয় তার চেয়ে সহস্রগুণ বেশি ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা কিংবা জার্মানির পতাকা এদেশের মানুষ উত্তোলন করে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার সময়। যেখানে আমেরিকার মতো দেশের মানুষরা বুঝতে পারে না যে, বিশ্বায়ন হচ্ছে মূলত ইহুদিআয়ন, সেখানে বাংলাদেশিরা তা বুঝতে পারবে ধারণা করাটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একজন চিন্তাশীল দেশপ্রেমিকের জন্য এ এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির ঘনঘটা।
বড় বড় সম্মানজনক পুরস্কারসমূহও ওই ‘মগজ ধোলাই’ প্রক্রিয়ারই অংশ বিশেষ। তসলিমা নাসরিনকে মগজ ধোলাইয়ের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার পূর্বে কলকাতা থেকে ‘আনন্দ পুরস্কার’; সালমান রুশদীকে দিয়ে ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রচার করার পূর্বে লন্ডন থেকে ‘বুকার্স প্রাইজ’, চীনকে চাপের মুখে রাখতে দালাইলামা এবং মায়ানমারকে চাপের মধ্যে রাখতে আনসান সুকিকে নোবেল প্রাইজ দেয়া হয়। আমাদের দেশে হারাম “সুদের রাজা” ইউনূসকে নোবেল প্রাইজ, সোভিয়েত ইউনিয়নের ধ্বংসের পূর্বে আলেকজান্ডার সলজোনিকসন এবং গর্ভাচেবকে নোবেল প্রাইজসহ সর্বশেষে চরম যুদ্ধবাজ ওবামাকে দেয়া হয়েছে নোবেল শান্তি পুরস্কার। ধারণা করা যায় পতনোন্মুখ আমেরিকার সময় হয়তো শেষ হয়ে এসেছে।
মগজ ধোলাইয়ের প্রক্রিয়া যেসব সেক্টর দিয়ে কাজ করে সেগুলো হচ্ছে, গোয়েন্দাবাহিনী, প্রিন্ট/ ভারচুয়াল মিডিয়া (সিনেমা, টিভি), সাইবার স্পেস, ইন্টারনেটের বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল, ব্লগ এবং আন্তর্জাতিক চ্যাটরুম-প্যালটক, শিক্ষা ব্যবস্থা, জুডিশিয়ারি, সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপন।
‘মগজ ধোলাই’ মানুষের অন্তরে কতটুকু প্রভাব বিস্তার করতে পারে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে, চাইনিজ এক বালক আইফোন ক্রয় করার জন্য নিজের কিডনী বিক্রয় করে দেয়।
সূত্র: Click This Link
বিজ্ঞাপনের নামে মগজ ধোলাই কোন পর্যায়ে গেলে একজন মানুষ এহেন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যেমন, বাংলাদেশি মায়েরা টিভিতে ভারতীয় সিরিয়াল দেখে বাচ্চার দুধ কয়েকদিন পরে ক্রয় করে যাতে ভারতীয় বিশেষ ধরনের শাড়িটি দোকানে শেষ হওয়ার পূর্বেই কিনে নিতে পারে। চাইনিজ মুভির হিন্দি ভার্সন- ‘ডোরেমন’ কার্টুন দেখে আমাদের বাচ্চারা এখন হিন্দিতে কথা বলছে। প্রতিবেশী ভারত প্রায় শতাধিক স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে আমাদের দেশে ‘বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক’ ও ‘বিবাহবিচ্ছেদে’র মতো ঘটনাসংবলিত সিরিয়ালের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। অথচ সেই ভারত পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদের জন্য বাংলাদেশী টিভি চ্যানেলসমূহ হারাম ঘোষণা করেছে। এর মনস্তাত্ত্বিক কারণটা কী হতে পারে? সূত্র: Click This Link
মুসলমানদের মধ্য থেকে নাস্তিক তৈরি করতে হলে প্রথমে তাদের মধ্য থেকেই এমন একটি দল তৈরি করতে হবে যারা নির্বিচারে ধর্মের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা করবে। তখন সাধারণ মুসলমানদেরকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে নাস্তিকতার দিকে ধাবিত করা যাবে। আজকের দিনের ওহাবি, সালাফি, লা-মাযহাবি, আহলে হাদীস কিংবা জেএমবি ওই বিভ্রান্ত দলেরই বিভিন্ন নাম। গত দুই দশক ধরে সউদী ওহাবি রাজার মাধ্যমে শুরুতে লোক চক্ষুর অন্তরালে এবং পরবর্তীতে দিনের আলোতেই এই মগজ ধোলাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। ইহুদিদের গবেষণায় প্রমাণিত যে, “একজন স্বল্প জ্ঞানের মুসলমানকে ধর্মান্ধ করা অনেক সহজ, নাস্তিক করার চেয়ে।” নরওয়ের চরম ইসলাম বিদ্বেষী যুবক ব্রেইভিক তার ঐ ঘৃণাকে পৃথিবীর মানুষকে জানাতে স্বগোত্রীয় ৭৬ জন নিরীহ নারী/ পুরুষকে হত্যা করে। ঐ নরওয়েরই অপর এক যুবক অরিন্ড ক্লকারহগ বাংলাদেশী এক মেয়েকে বিয়ে করে “সামহয়্যার ইন ব্লগ” নামে এক ব্লগ খুলে প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছে। উদ্দেশ্য, সে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশীদের ভালবাসে (?)
তার ব্লগ এ পর্যন্ত ব্যাপকভাবে অবৈধ যৌনতা ও নাস্তিকতা প্রচার করা ছাড়াও পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অরাজকতা সৃষ্টি এবং সে সব প্রতিষ্ঠানের মান মর্যাদা ধ্বংসে লিপ্ত। প্রথমে তাদের আক্রমণের প্রতিষ্ঠানটি ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, তারপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ; সর্বশেষে তাদের আক্রমণ বর্তমানে চালু আছে ধানমন্ডির ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-এর ওপর। তাছাড়াও সাতক্ষীরাতে সংঘটিত একটি স্থানীয় ঘটনাকে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার বলে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে ঢাকাতেও তার প্রতিফলন ঘটানো হয়। একবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ, অশোভন, নগ্ন এবং ব্যঙ্গাত্মক এক লেখা ওই ব্লগে ছাপানো হয়, যা ছিলো চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ ও অমার্জনীয় অপরাধ। তা ছিলো বাকস্বাধীনতার এক নগ্ন অপপ্রয়োগ। দলীয় নিবেদিত কর্মীদের জন্য নেত্রীর এহেন অবমাননা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে যে কোনো মুহূর্তে।
আর ব্লগের সব অপরাধীই ক্ষমার যোগ্য নয়। এ ধরনের বেশ কয়েকটি বাংলা ব্লগ আছে যা বাকস্বাধীনতার নামে সরাসরি দেশদ্রোহী কাজে লিপ্ত। অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে, এ ধরনের দেশদ্রোহী ব্লগ অমুসলিম কোন দেশে দেখা যাবে না।
চরম মদ্যপ এবং নারী ভোগী ইয়াহিয়া ১৯৭১ সালে যাদের পরামর্শে তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তাদের পরামর্শেই সাদ্দাম হোসেন কুয়েত আক্রমণ করে নিজ দেশকে ধ্বংস করে। আজ পৃথিবীর সকল মুসলিম দেশ শত্রুও মনস্তাত্ত্বিক আক্রমণের উপযুক্ত ক্ষেত্র (টার্গেট)। খোলা মাঠে তলোয়ার ঘোরানোর মতোই সহজ কাজ। কারণ অধিকাংশ মুসলমান নেতানেতৃরা তাদের দীর্ঘ সময়ের পাঁতানো ফাঁদে আটকানো আর মুসলমান দেশের গোয়েন্দা বাহিনী ক্ষেত্র বিশেষে শত্রুর মগজ ধোলাই কার্যক্রমে সহায়তা করে থাকে। ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফেল কোরি তাঁর দেশের গোয়েন্দা প্রধান এবং তার সাথে আরো কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেন শুধুমাত্র দেশকে আমেরিকার প্রভাব থেকে মুক্ত করার জন্য। সূত্র: Click This Link
মুসলিম দেশের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ নেতাদের সাথে ইহুদি-নাসারাদের যুবতীদের বিবাহ ওই মগজ ধোলাইয়ের সুগভীর এক দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ। বিশ্বকাপ ক্রিকেট জয়ের পর পাকিস্তান দলের ক্যাপ্টেন অবিবাহিত ইমরান খানের জনপ্রিয়তা যখন তুঙ্গে এবং নির্বাচনে যে কোনো সময় প্রেসিডেন্ট কিংবা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা, তখনই সে আক্রান্ত হয় ইংল্যান্ডের ইহুদি কোটিপতির মেয়ে জেমিমা দ্বারা। বিবাহ, সংসার, সন্তান-সন্তুতি হওয়ার পরও যখন তার নেতা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা গেলো না, তখন জেমিমা তাকে ছেড়ে দেয়।
মুসলমান দেশসমূহের শিক্ষাব্যবস্থা হচ্ছে শত্রুর মগজ ধোলাইয়ের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। সকল স্তরের শিক্ষার কারিকুলাম থেকে নৈতিক শিক্ষা সেই স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই পরিকল্পিতভাবে পর্যায়ক্রমে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বেশিরভাগ ছাত্রই লেখাপড়া শেষে হয়ে ওঠে এক একজন উদীয়মান নীতিবির্বজিত দুর্নীতিবাজ। নৈতিকতা, সততা কিংবা দেশপ্রেম তাদের কাছে ডাইনসরে মতোই একটি প্রাগৈতিহাসিক বিষয়, যা কখনই বাস্তবে প্রযোজ্য নয়। এহেন মানসিকতার কর্মীবাহিনী নিয়ে কীভাবে একটি দেশ বা জাতি টিকে থাকতে পারে? একটি জাতিকে নীতি বিবর্জিত করাটা শত্রুর মগজ ধোলাই কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য। এখানে লক্ষণীয় যে, পৃথিবীর সকল মুসলমান দেশের রাজনীতিবিদ কিংবা প্রশাসনে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের নৈতিকতা অমুসলিম দেশগুলোর মানুষের চেয়ে অনেক খারাপ এবং নিম্নমানের। আর একমাত্র এই কারণেই অধিকাংশ অমুসলিম দেশ প্রথম বিশ্ব আর মুসলিম দেশসমূহ তৃতীয় বিশ্ব।
আক্রমণাত্মক মগজ ধোলাই কার্যক্রম পরিচালনা কিংবা তা প্রতিহত করা, কোনোটাই ব্যক্তি পর্যায়ে সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ আর ওই প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে জাতীয় সরকার। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে- প্রতিটা মুসলমান দেশের সরকার শত্রুর মগজ ধোলাই আক্রমণ প্রতিহত করা তো অনেক দূরের কথা, তারা ওই আক্রমণের প্রকৃতি, ব্যাপকতা, সর্বোপরি এই যুদ্ধের প্রাঙ্গণটা কোথায় সে বিষয়েও সম্পূর্ণ অজ্ঞ। এ এক অসম যুদ্ধ ; এক পক্ষের আছে অসীম দক্ষতা, অভিজ্ঞতা আর সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি আর অন্য পক্ষের এ যুদ্ধ সম্বন্ধে কোনো ধারণাই নেই।
ওই মগজ ধোলাইয়ের কারণেই অমুসলিম জগতের মানুষগুলো রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে পেশাগত সততা বজায় রাখলেও বিপরীত লিঙ্গের শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পশুত্বকে বরণ করে নেয়। (যেমন- আমেরিকার হলিউড মুভি এবং কেলিফোর্নিয়ার পর্নো ইন্ডাস্ট্রি)। ফলশ্রুতিতে বর্তমানে সেখানে চালু হয়েছে চরম ব্যভিচার, সমলিঙ্গে বিবাহ এবং এমন আরো অনেক ধরনের পশুসুলভ আচরণ। শুধুমাত্র এই একটি বিষয় যদি আমাদের নেতারা বুঝতে পারতেন, তবে দেশকে এগিয়ে নেয়া একটি সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াতো। একটি সমাজ, জাতি বা দেশের মানুষের মানসিকতা কখনই নিজে নিজে পরিবর্তিত হয় না। নেতারা এই বিষয়টা বুঝতে পারেন না বলেই বাংলাদেশিরা একবার ব্যাপক হারে বিএনপি আবার সেই জনগণই পরের বার ব্যাপক হারে আওয়ামীলীগকে ভোট দেয়।
এই মগজ ধোলাই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বঙ্গবন্ধুকে পরিবারসহ নির্মমভাবে শহীদ হতে হয়েছিল। বিষয়টি উল্লেখ করেছে বর্তমানে পৃথিবীতে তথাকথিত মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশারদ ইউরি ব্রেজমেনভ। সূত্র: Click This Link
বেঁচে থাকতে হলে এ বিষয়ে জ্ঞান আহরণ প্রয়োজন। অপর একটি দেশ বা জাতিকে ধ্বংস করতে নয় বরং নিজ জাতিকে রক্ষা করার জন্য। স্বাধীনতার গত ৪০ বছর গণতন্ত্র চর্চা করা হচ্ছে। কিন্তু সার্বক্ষণিক এক চরম উৎকণ্ঠা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে কালাতিপাত করতে হচ্ছে। অথচ পৃথিবীর সকল গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতিনিধিরা স্ব-উদ্যোগে আমাদের নেতাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছে এবং গণতন্ত্রের বুদ্ধি-পরামর্শ দিচ্ছে। তারাই ইরাক, মিশর এবং লিবিয়ার মতো দেশের জনগণকে স্বৈরশাসকদের হাত থেকে স্বাধীনতা দিতে শক্তি যোগাচ্ছে, আবার চরম অত্যাচারী সউদী রাজাকে সরবরাহ করছে কোটি কোটি টাকার অস্ত্র। বর্তমান যুগের মুসলমানরা কতটুকু মূর্খতার মধ্যে ডুবে আছে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে, তারা ইসলাম বলতে এখনও ওই সউদী রাজার সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে থাকে।
মহান আল্লাহ পাক আমাদের হিদায়েত দান করুন, অন্তর্দৃষ্টি, দূরদৃষ্টি ও প্রজ্ঞা দান করুন। এই নতুন ধরনের যুদ্ধ “ব্যাটেল অব মাইন্ড” অথবা “ব্যাটেল অব পারসেপশন” কী তা জানা এবং বোঝার যোগ্যতা দান করুন। আমীন।
লেখাটি প্রকাশিত হয় একটি দৈনিক পত্রিকায় লিংক এখানে
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১২ রাত ৯:১৬