ইসলামি জ্ঞান সম্পন্ন ও ভালো মুসলিমদের কাছে ইসলাম ধর্ম সংক্রান্ত কিছু তথ্য জানতে চাচ্ছি।
১। প্রতি বছর কত লক্ষ মুসলিম তীর্থযাত্রি কাবার সংলগ্ন হাজরে আসোয়াদ পাথরে চুমু খান তা হিসেবে আনলে সংখ্যাটা যে অর্ধ কোটির কাছাকাছি হবে তা নিশ্চিত। কিন্তু ক্যানো এই নিস্প্রান কালো পাথরে চুমু খাওয়া ? যে ধর্মে প্রতীক উপাসনার সকল ধরন নিষিদ্ধ ,যে ধর্মে চন্দ্র সুর্য গাছ পাথর পুজার মত প্রাক ইসলামি যুগের উপাসনার ধরনকে কঠোর ভাষায় নিষেধ করা হয়েছে এবং ঐ সব উপাসনা করা মুর্খতার শামিল হিসাবে আখ্যায়িত সেই ধর্মেই ক্যানো একটি বিশেষ আকৃতির প্রস্তর খন্ডকে পরম ভক্তিতে চুমু খাওয়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে?
২। একই ভাবে দেখা যাচ্ছে শয়তান এর প্রতীক তিনটি স্তম্ভ লক্ষ করে ঢিল ছোড়া হয় যেখানে ইসলাম ধর্মে মুর্তি পুজার বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে সেখানে প্রস্তর খন্ডকে শয়তানে প্রতীক হিসাবে ধরা ক্যানো পৌত্তলিকতার অংশ হবে না?
৩। আবু দার বর্নিত-" আমি বললাম, ও আল্লাহর রসুল, কোন্ মসজিদ সর্বপ্রথম তৈরী হয়েছিল? তিনি বললেন- মসজিদুল হারাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম- এর পর কোন্ টা ? তিনি উত্তর দিলেন- মসজিদুল আকসা। আমি জিজ্ঞেস করলাম- এদের মধ্যে কত সময় ব্যবধান ছিল ? তিনি উত্তর দিলেন- চল্লিশ বছর"।বুখারী, বই-৫৫, হাদিস-৬৩৬
উপরের হাদিস অনুসারে মসজিদুল আকসা বা সলোমনের টেম্পেল তৈরীর ৪০ বছর পুর্বে তৈরী হয় মক্কায় কাবা । আল আকসা মসজিদ তৈরি হয় সোলায়মান (আঃ) বা কিং সলোমনের হাতে। আর ইসলামি সোর্স অনুযায়ি কাবা তৈরি হয় ইব্রাহিম ও পুত্র ইসমায়েলের হাতে। এখন প্রশ্ন ঐতিহাসিক ভাবেই ইসমায়েল (আ ও সোলায়মান (আ এর মধ্যে ব্যাবধান কমপক্ষে ১,০০০ বছরে তাহলে ৪০ বছরে ব্যাবধানে ২ মসজিদ কিভাবে তৈরী হয়েছিলো? (আরও কাবার প্রতিস্টাতা হিসাবে বাবা আদমের নাম হিসাবে আনলেতো কোন কথাই নাই।)
তাহলে কোনটা সত্যি?
৪। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ি ইব্রাহিম (আঃ) শিশু পুত্র ইসমায়েল (আঃ) ও স্ত্রী হাজেরাকে মক্কা নগরে নির্বাসন দিয়েছিলেন। কেনান বা প্যালেস্টাইন থেকে মক্কার দুরত্ব আকাশ পথেই ১,০০০ মাইলের বেশি সেখানে বয়বৃদ্ধ ইব্রাহিম কিভাবে এদের নিয়ে ১,০০০ মাইল মরুভুমি পাড়ি দিলেন?
৫। স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করেছিলঃ পরওয়ারদেগার! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ। কোরান, ২:১২৭
তাহলে বাবা আদম প্রথম কাবা ঘর নির্মান করে সেখানে ইবাদত করতেন সেটা ভুল? এই কন্ট্রাডিকশন ক্যানো?
৬। কাবা ঘর আল্লাহ র ঘর হিসাবে অনাদি কাল থেকেই স্বীকৃত,খুব সুন্দর কথা। সেটা নিশ্চই নবী হিসাবে মোহাম্মদ (সাঃ) ও আল্লাহর নিজের খুব ভালো জানার কথা? তাই যদি হয় তাহলে ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত প্রাপ্তির পরেও ক্যানো জেরুজালেমের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করা হলো এবং মেরাজে গিয়ে নবী ৫ ওয়াক্ত নামাজ সহ এত কিছু আনলেন শুধু কাবার দিকে মুখ করে ইবাদতের পারমিশনটা আনতে মদীনায় যাওয়ার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো ক্যানো? এক কথায় নবুওত পাওয়ার পরেও দীর্ঘ দিন পর্যন্ত ঘরের সামনে আল্লাহর ঘর বাদ দিয়ে ক্যানো নও মুসলিমদের জেরুজালেমে আল আকসার দিকে মুখ করে ইবাদত করতে হলো?
৭। ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী কাবা ঘর পৃথিবীর কেন্দ্র স্থলে অবস্থিত (যদিও গোলকের আবার নিদৃস্ট কেন্দ্র কিভাবে হয় তা বোধের অগম্য) ।এবং কাবা ঘরের ঠিক সোজা উপরে ৭ম তথা শেষ বেহেস্তের বায়তুল মামুর অবস্থিত যেখানে প্রতি নিয়ত ৭০,০০০ ফিরিস্তা আল্লাহর কাছে মুনাজাত করে।
এখন পৃথিবী প্রতিদিন নিজ অক্ষে রেখায় একবার করে পাক খাচ্ছে, ও ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরে আসছে যার ফলে দিবা ও রাত্রী হয়। এখন পৃথিবী ঘুরার ফলে তার পৃষ্ঠে অবস্থিত কাবা ঘরের অবস্থানের অবশ্যই পরিবর্তন ঘটছে তাহলে কি তার সোজা উপরের অবস্থান করা বায়তুল মামুর সহ সব বেহেস্তো চরকির মত ঘুরছে নাকি অপরিবর্তিত থাকছে? আবার পৃথিবী ৩৬৫ দিনে একবার সুর্যের চারিদিকে ঘুরে আসছে সেক্ষেত্রে কাবা ঘরের সাথে অদৃশ্য ভাবে যুক্ত বেহেস্তি স্থাপনাগুলোর কি অবস্থান দাড়াচ্ছে?
নাকি খোদা ও তার নবী মোহাম্মদ (সাঃ) তাদের সময়ের অন্যান্য আরবদের মতই পৃথিবী স্থির বলে ভাবতেন?
অনুগ্রহ করে আমার অজ্ঞতা দূর করুন। ইসলাম সম্পর্কে জানার প্রবল আগ্রহ থেকে তখন আপনাদের অনুমুতি নিয়ে আরো কিছু প্রশ্ন করবো।