বাবা,
জানি এ চিঠি তুমি পড়তে পারছো না। নাকি পারছো? কেমন আছো তুমি? খুব জানতে ইচ্ছে করে। আজকাল বড্ড বেশী মিস করি তোমাকে। কতনা কষ্ট করেছ আমাদের জন্য। বিনিময়ে কী কিছুই দিতে পেরেছি তোমাকে? পারিনি। জানি, তুমিও কোন কিছু পাবার আশা করোনি আমাদের কাছে। বুক ভরা অভিমান নিয়ে তুমি চলে গেলে না ফেরার দেশে। তোমাকে যেদিন সাদা কাফন পরিয়ে নিয়ে গেছি, সেদিন অনেক কেঁদেছি। কেঁদে কেঁদে বুক ভাসিয়েছি। ওই কান্নাটুকু ছাড়া তোমাকে দেবার মতো কীই বা ছিল সেদিন। তোমার জন্য কান্নাটুকু আজো সম্বল বাবা। আজ আর তোমাকে দেখতে পাইনা। ভীষণ কর্পোরেট হয়ে গেছি আমরা। জীবন সংসার বড্ড বেশি অসহায় বাবা।
মৃত্যু শয্যায় তোমার যন্ত্রনাকীষ্ট মুখখানি দেখতে গিয়ে কতবার নিজের বুকে পাথর বেঁধে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছি সে কথা আজো মনে পড়ে বাবা। ক্যান্সার নামক ভয়ানক এক দানব হুঙ্কার দিয়ে তোমাকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিল। বুঝতাম, হয়তো মুখ থেকে বলতে পারতে না, আমার সন্তানরাই আমাকে বাঁচাবে। বাঁচার এই অদম্য ইচ্ছেটা বুঝতাম বাবা। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস, আল্লাহর ইচ্ছায় তুমি তাও হজম করতে পারলে না। তোমাকে বাঁচাতে পারিনি। কষ্ট লাগছে খুব বাবা, খুব কষ্ট। বুকের ভেতর কান্নাগুলো চেপে বেরিয়ে আসতে চাইছে। আর লিখতে পারছি না বাবা। ক্ষমা করে দিও।
বিশ্বাস করো বাবা, সেদিনই হয়তো শান্তি পাবো, যেদিন তোমার মতো তোমারই পাশে শুয়ে আমি বলতে পারবো, বাবা আমি তোমাকে ভালোবাসি, ভীষণ ভালোবাসি। আমাদের সবার জন্য দোয়া করিও।-