আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি:
পার্বত্য বান্দরবানের আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বিগত মাস খানেক ধরে। দু একটা ক্লাশের বেশি হচ্ছে না অত্র বিদ্যালয়ে। ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থী।
আলীকদম উপজেলাটি পার্বত্য বান্দরবানের একটি দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা। আর এই উপজেলার মধ্যে এটিই একমাত্র সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অত্র বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত আছে বাঙ্গালী আর উপজাতি মিলিয়ে প্রায় ৪৫০ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনই হুমকির মুখে বলে দাবি অনেকেরই।
গত ২০১২ সালের কয়েকজন পরিক্ষাথীর সাথে আলাপকালে তারা জানায়, আমাদের সময়ে নানান ধরণের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হত। যেমন বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ইংলিশ স্পিকিং, উপস্থিত বক্ত্রিতা, রচনা প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। যেটা ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশে চরম ভূমিকা রাখত। এমনকি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আমরা জেলাতে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হই। কিন্তু স্কুলের বর্তমান অবস্থা দেখে আমরা সত্যিই বিচলিত।
ততকালীন ইংরেজি শিক্ষক হিশাম আল মাহনাব থাকাকালিন সময়ে তিনি আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যথেষ্ট অবদান রাখেন। তিনিই সর্ব প্রথম অত্র বিদ্যালয়কে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসেন। স্কুলে ইংলিশ ক্লাব ও ডিবেটিং ক্লাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পার্বত্য বান্দরবানে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করতে সক্ষম হয়। এতে হিসাম আল মাহনাবের সাথে আরো গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখে লিটন কুমার ও সালাউদ্দিন কাদের সেলিম। কিন্তু তারা আলীকদমের ব্যক্তিদের রুশানলে পড়ে বেশিদিন থাকতে পারে নি। চলে যেতে হয়েছে তাদেরকেও।
এরপর অনেকদিন শৃংখলা হীনতায় ভূগে বিদ্যালয়টি। জহর কুমার সিংহ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন।পরবর্তীতে নতুন ইংরেজি শিক্ষক শাহরেজা বিপ্লব ও জহর কুমার সিংহের অকৃতিম প্রচেষ্টায় আবারো ফিরে আসে স্কুলের শৃংখলা। আশার আলো দেখে সম্পুণ আলীকদম। সর্বপ্রথম এসএসসিতে জিপিএ 5.00 ও জেএসসিতে পাঁচজন 5.00 পায়।
কিন্তু বর্তমানে আবারো শৃংখলা হীনতায় ভুগছে স্কুলটি। নিয়মিত ক্লাশ হয় না। এসএসসি ও জেএসসি পরিক্ষাথী ও অভিবাবকরা আশাহীন হয়ে পড়েছে।
এই ব্যাপারে অত্র বিদ্যালয়ে ইংরেজী শিক্ষক শাহরেজা বিপ্লব এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমার ক্লাশ আমি করি। কিন্তু অন্যান্ন স্যারেরে করে কিনা সেটা আমি অবগত নই। পরবতীতে তিনি অত্যান্ত খুব নিয়ে বলেন, আলীকদমের মানুশ কোন ভাল মানুশকেই সহ্য করতে পারে না। তাই স্কুলের আজ এই অবস্থা। তিনি আরো জানান, খুব শীঘ্রই তিনিও আলীকদম থেকে চলে যাবেন। এখন তিনি সেই প্রচেষ্টাই চালাচ্ছেন।
আলীকদমের কিছু বিজ্ঞমহল মনে করেন যে, এইভাবে চলতে থাকলে আলীকদমে শিক্ষার হার কমতে থাকবে। কারণ আলীকদমের অধিকাংশই দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। তাদের এই সামর্থ্য নেই যে তাদের ছেলে মেয়েদের বাহিরে পড়াবে। কিন্তু আলীকদমে থাকলেও তারা যথেষ্ট শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর জন্য সকলের কোন ভাল পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে তারা মনে করেন।
এইচ.আর.হিমন
আলীকদম উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাব
আলীকদম, বান্দরবান।