পূর্বসূত্রিতা : “The world is running out of antibiotics...” এন্টিবায়োটিকের কথা। “The world is running out of antibiotics...”
[ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে ইউনিসেফ পর্যন্ত আতঙ্ক প্রকাশ করে সাবধানবাণী দিয়েছেন এই বলে, “The world is running out of antibiotics...”। তারা বলছেন, অনুজীব ধংসকারী( এন্টিমাইক্রোবিয়ালস) ঔষধের যথেচ্ছ আর অপব্যবহারের কারনে যক্ষা, নিউমোনিয়া সহ মূত্রতন্ত্রের রোগ, খাদ্যের বিষক্রিয়া, যৌনরোগ, পানি ও খাদ্যবাহিত রোগ, হাসপাতাল থেকে সংক্রমিত রোগ ইত্যাদি জীবন সংহারী রোগগুলোর বিরূদ্ধে মানুষের হাতের অস্ত্র মানে এন্টিমাইক্রোবিয়ালসগুলো দিনে দিনে ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে। যে হারে অনুজীবগুলি বিশেষ করে ব্যাকটেরীয়া মানুষের তৈরী অস্ত্রগুলোর বিরূদ্ধে প্রতিরোধ ( রেসিষ্ট্যান্স) গড়ে তুলতে লেগেছে তাতে অচিরেই মানুষের অস্ত্রভান্ডারে টান ধরবে।
টান ধরবে না-ই বা কেন? নতুন নতুন ঔষধ আবিষ্কারে গবেষণার কাজে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচের কথা না হয় বাদই দিলুম কিন্তু এক একটি নতুন এন্টিমাইক্রোবিয়াল তথা এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারে যে বছরের পর বছর লেগে যাচ্ছে, তা অতিক্রম করবে মানুষ কিভাবে ? ]
“বাঁচতে হলে লড়তে হবে” এই সূত্র ধরে ক্ষুদে ক্ষুদে অনুজীবগুলোই এখন মানুষকে প্রতি নিয়ত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। মানুষ পড়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্য হুমকির মুখে। যে হারে অনুজীবগুলো তাদের বিরূদ্ধে ব্যবহৃত ঔষধগুলোর প্রতি রেসিষ্ট্যান্ট হয়ে যাচ্ছে ততো দ্রুত কিন্তু মানুষ নতুন নতুন ঔষধ নামক অস্ত্র সরবরাহ করতে ব্যর্থ। অনুজীবগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষ “সময়” নামের ফ্যাক্টরটিকে কব্জা করতে পারছেনা কিছুতেই। তাই ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশান, ইউনিসেফ চিকিৎসক সমাজের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, তারা যেন অযথা ও যথেচ্ছভাবে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার না করেন এবং সর্বশেষ আবিষ্কৃত এন্টিবায়োটিকগুলির প্রয়োগে সতর্ক থাকেন। কারন যথেচ্ছ ব্যবহারে হাতের এই পাঁচও যদি অকেজো হয়ে যায় তবে আগামী দিনগুলোতে কঠিন কঠিন রোগগুলো থেকে মানুষকে আর বাঁচিয়ে আনা সম্ভব হবেনা। চিকিৎসা খরচ বৃদ্ধি সহ বাড়বে হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে ভালো হওয়ার অপেক্ষায় গোনা দিন, বাড়বে মৃত্যুহার।
শুরুর আগেই জেনে নেয়া ভালো, স্বাস্থ্যই বা কি আর শারীরিক অসুস্থতা তথা রোগই বা কি।
স্বাস্থ্য সম্পর্কে যতো “কনসেপ্ট”ই থাকনা কেন শুধু ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর কনসেপ্টটা একটু জেনে রাখি, তা হলো- “হেলথ ইজ আ ষ্টেট অব কমপ্লিট ফিজিক্যাল, মেন্টাল এ্যান্ড সোস্যাল ওয়েল-বিয়িং এ্যান্ড নট মিয়ারলি এ্যান এ্যাবসেন্স অব ডিজিজ অর ইনফার্মিটি।” এসব ভারী ভারী কথায় আমাদের মতো সাধারন মানুষের কি চলবে? চলবেনা। আমরা সহজে যা বুঝতে পারি তা হচ্ছে, আমার শরীর-মন যখন স্বাভাবিক ভাবে চলছে তখন আমি সুস্থ্য। তা না হলে আমি অসুস্থ্য। ব্যস, এর বেশী কিছু বুঝতে আমরা চাইনে......
তাহলে অসুস্থতা কি ?
জানা অজানা কারনে শরীরের যে কোনও অঙ্গের স্বাভাবিক কাজ ও গঠনের যে কোনও ধরনের ব্যত্যয় যখন কোনও না কোনও উপসর্গ বা লক্ষন নিয়ে প্রকাশিত হবে তখন তাকেই আমরা শারীরিক অসুস্থতা বা রোগ বলে ধরে নেব।
যেমন এই মূহূর্তে আপনার মাথা ব্যথা হচ্ছে। তার মানে, আপনার মাথা নামক অঙ্গটির কোথাও না কোথাও জানা অজানা যে কোনও কারনে স্বাভাবিক কাজের ব্যাঘাত হচ্ছে। যার উপসর্গ হিসেবে আপনি ব্যথা অনুভব করছেন।
একই ভাবে এখন আবহাওয়া ভালো যাচ্ছে না, জ্বরজারি চতুর্দিকে। আপনিও জ্বর অনুভব করছেন। জ্বরটি নিজে কিন্তু কোনও রোগ বা অসুস্থতা নয়,চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি একটি - প্রটেক্টিভ রেসপন্স। অর্থাৎ এটি একটি উপসর্গ যা আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাইছে যে, আপনি কোনও না কোনও শারীরিক ঝুঁকিতে আছেন । বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই এর অর্থ আপনার শরীরে কোনও না কোন অনুজীবের সংক্রমন ঘটেছে। আবার আপনার অভিজ্ঞতা থেকেই জানেন হয়তো, ক্যানসার রোগীদেরও প্রথম দিকে জ্বরের উপসর্গ থাকে। এই জ্বরের সাথে কিন্তু অনুজীবদের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। এখন এই সব জ্বরের উপসর্গ দেখে কি ধরনের চিকিৎসা দেবো আমরা ? এ ক্ষেত্রে অনুজীব ব্যাকটেরীয়ার কারনে যদি জ্বরটি হয় তবে এন্টিবায়োটিক দিতেই হবে। ভাইরাসের কারনে জ্বর হলে সেখানে এন্টিবায়োটিকের কোনও ভূমিকাই নেই। লাগবে এন্টিভাইরাল কিছু। ক্যানসারজনিত জ্বরের জন্যে কোনও এন্টিবায়োটিক বা এন্টিভাইরালে কাজ হবেনা। ওর চিকিৎসা আলাদা।
এই উদাহরণ টানলুম এই কারনে যে, আমরা সাধারন মানুষেরা যেন ধরে নিয়ে বসে না থাকি যে- “জ্বর হলেই এন্টিবায়োটিক লাগবে”।
এমনি করেই যে কোনও অসুস্থ্যতা বা রোগ হতে পারে হাযারটা কারনে। এই কারনগুলি নির্ভর করে এজেন্ট-হোষ্ট- এনভায়রনমেন্ট এর মিথোস্ক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে। এখানে এজেন্ট হলো রোগ উৎপাদনের অনুঘটক, হোষ্ট হলুম আমরা প্রানীকূল আর এনভায়রনমেন্ট হলো আমাদের চারধারের পরিবেশ। হোষ্টকে যদি আমরা “জমি” হিসেবে ধরি তবে এজেন্ট হবে “বীজ”। আর এ থেকে ফসল মানে রোগ বা অসুস্থ্যতা হতে গেলে মোটামুটি উপযুক্ত একটি পরিবেশ বা আবহাওয়ারও দরকার পড়বে।
এবারে এজেন্টদের সম্পর্কে কিছু জেনে নিই যাতে নিজেরাই বুঝতে পারি কখন কি চিকিৎসা বা ট্রিটমেন্ট দিতে হবে। বিশেষ করে চিকিৎসায় এন্টিবায়োটিক লাগবে কি লাগবেনা বুঝতে পারবো তাও। এর ফলে অযথা ও অনিয়ন্ত্রিত এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে বিরত থাকতে পারবেন আপনি ও আপনার পরিবার।
প্রথমেই জৈব বা বায়োলজিক্যাল এজেন্টদের নিয়ে কথা বলা যাক -
এরা হলো, রোগের কথা উঠলেই আপনাদের মাথায় ঘুরতে থাকা ব্যাকটেরীয়া, ভাইরাস, ফাংগাস, প্রটোজোয়া ইত্যাদি যাদের কে আমরা অনুজীব বলি তারা-ই। ধরুন আপনার আমাশা (ডিসেন্ট্রি) হয়েছে। এটি হতে পারে সাধারনত ব্যাকটেরিয়া দ্বারা কিম্বা প্রটোজোয়া দ্বারা। চিকিৎসা কি একই হবে ? হবেনা। ব্যাকটেরিয়ার কারনে আমাশা হলে লাগবে এন্টিবায়োটিক আর প্রটোজোয়ার কারনে হলে দিতে হবে একটি এন্টিপ্রোটোজোয়াল ঔষধ। এই জ্ঞানগুলো আমরা সাধারন মানুষেরা জানিনে বলেই বা জানার সুযোগ নেই বলেই সকল ক্ষেত্রেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে ফেলি যখন তখন। অনেক শিক্ষিত মানুষও কিন্তু এমন ভুলটা করে বসেন। আসলে আমরা সবাই তো আর ডাক্তার নই অথচ সময় সময় বিবিধ কারনে আমাদের যে ডাক্তার হয়ে উঠতেই হয়! গন্ডোগোলটা এখানেই। আর এমন করেই একটি ব্যাকটেরীয়ার ভয়াল সুপারবাগ হয়ে ওঠার পথটি সুগম হয়।
পুষ্টি সংক্রান্ত এজেন্ট যেমন প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ লবন, পানি ইত্যাকার পদার্থের ঘাটতির জন্যে আপনি যেমন অপুষ্টিতে ভুগবেন তেমনি আপনি ভুগতে পারেন রক্তশূন্যতাতেও। ভিটামিনের ঘাটতিতে হতে পারে শতখানেক রোগ। আবার শরীরে ফ্যাট বা চর্বির আধিক্যের কারনে আপনি মুটিয়ে যেতে পারেন, আপনার রক্তনালীতে জমতে পারে চর্বি যা আপনার উচ্চ রক্তচাপের কারন। আর এই চর্বি যদি হৃদপিন্ডকে পেয়ে বসে তবে তা হতে পারে মরনঘাতীও। এসব রোগ হলে আপনি দূর্বলতা অনুভব করবেন, নিজেকে অসুস্থ্য-অসুস্থ্য লাগবে, ভাববেন ভয়াল রোগে পেয়ে বসেছে আপনাকে - এন্টিবায়োটিক খেতেই হবে। অথচ এসব রোগের একটিও সারিয়ে তুলতে কিন্তু এন্টিবায়োটিকের মোটেই প্রয়োজন নেই আপনার।
রোদ, ঠান্ডা, আদ্রতা, বিদ্যুত, শব্দ ইত্যাদির মতো ফিজিক্যাল এজেন্টগুলোও কিন্তু আপনার শারীরবৃত্তিয় কার্যক্রমে বাঁধার সৃষ্টি করতে পারে। যেমন রোদের প্রচন্ড তাপে আপনার শরীরে পানিশূন্যতা ঘটতে পারে, হতে পারে হিটষ্ট্রোক। ঠান্ডায় জমে গিয়ে ফ্রষ্টবাইটের শিকার হতে পারেন, অল্প ঠান্ডায় ভুগতে পারেন সর্দিতেও। এখন বলুন, এসব রোগের চিকিৎসায় আপনি কি এন্টিবায়োটিকের উপর নির্ভর করবেন ? নিশ্চয়ই , না। অথচ সর্দি কাশিতে আমাদের যেন এন্টিবায়োটিক না হলেই চলেনা।
তেমনি আপনার শরীরের অভ্যন্তরে তৈরী হতে পারে বা জমতে পারে অতিরিক্ত ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, বিলিরুবিন, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ইত্যাদি। এরা হলো এক একটি রাসায়নিক এজেন্ট। অতিরিক্ত ইউরিয়া ইউরেমিয়ার জন্ম দিয়ে আপনার কিডনীকে অকেজো করে দিতে পারে, ইউরিক এসিড শরীরের গাঁটে গাঁটে বাত তৈরী করতে পারে, বিলিরুবিন জন্ডিস নামে আপনাকে সোনার বরন করে দিতে পারো! এখানেও কিন্তু এন্টিবায়োটিকের কোনও কারিশমা দেখানোর সুযোগ নেই।
এছাড়াও বহিরাগত অনেক রাসায়নিক এজেন্ট যেমন ধুলো-বালি, কেরসিন-ডিজেল-পেট্রল, কীটনাশক, গ্যাস, ফুলের রেনু সহ বিভিন্ন এলার্জেন বা এলার্জী সৃষ্টিকারী জিনিষ সমূহ আপনাকে বিভিন্ন রোগ সহ নানান ধরনের এলার্জীতে ভোগাতে পারে। যার ভালো একটি উদাহরণ হলো- এ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট ।
এর পরেও রয়েছে যান্ত্রিক এজেন্ট যারা আপনাকে আঘাতজনিত অসুস্থ্যতায় ফেলতে পারে। যেমন ভারীকাজ করতে গিয়ে আপনার ঘাড়-মেরুদন্ড ব্যথা করতে পারে, হাত-পা মচকে যেতে পারে, যেতে পারে ভেঙেও। এবং শেষতক অঙ্গ বিকৃতি ঘটতে পারে।
মাথায় রাখুন, এসবের কোনও কিছুতেই কিন্তু আপনার এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন একেবারেই নেই।
তাহলে এন্টিবায়োটিক লাগে কোথায় ?
আগে যে সব ডিজিজ এজেন্টদের কথা বলা হয়েছে তারা সবাই-ই ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে আপনার কোনও না কোনও শারীরিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের গঠন বা তার কার্যকলাপে বিঘ্ন সৃষ্টি করে আপনাকে অসুস্থ্য করে তোলে। তবে আমরা সচরাচর যে সব রোগে ভুগি বা যেসব রোগের সাথে পরিচিত তার প্রায় সবটাই “ফাংশনাল” বা ক্রিয়াবৈগুন্যজাত। আর এসব এজেন্টদের সংস্পর্শে এলে সচরাচর আমাদের শরীরের কোষকলায় বা টিস্যুতে কিছু পরিবর্তন ঘটে থাকে যাকে আমরা বলি ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ।
প্রদাহ হলো যেকোনও ক্ষতিকারক উদ্দীপনার কারনে আমাদের শরীরের কোষকলা বা টিস্যু যে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে থাকে তা।
কি প্রতিক্রিয়া দেখায় আমাদের টিস্যুগুলো বা প্রদাহের লক্ষনগুলিই বা কি?
তা হলো- জায়গাটি প্রথমে লাল হয়ে উঠবে, একটু পরে ফুলে উঠবে তারপরে সেখানের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে এবং ব্যথা হতে শুরু করবে। শেষতক ঐ এলাকার স্বাভাবিক কাজ স্থগিত হয়ে যাবে। এই লক্ষনগুলি এক বা একাধিক হলেই আমরা বলবো প্রদাহ হয়েছে। একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝতে চেষ্টা করি। মনে করা যাক, কেউ আপনার গালে একটি থাপ্পড় দিয়েছে। এখন কি হবে ? আপনার গালটি লাল হয়ে উঠবে, জায়গাটি গরম হয়ে যাবে তারপরে ফুলেও উঠতে পারে আবার না ও পারে। কিন্তু শেষে ব্যথাটি লাগবে আপনার এটা নিশ্চিত। কিছু সময় পরে আপনার ঐ টিস্যুগুলো আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে যদি অন্য কোনও অনুঘটক প্রক্রিয়াটিতে নাক না গলায়। এগুলোই হলো আপনার গালের টিস্যুগুলির স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া বা নর্মাল রি-এ্যাকশান কারন টিস্যুগুলি “থাপ্পড়” নামের একটি ক্ষতিকারক উদ্দীপনা বা ষ্টিমুলীর শিকার হয়েছে। আর যদি আপনার ফিঁয়াসে আপনার গালে হাত দিয়ে একটু আদর করে দেয় ? হয়তো আপনার মুখমন্ডল লাল হতে পারে লজ্জায় কিন্তু এছাড়া আর কিচ্ছুই হবেনা। কারন ঐ স্পর্শ কোনও ক্ষতিকারক উদ্দীপনা বা ষ্টিমুলী নয়। এতো গেলো মেকানিক্যাল কারনে হওয়া প্রদাহের কথা।
কিন্তু এই প্রদাহের কারন যদি হয় কোনও অনুজীব তবে তাকে আমরা বলি - সংক্রমন বা ইনফেকশান।
মানুষের প্রচলিত ইনফেকশানগুলো ঘটে থাকে মূলত অনুজীব দ্বারা যার ভেতরে ব্যাকটেরীয়া নামক এককোষী প্রানী যতো নষ্টের গোড়া।
এই ব্যাকটেরীয়াগুলো জ্যামিতিক হারে বংশবিস্তার করতে পারে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই, আপনার দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ সংক্রমিত করতে পারে যা কিছু ক্ষেত্রে আপনার জীবন সংশয়ের কারন হয়েও উঠতে পারে। শুধুমাত্র এই ব্যাকটেরীয়াগুলোকে নিশ্চিহ্ন করতেই আমরা এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে থাকি। এই ব্যবহার করতে গিয়ে একটি এন্টিবায়োটিকের ফার্মাকোলজিক্যাল প্যারামিটারস (বিচার্যক্ষেত্র) বিবেচনায় এনেই আমরা একটি সঠিক এন্টিবায়োটিক বাছাই করি।
আসলে সত্যটি হলো এই যে, বাজারে প্রাপ্ত সকল এন্টিবায়োটিকই কিন্তু ব্যাকটেরীয়া বিধংসী। তারপরেও আমরা কিন্তু একটি এন্টিবায়োটিককে অন্য আর একটির তুলনায় উৎকৃষ্ট বলে মনে করি তার ঐ ফার্মাকোলজিক্যাল প্রোফাইলের কারনে এবং এন্টিবায়োটিকটি যে রেসিষ্ট্যান্ট হয়ে যায়নি সে বিবেচনা থেকে।
এই কারনেই বাজারে হরেক রকমের এন্টিবায়োটিক পাবেন আপনি। কেন এতো এতো এন্টিবায়োটিক বাজারে ?
এই চিত্রটি ভালোভাবে বুঝতে ও অনুধাবন করতে হলে আপনাকে দু’টো বিষয়ে মনোনিবেশ করতে হবে - ব্যাকটেরীয়া ও তার রেসিষ্ট্যান্ট হয়ে ওঠার সক্ষমতা আর হোষ্টের ইমিউন সিষ্টেম (গ্রাহকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) এর দিকে।
যেহেতু বিষয় দু’টিই বিশাল এবং নিত্যনুতন গবেষনার কারনে তা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং একই সাথে একজন নন-মেডিক্যাল ব্যক্তির জন্যে তা বুঝে ওঠা বেশ জটিল তাই যেটুকু না বললেই নয় তাই-ই আগামী পর্বে সোজা ভাষায় বলার চেষ্টা থাকবে আমার, যাতে তা সহজপাচ্য হয়।
চলবে....................
ছবির কৃতজ্ঞতা - ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৯ রাত ৮:৩১