এই যে জলের মাঝে পা ভিজিয়ে দোলাচ্ছি
টের পাচ্ছিস ? তোর সামনেই তো বসা আমি ।
কলোরাডো নদীর ঠান্ডা জলে রাখা পা,
গাঢ় নীলসবুজ শ্যাওলার মতো তোর চোখ,
চিবুকের তিল সবই তো দেখছি ।
হাত বাড়ালেই তো ছুঁতে পারি, জানিস ? তোর জলপাই শরীর-গা
ছুঁয়ে দিতে পারি ।
তা কেন করবো !
তুই কি ডুবে গেলি জলে, বরফ জলে ! কথা কইছিস না যে বড় ?
সেই অভিমান এখনও রেখেছিস ধরে !
বোঝাই কি করে
তোর সব কথা মনে আছে --
কতো যে গালি দিয়েছিস আমায় , তোর ফুলছাপ জামায়
আচারের তেল মুছেছি বলে বলেছিলি - খচ্চর ।
হারু শেখের বাগানের চুরি করা পেয়ারা দিইনি বলে
সে যে কি ঢং করে তোর ফোলানো ঠোঁট , চোখে জমা জলে
কীর্তনখোলা যেন খেলা করে গেলো এইমাত্তর ,
দমকে দমকে বুকের ওঠা নামা
ভুলি নাই বকুল , আজও ভুলি নাই !
মুখ তোল, দেখ ; কতো কাছে বসে আছি তোর !
সেই যে তেতুল গাছের ডালে বসে দোলাচ্ছি পা ,
নীচ থেকে তুই চেয়ে আছিস তীর্থের কাক
“কুঞ্জ , একা খাসনে সব , পেটে তোর পিলে হবে ...”
এমন কিসব বলেছিলি মনে আছে তোর, বকুল ?
জিভে তোর জল এসেছিলো, না রে !
তেতুলের লোভ দেখিয়ে তোর কুঁড়ি ওঠা বুকে
হাত দিতে পারতুম , দিইনি ;
এমনি ভালো ছিলুম একদিন ।
সেদিন শেষ বিকেলের রোদে টাকরায় টা-টা শব্দ করে
তুই কেন বলেছিলি , “ কুঞ্জ ! তুই বড় ভালো ছেলেরে ” ?
তোর কুঞ্জ আজ আর ভালো নেইরে , বকুল !
অসভ্য বেহায়ার মতো আজ এতোদিন পরে
তোকে খুব ছুঁতে ইচ্ছে করছে, জানিস ?
অথচ জলে ছায়া ভেঙে ভেঙে বড় অধরা হয়ে উঠেছিস তুই
ছুঁতে গেলেই টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছিস বড় !
লজ্জায় ?
বিল পাড়ের সেই বাদাড়ে লুকোচুরি খেলার মতো
আবার কোথায় লুকালি , বকুল ! একটু টুক্কি বলতো , শুনি !
কলোরাডো নদী থেকে কীর্তনখোলা কত দূর ?
তার চেয়েও অনেক অনেক দূরে
আমি যে তোকে ফেলে এসেছি বকুল !
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৫