নাঙ্গা হয়ে চলাফেরা করা যদি আপনার স্বাধীনতা হয় তবে আপনাকে দেখে বখাটের টিজ করাও তার স্বাধীনতা। এখানে দুজনই সমান অপরাধী। এখানে অনেকে বলতে পারেন "আমার শরীর আমি যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে প্রদর্শন করব, যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই ব্যবহার করব তাতে কেউ বলার কে?" আবার এমনও বলতে পারেন "সুন্দর শরীরটি যদি মানুষকে দেখাতেই না পারলাম তবে এই সুন্দর শরীর থাকার মানে কি?"
এখন আপনার কথাতেই আসি, এই শরীরটি কী সত্যিই আপনার? আমরা কোন জিনিসটিকে নিজের বলি যা আমরা কিনে মালিকানা নিয়ে নিই অথবা যা আমরা সৃষ্টি করি। এখন আপনার এই শরীরটিকি আপনি স্রষ্টার কাছ থেকে কিনে মালিকানা নিয়ে নিয়েছেন নাকি আপনিই আপনার এই সুন্দর শরীরের শ্রষ্টা? যে শরীর নিয়ে আপনি বরাই করছেন তা আপনাকে কেবল ব্যবহার করার জন্য দেওয়া হয়েছে। শরীরটাকে আমরা চলাচলের মাধ্যম বা যানবাহনের সাথে তুলনা করতে পারি। যার কাজ কেবল আমাদের জীবনটাকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বয়ে বেরানো। যেমন ধরুন বাস বা ট্রেন বা প্লেন যাই বলেননা কেন তারা কি করে? তারা কেবল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মানুষ ও জিনিসপত্র পরিবহন করে তেমনিভাবে এই শরীরটাও আমাদের জীবনকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যায়। আমাদের জীবনটাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার সুবিধার জন্য মহান স্রষ্টা আমাদের এই শরীর নামক দু-পেয়ে পরিবহন ব্যবস্থা দিয়েছেন এবং নির্দিষ্ট সময়পর তিনি তা নিয়ে যাবেন। তাই যা আপনার নিজের নয় সেই আজব যান নিয়ে আপনার এত অহংকার শোভা পায় না।
আপনার ২য় কথায় আসি আপনি বলছেন সুন্দর শরীরটি যদি আপনি কাউকে দেখাতেই না পারলেন তবে সুন্দর শরীর থাকার মানেকি? সুন্দর জিনিস থাকলেই লোক দেখিয়ে বেড়াতে হবে তা আপনাকে কে বলল? আচ্ছা পথ ধরে হাটার সময় নিশ্চয় রাস্তার পাশে ভিবিন্ন রঙের ফুল ফুটে থাকতে দেখেন। প্রতিটি ফুল নিশ্চয় সুন্দর। সুন্দর তাদের রঙ, সুন্দর তাদের ঘ্রাণ, সুন্দর তাদের গঠন। এবার আমাকে বলুন ঐ ফুলগুলোকি কখনো আমাদের ডেকে ডেকে বলেছে যে দেখে যাও দেখে যাও আমরা কত সুন্দর। কিন্তু ফুলগুলো কি করে, তারা নিজের রুপ দিয়ে অন্যকে রাঙিয়ে তুলতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোদ করে। তাই সুন্দর শরীর থাকা মানেই তা লোক দেখিয়ে বেড়াতে হবে এমন কোন কথা নেই বরঞ্চ এই সুন্দর শরীর দিয়ে যদি কারো জীবন রঙিন করা যায় তাতেই উত্তম।
এখন আমার প্রথম কথায় আসি। নাঙ্গা হয়ে চলাফেরা করা যদি আপনার স্বাধীনতা হয় তবে আপনাকে দেখে বখাটের টিজ করাও তার স্বাধীনতা। কিছুক্ষন আগেইতো আপনি বললেন আপনার শরীর আপনি যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যবহার করবেন, যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে প্রদর্শন করবেন তাতে কেউ বলার কে? এখন আপনাকে উত্তক্ত্যকারী বখাটে যদি বলে "আমার মুখ দিয়ে আমি যা ইচ্ছা তা বলব, যখন ইচ্ছা তখন বলব তা কেউ বলার কে?" যখন আপনি কি বলবেন? আবার আপনি বলেছেন সুন্দর শরীরটি যদি মানুষকে দেখাতেই না পারলেন তবে এই সুন্দর শরীর থাকার মানে কি? এখন এই সুন্দর শরীর দেখে যদি কেউ মন্তব্য করে তবে তাকে কি খুব খারাপ বলা যাবে কারণ আপনিতো চেয়েছেনই কেউ দেখুন আর মন্তব্য করুক।
আচ্ছা এসব কথা আজ থাক। কিছুদিন আগে একটি পত্রিকায় দেখলাম ভারতে "ফ্রি কিস মুভমেন্ট" মানে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার জন্য আন্দোলন করে অনেকে একত্র হয়ে প্রকাশে প্রেমিক প্রেমিকা একে অপরকে চুমু খেয়েছে। তারা লোকসমাজের সামনে একে অপরকে চুমু খাওয়ার স্বাধীনতা চেয়েছেন। আসলে কিছু কিছু ব্যাপার আছে যা প্রকাশ্যে করা শোভা পায়না। এই যেমন প্রেমিকাকে চুমু খাওয়া বা নিজের বউকে সোহাগ করা বা লোকচক্ষুর সামনে প্রাকৃতিক কর্ম সারা। আমরা যদি পশুদের দিকে তাকাই তাহলে কি দেখব? তাহলে আমরা দেখব যে তারা এসব কাজ প্রকাশ্যে লোকচক্ষু বা পশুচক্ষুর সামনেই করছে। এবং এখানটাতেই মানুষের সাথে তাদের পার্থক্য। কারণ তারা এসব কাজকে আড়ালের কাজ মনে করেনা। এখন মানুষও যদি এসব আড়ালের কাজ পশুদের মতো প্রকাশ্যে করা শুরু করে দেয় তাহলে পশুদের সাথে মানুষের আর কোথায় পার্থক্য থাকলো?
আজ হয়ত তাহারা প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার স্বাধীনতা চেয়ে আন্দোলন করেছে কাল হয়ত আরো কতকিছু প্রকাশ্যে করার জন্য স্বাধীনতা চেয়ে আন্দোলন করবে। হে আল্লাহ তুমি আমাদের এসব থেকে রেহায় দাও। প্রত্যেক স্বামী তার স্ত্রীকে ভালোবাসবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু কিভাবে ভালোবাসবে তা কি লোকচক্ষুর সামনেই ভালোবেসে দেখেতে হবে? (আস্তাগফিরুল্লাহ্)