তোমরা যারা আইজ ইন্টার পরীক্ষা দিবার যাইতেছ তাদের জন্য শুভকামনা। দোয়া করি তোমরা পরীক্ষার খাতায় মোট দুইটা গোল্লা পাও। আর দুই গোল্লার সম্মুখে একটা আস্ত এক থাকুক।
ইদানিং দুই গোল্লার সম্মুখে একটা আস্ত এক পাওয়া অতি সাধারন একটি কার্য হইয়া দাড়াইয়েছে। এ যেন জলবৎতরলং।
একদা প্রশ্নপত্রের সহিত শিক্ষার্থীকুলের শত্রুপন্ন মনোভাব ছিল। তাই তাহারা পরীক্ষা শুরু না হওয়ার আগে একে অন্যের মুখই দর্শন করিত না। এখন তাহাদিগর সম্পর্কের ভেতর ভাব ভালোবাসা সৃষ্টি হইয়াছে। তাই তাহারা একে অন্যকে দেখিতে সর্বদা উদ্বগ্রিব হইয়া থাকে। আর এখন প্রশ্নপত্রগুলোও বড্ড অধৈর্য্য হইয়া উঠিয়াছে। তাই তাহারা পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই পরীক্ষার্থীর সহিত সাক্ষাত করিতে তাহাদিগর বাড়ি বাড়ি চলিয়া যায়। এতে অভিভাবকরাও খুশী তাহাদিগর আদরের সন্তান, চোখের মণি, নয়নে পোত্তলিকে আর কষ্ট করিয়া রাত্র জাগিয়া পড়ালেখা করিতে হইলো না। আহ! এমন অভিভাবকগণই পারিবেন জাতিকে আলোকের সন্ধান প্রদর্শন করিতে।
প্রশ্নপত্রগুলো সুবিধাবাদীও বটে, তাই যাহারা তাহাকে সুবিধা দেয় সে কেবল তাহাদিগর গৃহেই ছুটে এবং অতিথি হয়। আর যাহারা তাকে সুবিধা দিতে অপারগ তাহাদিগর গৃহের পথ সে ভুলিয়া যায় এবং সে পথে সেই পথে না যাইয়া মনোখুন্ন হইয়া প্রস্তান করে। প্রশ্নপত্রগুলো মনোখুন্ন হইয়া যাদের গৃহে যাইতে পারেনি তাহাদের জন্য আমার করুণা। তোদের দ্বারা আসলে কিচ্ছু হবেনা। তোরা মুর্খ, আবাল, হাঁদারাম, বোকা, বোদ্ধো, হতকাইল্লা আমলের মানুষ। তোরা জাতির জন্য অভিশাপ। কেন বেটারা রাস্তায় লণ্ঠন নিয়ে বেরিয়ে দেখতে পারিসনি প্রশ্নপত্রগুলো মনোখুন্ন হইয়া কোথায় চলিয়া গেল? আর ওদের একটু সুবিধা দিলে ক্ষতিটাইবা কি হতো শুনি? শুধু বইয়ের ভেতরে মুখ গুঁজিয়া রাখিলে চলিবে! আশেপাশেও নজর রাখতে হবে বৈকি।
প্রশ্নপত্রগুলো কেবল ভাব-ভালোবাসার জন্যই পরীক্ষার্থীদের বাড়িতে আসেনি তাহাদিগর অন্য একটি স্বার্থও রহিয়াছে। যদিও তাহা জনসম্মুখে বলা ঠিক হইবেনা তবুও বলছি, তাহারা চায় পরীক্ষার্থীরা শিক্ষিত হোক কিন্তু জ্ঞানী হোক এটা তাহাদের পছন্দ নয়। জ্ঞানী ও শিক্ষিতের ভেতরকার তফাৎটুকু নিশ্চয় বুঝাইয়া বলিতে হইবে না।
প্রশ্নপত্রগুলো একা একা পথ চলতে পারেনা, তাহাদিগকে পথ দেখাইতে তাদের সাথে সাহায্যকারী বা রাজাকার থাকেন যিনি তাহাদেরকে শিক্ষার্থীদের বাড়ির পথ চেনাইয়া দেন। যিনি থাকেন তিনি একজন শিক্ষিত লোক তবে তাহার শিক্ষার ধরনে ছিল অপশিক্ষা। সেই একজন যিনি একদা রাত জেগে পড়ালেখা থুক্কু টোকেন তৈরি করিত, সেই একজন যার হাত চলাচল করে টেবিলের নিচ দিয়ে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য জাতি কখনোয় এই মহান ব্যক্তিটিকে খুঁজিয়া বের করিয়া উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করিতে পারিবেনা। তার কীর্তি লেখা রবেনা ইতিহাসের অক্ষয় পাতায়। তবুও তাহাকে প্রাণ ভরিয়া শ্রদ্ধা জানাইবেন আমাদের সমাজের সুযোগ সন্ধানী অভিভাবকগণ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:২২