সেদিন জাফর ইকবাল স্যার প্রথম আলোতে তাঁর “সাদাসিদে কথা”য় আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সৃস্ট বিভিন্ন সমস্যা এবং অসঙ্গতি তুলে ধরেছেন। স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ অতি জরুরী এই বিষয়টি তুলে ধরার জন্য। এইস.এস.সি পাস করার পরে প্রতিটি ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সময় এই সব সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন সেটাই প্রত্যাশা করি।
আমি নিজে একজন ভুক্তভূগী ছিলাম এবং ছুটে বেড়িয়েছি ঢাকা থেকে খুলনা, খুলনা থেকে রাজশাহী, রাজশাহী থেকে দিনাজপুর, চট্রগ্রাম থেকে সিলেট। আরও অনেক জায়গায়। কোথাও চান্স পাইনি। কাজের কাজ একটাই হয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায় একটা শর্টকাট ভ্রমণ হয়েছে। এমনিতে হয়ত যাওয়া হতনা। তারপর দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাই এবং আমার সৌভাগ্য এটাই যে আমি জাফর ইকবাল স্যারের প্রত্যক্ষ ছাত্র ছিলাম।
স্যারের লেখাটি পড়ে জানতে পারলাম এইবার পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষার্থীরা কত কষ্ট করেছে! কেউ কেউ আবার সারারাত বাইরে বসে কাটিয়েছে। ভীষন কষ্ট পেয়েছি যখন জানতে পারলাম একটি ছাত্র সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছে।
আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম তাদের কাছে ভর্তি পরীক্ষার দিনগুলো ছিলো এক প্রকার উৎসবের দিন। আমরা অপেক্ষা করতাম এই দিনটির জন্য। ভীষণ ভালো লাগত যখন আমার পরিচয়ে কেউ পরীক্ষা দিতে আসত। আমি মেসে থাকতাম। বন্ধুরা এবং মেসবাসী প্রিয় ছোটো ভাইরা বলাবলি করতাম কার আন্ডারে কত জন পরীক্ষার্থী এসেছে। পরীক্ষার্থীদের জন্য আমরা আমাদের বেডগুলো ছেড়ে দিতাম। প্রতি বছরই ২০ থেকে ২৫ জন আসত। সাধ্যের মধ্যে ওদের খাওয়ানোর ব্যাবস্থাও করতাম। আর আমরা সারা রাত রাস্তা দিয়ে হেটে বেড়াতাম কিংবা অন্য কোনো বন্ধুর মেসে গিয়ে কার্ড খেলতাম। পরীক্ষার দিন সকালে ওদের পরীক্ষার হলে পৌছে দিতাম। আমাদের বন্ধুদের কেউ কেউতো পরীক্ষার্থী আসবে বলে বাসা থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে আসত। আর পরীক্ষার দিনতো ক্যাম্পাসে উৎসব উৎসব আমেজ থাকত। এখনো নিশ্চয়ই সবকিছু আগের মতই হয়। খুব মিস করি সেই সব বন্ধুদের, সেই সব ছোটো ভাইদের এবং সেই সব মূহুর্তগুলো……