আপনারা যারা ইটারনাল সানশাইন অফ দ্যা স্পটলেস মাইন্ড কিংবা ইনসেপশান এর মতোন মুভিগুলো মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন, তাদের জন্য একটা মাস্ট সি মুভির রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম।মুভিটির নাম Paprika, এটি একটি জাপানীজ অ্যানিমেশান সাই-ফাই মুভি, যা রিলিজ হয়েছিলো ২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর।মুভিটির অরিজিনাল টাইটেল Papurika, যা একটি সায়েন্স ফিকশান গল্পের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে।
মুভিটির কাহিনী বেশিমাত্রায় জটিল।রানিংটাইম দেড় ঘন্টার মতো হলেও মাথার উপর বেশ চাপ ফেলে।কাহিনী বুঝতে বেশ কষ্ট করতে হবে, প্রথমদিকে আমি বেশ অসহায় বোধ করেছিলাম,কাহিনীতে এতো প্যাঁচ, আর জটগুলো ভীষন কঠিন, তবে ভাগ্যিস ইংলিশ ডাব ভার্সটা নামিয়েছিলাম, জাপানীজ ভাষায় ইংলিশ সাবটাইটেল হলে মুভিটা আরো কয়েকবার দেখা লাগতো।
যেহেতু, ইনসেপশান কিংবা ইটারনাল সানশাইনের সাথে তুলনা দিয়েছি, সুতরাং বুঝতেই পারছেন,সিনেমার প্লটটা স্বপ্নকে ঘিরে।এইখানে দেখা যাবে,ভবিষ্যতের জাপানের সবচেয়ে বড়ো সাইকোলজিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সায়েন্টিস্টরা ডিসি-মিনি নামক একটি ডিভাইস আবিষ্কার করেছেন,যার মাধ্যমে অন্য কারো স্বপ্নের মাঝে ঢুকে পড়ে সেই স্বপ্নকে দেখা কিংবা ভিডিও করা যায়।এই ডিভাইসটি আবিষ্কার করার উদ্দেশ্যই ছিলো যাতে করে সাইকিয়াট্রিস্টরা তাদের পেশেন্টদের স্বপ্নের মধ্যে ঢুকে রোগীর মানসিক সমস্যা সঠিকভাবে অনুধাবন এবং তার সমস্যার সমাধান করতে পারেন।কিন্তু বিপত্তি বাধে তখনই যখন সেই রিসার্চ সেন্টার থেকে তিনটি ডিসি মিনি ডিভাইস চুরি যায়।আর যেহেতু, ঐ ডিভাইসটির ফাংশান কিংবা প্রোগ্রাম অসম্পূর্ণ ছিলো তাই ঐ খোয়া যাওয়া ডিভাইসগুলোকে ট্রেস করা কিংবা অকেজো করার কোনো অপশান সায়েন্টিস্টদের কাছে ছিলো না।ক্রমেই ঝামেলার পর ঝামেলা বাড়তে থাকে।কারন যে চুরি করেছে, সে অন্যদের স্বপ্নে হানা দিয়ে তাদেরকে ম্যানুপুলেট করার চেষ্টা করতে থাকে।আর এভাবেই নানান নাটকীয়তায় এগুতে থাকে কাহিনী।
মুভিটির ব্যাপারে প্রথমেই বলে রাখি, এটি একটি অ্যানিমেশান মুভি হলেও এটি কোনোমতেই বাচ্চাদের জন্য নয়।ভায়োলেন্ট আর সেক্সুয়াল ইমেজের জন্য এতে Rated R ট্যাগলাইন দেয়া হয়েছে।এছাড়াও মুভিটির প্লট খুবই জটিল এবং সেটা বাচ্চারা কেন, সাধারন দর্শকদেরকেও বিমুখ করতে পারে।আগেই বলেছি, যারা একটু জটিল কিংবা সহজবোধ্য নয় এমন মুভি দেখতে পছন্দ করেন তাদের জন্যই এই মুভিটা রেকমেন্ড করা যায়।
সিনেমার ফ্লোটা ধরতে একটু সময় লাগতে পারে, তবে তা ধরতে পারলে বেশ উপভোগ্য লাগবে।আর শেষের দিকে কাহিনীর জটও বেশ পরিষ্কার হয়ে যাবে।মুভিটির অ্যানিমেশান খুবই ভালো, আর অনেক জায়গার আইডিয়াগুলো আউটস্ট্যান্ডিং লেগেছে।আর তার সাথে দুর্দান্ত সাউন্ডট্র্যাকের কথা বলতেই হয়।
মুভিটির মাধ্যমে ডিরেক্টর যেনো আমাদেরকে একটা মেসেজ দিতে চাইলেন, টেকনোলোজির এতো সুদূরব্যাপী প্রসার আর আমাদের জীবনে যেই পরিমান প্রভাব ফেলছে তা আসলেই খুবই স্পর্শকাতর হয়ে যাচ্ছে।টেকনোলোজীর সবচেয়ে বড়ো অসুবিধা হলো, এইটা ভালো কিংবা মন্দ উভয়ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা যায়, ভালো কাজে যেমন আশীর্বাদ তেমনি খারাপ কাজেও তা অভিশাপ হয়ে আসতে পারে।আর তাছাড়া টেকনোলোজীর ব্যাপকতা আমাদের সংবেদনশীল জায়গাগুলোতে ঢুকে পড়ছে।একটা মানুষের একান্ত ব্যাক্তিগত জিনিস হতে পারে তার স্বপ্নগুলো,সেই স্বপ্নগুলোর প্রাইভেসী যখন টেকনোলজির হাতে নিয়ন্ত্রিত হয় ---ঘোর কলিকাল বুঝি একেই বলে।
মুভিটি রিলিজের পরপরই বেশ প্রসংশিত হয় এবং Montréal Festival of New Cinema, Online Film Critics Society Awards, Venice Film Festival সহ বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে নমিনেশান এবং পুরষ্কিত হয়।মজার ব্যাপার হলো ইনসেপশানের সাথে পাপরিকার কাহিনীর হালকা মিল পাওয়া যায়।এজন্য ইনসেপশানকে অনেকেই পাপরিকার হলিউড ভার্সন বলে থাকেন।কোথায় জানি পড়েছিলাম, নোলান নিজেই বলেছিলেন, তিনি পাপরিকার দ্বারা ইনস্পায়ারড হয়েই ইনসেপশান বানিয়েছিলেন।যদিও কোথায় পরেছি তা মনে করতে পারছি না।
যাই হোক, মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৭.৭, আমার পার্সোনাল রেটিং ৯/১০।
যারা সিরিয়াস টাইপের সাইফাই থ্রিলার পছন্দ করেন তাদের জন্য হাইলি রেকমেন্ড করলাম।
মুভিটির ডাউনলোড লিংক:
Paprika 2006 - Dual Audio | 720p | 500 MB - Riddler :-----
ফাইলসার্ভ:
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
অথবা,
ফাইলসনিক:
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
যেই ডাউনলোড লিংকটি দিয়েছি তাতে অডিও ইংলিশ কিংবা জাপানীজ দুইটাই রয়েছে, খালি অডিওট্র্যাক অপশানে গয়ে সিলেক্ট করতে হবে
অথবা, সিংগেল লিংক:
http://stagevu.com/video/nprwhtzvgjaq
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১২:২৮