ছাপা হতো দৈনিক সিলেটের ডাক এ। '' যুক্তরাষ্ট্রের রোজনামচা '' শিরোনামে।
একই লেখা ছাপা হতো লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সুরমা য়। ''আমেরিকার চালচিত্র '' শিরোনামে।
সুরমার প্রতিষ্টাতা সম্পাদক ডাঃ বশির আহমদ। আমার নিজের এলাকা কামাল বাজার যে ক'জন কৃতিসন্তানের জন্ম দিয়েছে , তিনি তাঁদের একজন। তাঁর স্ত্রী মিসেস আয়শা আহমদ। মূলত: আয়শা ভাবীর অনুপ্রেরণায় সুরমায় আমার নিয়মিত লেখালেখি শুরু।
লেখালেখির সুবাদে লন্ডনে একটা পরিচিতি গড়ে উঠেছিল আমার। ১৯৯২ সালে লন্ডনে যাবার পর পরই সুরমার উদ্যোগে আমাকে নিয়ে একটা মত
বিনিময় সভার আয়োজন করা হয় সাপ্তাহিক নতুন দিন কার্যালয়ে।
সুরমার সম্পাদক তখন নজরুল ইসলাম বাসন। আমার অগ্রজ প্রতিম এই
সম্পাদকের দুই সহযোগী ছিলেন বেলাল আহমদ ( বর্তমান সম্পাদক )
ও এমাদুল হক চৌধুরী ( বর্তমানে সাপ্তাহিক পত্রিকা সম্পাদক )।
আমাকে নিয়ে সেই মত বিনিময় সভায় মধ্যমনি ছিলেন আব্দুল গাফফার চৌধুরী।
সেবারে আমি লন্ডনে বেশ কয়েক মাস অবস্থান করি। মার্কিনী একটা
প্রতিষ্টানের সাথে চুক্তিভিত্তিক একটা প্রজেক্ট ছিল আমার। বিষয় - অভিবাসে বাঙালী প্রজন্ম ও তাদের ভবিষ্যত।
সে সময়ে আমার আড্ডার অন্যতম স্থান হয়ে উঠে সাপ্তাহিক নতুন দিন কার্যালয়। নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশার অনুপ্রেরণায় প্রায় প্রতি
সপ্তাহেই আমার লেখা ছাপা হতো নতুন দিনে। পাশাপাশি সুরমায় ও
ছাপা হতো আমেরিকার চালচিত্র ।
..................
নাহাস ভাই সাহিত্যমোদী মানুষ। তিনি একসময় আমাকে কিছু বই এর
আলোচনা লেখার অনুরোধ করেন । আমি সানন্দে রাজী হই। শুরু হয়
লেখা। এসময়ে আমি বেশ কয়েকটি বইএর আলোচনা লিখি। যা ধারাবাহিকভাবে নতুন দিন এ ছাপা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটা
বই আহমদ ময়েজ এর। বইটি ছিল ছড়ার। আরেকটি বই আব্দুল হামিদ
মাহবুব এর। সেই বইটিও ছড়ার। মনে পড়ছে , কবি আবু মকসুদ সেই
বইটি আমাকে উপহার দিয়েছিলেন।
এখানে উল্লেখ করা দরকার , ১৯৯০ -৯২ সালে বিলাতের সাহিত্য অংগন কে যারা মাতিয়ে রেখেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম - রেণু লুৎফা, শামীম
আজাদ , সৈয়দ শাহীন , আতাউর রহমান মিলাদ, সফিয়া জাহির, মাজেদ
বিশ্বাস, সাইফ উদ্দিন আহমদ বাবর, ওয়াহিদ জালাল, ফারুক আহমেদ রনি, আব্দুল মুমিন ক্যারল, শিহাবুজ্জামান কামাল ,
মোহাম্মদ দিনার, সৈয়দ আকামত আলী রুবেল,
খাদিজা শাহজাহান, কাদের মাহমুদ, সালেহা চৌধুরী , আবু মকসুদ , দিলু নাসের , কাজল রশীদ প্রমুখ অন্যতম।
( আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি , ভুলবশত : কারো নাম বাদ পড়লে। তবে মনে এলে নাম যুক্ত করবো । অথবা কেউ মনে করিয়ে দিলে বাধিত
হবো )।
....................
এই যাদের নাম উল্লেখ করলাম , তারা এখন ক'জন লেখালেখিতে সক্রিয় আছেন , কিংবা কতোটা লেখালেখি করছেন - তা পাঠক - পাঠিকা মাত্রে
সকলেরই জানা। সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে ইতিমধ্যেই তাদের গন্তব্য।
একজন আব্দুল মুমিন ক্যারল কিংবা একজন মোহাম্মদ দিনার বেছে
নিয়েছেন নিজ নিজ লেখালেখির আদর্শ । একজন লেখক এভাবেই
কালের খাতায় নিজের ছাপ রেখে যান ।
( চলবে ............. ক্রমশ : )
ছবি - আব্দুল গাফফার চৌধুরীর সাথে , নতুন দিন কার্যালয়ে - ১৯৯২ ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪১