গত কয়েক দিনে কিছু নতুন জিনিস শিখলাম। আসলেই জ্ঞানের শেষ নাই। সারাজীবন ই শিখে যেতে হবে। তবে এগুলো শিখে নিজেকে খুব আধুনিক মনে হচ্ছে। এতোদিন কিভাবে এতো ব্যাকডেটেড ছিলাম ভেবে খুব আফসোস হচ্ছে। কেন এসব আগে দেখিনি, বুঝিনি!!?
*
আগে জানতাম সাংবাদিক মানেই অনেক জানা। স্মার্ট পিপল। প্রচুর পড়াশোনা করে তারা। গত কয়েক বছরে তো সেই ধারনা পুরো শেষ। যাই হোক এসব তো পুরাতন ক্যাচাল। নতুন ক্যাচাল হল ফটোগ্রাফি। আমি জানতাম না যে এই কাজের জন্যও কোন রকম পড়াশোনা লাগেনা। এমন কি কোন প্রশিক্ষন ও না। আসলে আমার চেনা ফটোগ্রাফাররা পাঠশালা থেকে শুরু করে অনেক জায়গাতেই কোর্স করে তারপর কাজ শুরু করেছে তো তাই এটা মাথায় আসেনি যে কোর্স ছাড়াও মাঠে নামা যায়।
একটা SLR/DSLR থাকলেই নাকি হবে!! ছবির ক্যাপশন লিখতে গিয়ে এক লাইনে ৩ টা বানান আর ৪ টা গ্রামার ভুল করলেও সমস্যা নাই। এমন কি SLR/DSLR ফুলফর্ম বাংলা বা ইংলিশে লিখতে গিয়ে ফিট খেয়ে পড়ে যাওয়া পাবলিক ও নাকি ফটোগ্রাফার হতে পারবে শুধু যদি থাকে একটা ক্যামেরা, ক্যামেরা ধরার জন্য ও ক্লিক করার জন্য ১০ টা আঙ্গুল আর পাড়া প্রতিবেশি/কাজিন/ভাই বোনের মধ্য থেকে নেয়া কামেরার সামনে দাঁড়াতে আগ্রহী কিছু পিস। আর ছবি পিসি তে নিয়ে রঙ করা জানলে তো কথাই নাই।
যার কাছে এই জ্ঞান প্রাপ্ত হলাম উনি রাজশাহীতে নাকি একটা অফিস ও নিয়েছেন বিয়েতে ছবি তোলার জন্য!!
**
ধর্ম নিরপেক্ষতা! নিরপেক্ষতা নিয়ে একটা কথা আমি বলছিলাম কয়েকদিন আগে। নিরপেক্ষতা হল একটা মুখোশ, ভণ্ডামি। যারা নিরপেক্ষতা দেখায় তারা হয় ভীতু নাহয় কোন স্বার্থসিদ্ধি করতে চায়। কে যেন বলেছিল একমাত্র শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ না। তাই নিরপেক্ষতার এই নাটক করে আর কতদিন! তবে যেটা নতুন জানলাম তা হল ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ইসলাম বিরোধিতা।
যে যত বেশী ইসলাম বিরোধী সে তত প্রগতিশীল। অন্য ধর্ম নিয়ে কিছু বললেই তা যতই যুক্তি দিয়ে হোক আপনি পাকি দালাল, ছাগু। মানে পাকি স্বপ্নে বিভোর হারামি গুলোরে নিয়ে বলা যাবে কিন্তু হিন্দুস্তানের স্বপ্ন দেখে দেখে রাতে ঘুমের মধ্যে ভিজে ওঠা সুযোগ সন্ধানী দের কিছু বলা যাবেনা।
“তুমি মহারাজ চেতনাবাজ হলে আজ, আমি আজ ছাগু বটে!!”
কিন্তু যদি ইসলাম বিরোধী কিছু বলে ফেলতে পারেন তাহলেই কেল্লাফতে। আপনি মুক্তমনা। নাস্তিকতা নিয়ে আমার সমস্যা নাই। কিন্তু নাস্তিকতাও আজকাল ভেজালযুক্ত। শুধু আল কুরআন এর কিছু আয়াত নিয়ে প্যাঁচাতে পারলেই হবে। বাইবেল গীতা থেকে জাস্ট দূরে থাকতে হবে। তাহলেই আপনি হিট। তবে পরকীয়া করে মার খেয়ে হসপিটালে/জেলে গেলে কি করতে হবে তার জন্য গুরু এ-চিপ মহি মিয়া আছেই।
***
নারী স্বাধীনতা বলতে আমি বুঝতাম মেয়েদের সুস্থ ভাবে চিন্তা করার, কাজ করার বা সামনে এগিয়ে যাওয়ার অধিকার। তারা শুধু জৈবিক চাহিদা পূরণের বা ঘর সাজানোর বস্তু না সেটার একটা যুক্তি সমৃদ্ধ ধারনা সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার যে চেষ্টা সেটাকে নারিবাদিতা বলেই জানতাম।
এখন নতুন জানলাম ইচ্ছামত পোশাক পড়া, গভীর রাত পর্যন্ত বাইরে থাকা আর রান্না না করার অধিকার হল নারী স্বাধীনতা। প্রতিটা নারীবাদী বই, ব্লগে ঘুরে ফিরে এই তিনটা কথাই উঠে আসে বারবার। এর বাইরে চিন্তা যায়না নারী স্বাধিকার কর্মীদের!!
আর নারিবাদিতা হয়ে গেছে এখন সস্তা পাবলিসিটির একটা প্ল্যাটফর্ম। মেয়েরা নগ্ন হয় কারণ পুরুষ বিকৃত মানসিকতার। মানলাম পুরুষ বিকৃত। তা যে এতো সহজে নিজের সম্মান বিকোতে চায় সে কি নিজেকে সম্মান করে? নিজের বুদ্ধি কে কাজে না লাগিয়ে সহজ রাস্তা খুঁজে নিয়ে সেটা আবার সমাজের উপর চাপানো তো ঠিক না। সমাজ চায় তো কত কিছুই সব মানেন। আপনাদের আশেপাশের মেয়েরা হয়ত এমন, আমার পরিচিতরা না । তারা এসব নিচু মানসিকতা বা যুক্তির উরধে থেকেই ভাবতে জানে।
বেগম রোকেয়া কথার সাথে সাথে কাজ ও করে গেছেন। আপনি তো ঢলাঢলি করেন, হাবি(!!) দ্বারা প্রেগন্যান্ট করে ফেলা কাজের মেয়েকে জোর করে ফেরত পাঠান আর এক পেগ হুইস্কি খেয়েই ভাবেন সব শালা পুরুষকে দিলাম পেছনে ফেলে। এই হল আপনার দৌড়। তাই ঢালাও ভাবে না বলে নিজের কথা বললে ভাল। আপনার মনের কুৎসিত রূপ, কুৎসিত আকাঙ্খার কথা বললেই ভাল। কারণ নারিবাদিতার আসল রূপ এটা না। আপনি এটাকে এমন ভাবে উপস্থাপন করেন নিজের নোংরামিকে জাসটিফাই করার জন্য।
আর যারা যারা আমার এই জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করেছেন তাদের অশেষ ধন্যবাদ। আশা করি অচিরেই তাদের তাদের যোগ্য জায়গায় দেখতে পাব।