ডাক্তার জাতটাই খারাপ। এরা নিজেদের দরকারে কখনো এক হতে পারেনা। এক হতে গেলে সরকারী বেসরকারি নিয়ে ঝগড়া লাগে। এক হতে গেলে সামনের মেডিকেল পিছনের মেডিকেল নিয়ে ঝগড়া লাগে। এক হতে গেলে প্রাক্তন সন্ধানীয়ান বা এম সিয়ান নিয়ে ঝগড়া লাগে। এর বাইরে বড় বড় বুঝদারদের স্বাচিপ- DAB মারামারি তো আছেই। এর বাইরে আছে চিকিৎসক সমাচার টাইপ কিছু পেজ যেখানে ডাক্তারদের সমস্যা তুলে ধরবে কিন্তু কেউ যুক্তি -পাল্টা যুক্তি দিলেই তেনাদের আঁতে ঘা লাগে। আর বি এন পি পন্থী হলে তো খবর আছে। তেনারা আবার চেতনাবাজ।
এত পড়াশুনা করে ডাক্তার হয় একেকজন যা হয়ত অন্য বিষয়ে পড়তে থাকা কেউ কখনই বুঝবে না। তার আগের ১২ বছরের আতলামি তো আছেই। তারপর পাশ করে খ্যাপ মেরে মেরে পোস্ট গ্র্যাড কর নইলে বি সি এস দিয়ে এমন কোন হসপিটালে চলে যাও যেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যাবস্থা ও নাই। দুই বছর গ্রামে থাকতে হবে যদিও কোন সুবিধা দেয়া হবেনা। না থাকলে শাসন করা হবে!! আরও পড়াশুনা করে মোটামুটি খেয়ে পড়ে বাচার মত অবস্থায় আসতে ৮/১০ বছর পার। ততদিনে অনেক মাঝারি রেজাল্টের বন্ধুদেরও গাড়ি হয়ে যায় বাড়ি হয়ে যায় আর ডাক্তারের বউ ভাবে কেন ক্যারিয়ার দেখে ডাক্তার বিয়ে করলাম। এর চেয়ে তো কাস্টমস এর ঝাড়ুদার ও ভাল হত।
যাক এসব বৈষয়িক ব্যাপার। এসব ডাক্তারদের মাথায় আনা যাবেনা। ডাক্তারদের কাজ তো সেবা করা। স্যরি একমাত্র ডাক্তারদেরই কাজ সেবা করা এই দেশে। অন্যরা না করলেও কিছু আসে যায়না। একমাত্র ডাক্তাররাই এই দেশে জনগনের টাকায় পড়ে আর কেউ না। একমাত্র ডাক্তারদের ক্ষেত্রেই “Human Rights” শব্দটা খাটেনা হুলো মিজানদের মতে। অবশ্য সে রানা প্লাজার ঘটনাতেও বেশ চুপ ই ছিল। যাই হোক যার নিজের প্যান্ট ধরে রাখতেও ফিতা লাগে তার কথা বেশি গুরুত্ব না দেই। অশিক্ষিত মেম্বার, চেয়ারম্যান বা তাদের চেলারা এসে কলার ধরলেও জি হুজুর জি হুজুর করে যেতে হবে। কারণ ডাক্তারদের মান-সম্মান বোধ থাকা যাবেনা। কারণ তুমি এই মহান দেশের মহান নাগরিকদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট... কীটস্য কীট, বালস্য বাল।
ডাক্তারের সনদ কেঁড়ে নেয়ার একটা দাবি দেখলাম সাংবাদিক ভাইদের। ভাইরা সবাই কোন না কোন ভাবে অনেক কিছু তো কেঁড়ে নিল ডাক্তারদের থেকে, আপনারা তো কমই চাইলেন। তবে কথাটা হল ডাক্তারদের তো আপনাদের মত এমন সুবিধা না যে PSC/JSC এর সার্টিফিকেট দিয়েও কাজে নেমে পড়তে পারবেন। এমন কি সার্টিফিকেট না থাকলেও চলবে। যদিও curious mind wants to know কয়জনের সাংবাদিকতার উপর ডিগ্রী আছে। তাই সার্টিফিকেটের দাম বুঝেন না। কথায় কথায় কেঁড়ে নিতে চান।
গেটের চিপায় দাড়ায় থাকেন। যে বেডটা ডাক্তার এসে ঘুরে গেছেন সেখানে ডাক্তার থাকা অবস্থায় না গিয়ে পরে যান আর গিয়েই রোগীকে শিখায় দেন যে যখন জিজ্ঞেস করবেন চিকিৎসা কেমন সে যাতে বলে ডাক্তার আসেইনা। ডাক্তারের কাছে গিয়ে ঘুষ চান আর না দিতে চাইলে হুমকি দেন যে তার নামে কোন অশ্লীল খবর ছাপাবেন। কিন্তু কখনও কি ভুলেও একবার মনে হয়না ডাক্তারদের অসুবিধা নিয়ে কিছু লেখি??!! উপরে তো অনেক কিছু লিখলাম আবার অনেক কিছু বাদ ও গেল। শুধু একটা কথা বলি- উৎসবের সময় সবাই আপনজনের কাছে যান এমন কি আপনারাও। না যেতে পারলে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যান আর পারলে সেখান থেকেই রিপোর্ট করেন ক্যামেরাসহ। অনেক ডাক্তার ছুটি না পেয়ে কিন্তু হসপিটালেই বসে থাকেন। আর তিনদিন পর যখন আপনাদের ছুটি শেষ হয়, পোলাও কোর্মা খাওয়া শেষ হয় এসে সবার আগে এইটাই রিপোর্ট করতে ভালোবাসেন যে হসপিটালে ডাক্তার সল্পতা। হা হা হা। ও আসলে আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম অন্য সবকিছুর মত পারিবারিক টান ও ডাক্তারদের থাকা যাবেনা।
সাংবাদিক ভাই , হুলো মিজানদের মত সবাইকে বলি- এখনো দেশে ডাক্তারদের উপর মানুষের ভরসা অনেক। আছে তাদের চিকিৎসার প্রতি আস্থা। সেটা বানিয়ে বানিয়ে নিউজ না করে একটু ঘুরলে ফিরলেই বুঝবেন। মানুষের মাঝে একটুও যদি অবিশ্বাস বেড়ে থাকে তা আপনাদের ছড়ানো মিথ্যার কারনেই বেড়েছে। ৯৫% ডাক্তার সেবা করে যায় কিন্তু আপনাদের লাফালাফি বাকি ৫% নিয়ে। সাংবাদিক বা হুলো মিজানদের ৯৫% ই তো ভণ্ড কই সেটা নিয়ে তো কোন কথা উঠেনা। জনগন চিকিৎসা পায় বলেই, জনগন সম্মান করে বলেই এখনো সব পরিবারেই বাবা মা সন্তান কে ডাক্তার বানাতে চায় সবার আগে। যদি এত ঘৃণা থাকত এটা চাইত না। এই মরার দেশে সবচেয়ে কম সুবিধা পেয়েও, দুর্বল অবকাঠামো পেয়েও ডাক্তাররা যে সেবা দেয় তা মহাকাব্যিক পর্যায়ের। মানতে না চাইলে বলি এটা হলুদ সাংবাদিকতায় প্রথম হওয়ার চেয়ে ভাল।
ডাক্তার ভাইরা সব ভুলে এক হবেন আশা করি। সবাইকে দেখানোর সময় এসেছে বিনয়ের সময় শেষ, মুখ বুজে সহ্য করার দিন শেষ। এখন একটা মারতে আসলে ১০০ টা খেতে হবে।