অনেক ব্যাস্ত জীবন। আবেগ, ভালোবাসা বা শ্রদ্ধা কোন কিছুর জায়গা নেই। পরিবার দরকার আছে কিন্তু তা যেন বোঝা হয়ে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এমন সমাজেই মা দিবস দরকার। সারা বছর বৃদ্ধাশ্রমে পচে মরা মাকে যাতে তার অতি ব্যাস্ত ছেলে মেয়েরা ভালবাসার টানে না হোক চক্ষু লজ্জায় হলেও দেখতে যায় তাই এই দিবস। তাছাড়া আরচিস বা হলমার্ক এর পুঁজিবাদী আইডিয়া তো আছেই মানুষকে জোর করে তাদের কার্ড কেনানোর।
যাই হোক আমি বলছি না যে দিবসটা পালন করা যাবেনা। তবে তা নিয়ে এত মাতামাতি আমাদের না করলেও চলবে। কারণ আমাদের সামাজিক বা পারিবারিক বন্ধন এসব দিবসের অপেক্ষায় থাকেনা, তা এমনিতেই অনেক শক্ত । দুই একটা ঘটনা থাকতেই পারে উল্টা যেখানে সন্তান মাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে আসলো বা বউ এর কথায় মা এর গায়ে হাত তুলল। সেটা চেপে ধরে ঝগড়া করতে না আসলে খুশি হব। কারণ তর্কের আগে জেনে নিতে হবে “Exception can’t be example”। এসব ঘটনা আমাদের সমাজে বা পরিবারে অনেকটাই রেয়ার।
আমরা আমাদের রেজাল্ট থেকে শুরু করে সব ভাল কাজের ক্রেডিট মাকে দেই। জীবনের প্রথম পাওয়া বেতন থেকে মার জন্যই প্রথম কিছু কিনি বা পুরোটাই মার হাতে দিয়ে দেই। কষ্টে থাকলে বা অসুখ হলে মাকেই ডাকি, মায়েরই সেবা সবচেয়ে আপন মনে হয়। এমনকি যে মেয়েকে বিয়ে করতে চাই তার মাঝে মায়ের ছায়া খুঁজি মায়ের মমতা খুঁজি।
তারপরেও দিবস পালন করতে চাই যেহেতু আমরা তাই শুধু একটা কার্ড কিনে বা ফেসবুকে একটু আহ উহ না করে নাহয় মাকে আজকে সময় দেই। মাকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাই না হয় বাইরে কোথাও খেয়ে আসি। পারলে একটা জামদানি নাহোক তাঁতের শাড়ি ই কিনে দেই। এসব পুঁজিবাদী অংশে যেতে না চাইলে এক কাজ করিনা কেন- মাকে গিয়ে বলি “আজকে রান্না আমি করব।দেখ তো খাওয়া যায় কিনা।“ তাও যদি না করতে পারি তাহলে মাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকলেও সে ততটাই খুশি হবে। যাদের মা নেই বা কাছে নেই তারা নাহয় কোন এমন মায়ের সাথে সময় কাটাই যার সন্তান নেই বা থেকেও নেই।
ও আরেকটা কথা – একটা পোস্ট বারবার দেখলাম সন্তান জন্ম দেয়ার কষ্ট নিয়ে, ব্যাথা নিয়ে। ভাইদের আবেগে পানি ঢালতে চাইনা। তবে এর কাছাকাছি বা বেশি (তর্কসাপেক্ষ) ব্যাথা আরেকটা আছে। কিডনির পাথরের ব্যাথা।
আমার পোস্ট দেখে যারা মনে করতে শুরু করেছেন যে আমি অনেক বুঝদার ছেলে সন্তান তাদের বলি যে আমরা চার ভাই বোন। আমার জন্মের সময় নাকি আমার মা সবচেয়ে খুশি ছিলেন। এখন হয়ত আমাকে কেন জন্ম দিয়েছেন এটা নিয়েই তার সবচেয়ে বেশি আফসোস।