প্রায়শই মনে হয় আমরা সবাই ভীড়ের মাঝে হাটি, কিন্তু কজন সেই ভীড়ের অংশ হতে পারি? দুচোখ মেলে তাকিয়ে থাকি ঠিকই কিন্তু আসলে আমরা কী দেখি?
বেয়েখালে পিপড়ের বাড়ি তছনছ করে দেই, গাংচিলের চোখে হারিয়ে ফেলা আশৈশব ক্ষোভ আমাদের চোখে পড়েনা। দলছুট ওই ঘাসফুল টাকে ভোরের শিশির কোন অদ্ভুত আবেগে আগলে রাখে, তা কি আমরা জানি? দৃষ্টির ওপারেও কি সমুদ্রে নীল জল থাকে? আনমনে ছবি আঁকতে বসলে আমরা কি তখনো সাদা রঙ আকাশই আঁকি? কেউ কি কখনো আমাদের বলেছে, মেঘের কষ্টগুলোই ঠিক রংধনু হয়ে ফিরে আসে? বিকেল গুলো আসলে রোদের অভিমানে ভরা সকালবেলা? কেউ বলেনি। কেউ বলে দেয় না।
দেয়না বলেই আমাদের জীবন খুজে নিতে হয়। কেউ কেউ জীবন খুজে পায় বিষন্ন হ্যাংআউটে, সেলফিস্টিকের আলোর ঝলকানিতে, তামাকের ফ্রেভার মাখা বিষ-ঠোঁটে, মাঝরাতের ঘুমজমাট রঁদেভু তে! কেউ কেউ পায় রোদের আড়ে, ধানশালিকের মাঠে, কাঠগোলাপের দলে, ঝুম বৃষ্টিতে কদম ঝড়ে পড়া পুকুরপাড়ে। কেউ পায় স্রোতে, কেউ পায় ক্রোধে! কেউ নিজেকে আগলে রাখে পরম যত্নে, কেউ নিজেকে সঁপে দেয় ভীষণ অরণ্যে। কেউ স্থীর, কেউ বেগে ধায়, কেউ ভুল, কেউ ভুলে রয়।
সুখময় পরিণতি নেই জেনেও প্রেয়সীর কোলে মাথা রেখে স্বপ্ন বুনতে হয়, আগলে রাখতে হয় বাহুডোরে। অনেক অনেক স্বপ্নের বসতি গড়তে হয় ওই জারুল গাছের নিচে, নির্ঘুম রাতগুলো কেটে যায় পরস্পর অনিমেষ আবেগে! শেষবিকেলের বৃষ্টি জলে মাথা ভিজিয়ে পাগলের মত দৌড়োতে হয়। আকাশ ভর্তি তারা দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে না থাকা বারণ! মাছরাঙ্গার ডানায় রোদে ঝিকিয়ে ওঠা জলবিন্দু দেখে শিউরে ঊঠতে হয়। ভোরবিরেতে বেড়িয়ে পড়তে হয় সূর্যোদয় দেখতে। জ্বলের ভেতর পা ডুবিয়ে শ্যাওলাদের স্পর্শ নিতে হয়। সব কিছুর শেষ আসে ঘুম। হর্ষ-বিষাদ-ক্রোধ-রোগ... এবং ঘুম। আমাদের ঘুমোতে হয়।
মানুষ হয়ে জন্মেছি, তাই।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৫২