পৃথিবীতে এমন কিছু রহস্য আছে যেগুলির কোন যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখা এখনো বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীরা বের করতে পারেন নি।।পৃথিবীতে যুক্তিবাদীদের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দিব্যি সকল যুক্তির বাইরে অজানা অন্তরালে নিজেকে ঢেকে রেখেছে রহস্যগুলো।আসুন দেখি পৃথিবীর সর্বকালের সবচেয়ে বড় রহস্যগুলি।
তুরিনের শবচ্ছেদঃ
তুরিনের শবচ্ছেদ হচ্ছে একটি লিনেন কাপড় যাতে একটি মানুষের প্রতিবিম্ব দেখা যায় যে মানুষটি ক্রুসবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে বোঝা যায়।অধিকাংশ ক্যাথলিক মনে করেন যে এটি যীশুর প্রতিবিম্ব।এটি বর্তমানে তুরিনের সেন্ট জন দি ব্যাপটিস্টার ক্যাথড্রিলে রাখা আছে।অসংখ্য বৈজ্ঞানিক গবেষণা স্বত্বেও আজ পর্যন্ত বের করা সম্ভব হয় নি কিভাবে কাপড়ের উপর প্রতিবিম্বটি তৈরি হল।এমনকি আজ পর্যন্ত তার কোন রেপ্লিকেশন করা সম্ভব হয় নি। রেডিও কার্বন টেস্ট বলে যে প্রতিবিম্বটি নাকি মধ্যযুগের ।
নাকি এডেসার এবং তা ৪র্থ শতকের।এর সাথে,পাশাপাশি আর একটা কাপড় “সুদারিয়াম” যেটি এমনকি বাইবেলিকাল সময় থেকে পরিচিত।বলা হয় যে,সমাধিতে কাপড়টি দিয়ে খ্রিস্টের মাথার প্রতিবিম্ব দিয়ে নাকি ঢাকা।১৯৯৯ সালে মার্ক গাস্কিন কাপড় দুইটির মধ্যে কোন সম্পর্ক আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখেছেন।তিনি বলেন যে,কাপড় দুইটি একই মাথার প্রতিবিম্ব অঙ্কিত আছে।আভিনোয়াম দ্যানিন ,আর একজন সময়কালীন বিখ্যাত গবেষক দাবি করেন যে,দুইটি ছবিতেই একি রকম পোলেন দানা পাওয়া গেছে।
কিন্তু কথা হল,কিভাবে এটি আসল???কোথেকে আসল????কার ছবি????কেন শতাব্দীর পর শতাব্দী তিকে আছে কোন ক্ষয় ছাড়াই???কিভাবে???রেপ্লিকেশন কেন সম্ভব নয়???উত্তর অজানা।
ম্যারি কেলেস্টেঃ
এটি একটি জাহাজের নাম।কিন্তু নিছক সাধারণ দশটা জাহাজের মত না এটি।এটির পূর্ব নাম ছিল “আমাজন”।এটি ছিল ১০৩ ফুট লম্বা এবং ওজন ২৮০ টন। পরবর্তী ১০ বছর ধরে এটি বেশ কিছু দুর্ঘটনার শিকার হয়।বেশ কয়েকবার এই অলক্ষুনে জাহাজটার মালিকবদল হবার পর অবশেষে তা নিউ ইয়র্কের একটি স্যালভিজ হাউজে ৩০০০ ডলারে বিক্রি হয় এবং তা ম্যারি কেলেস্টে নাম ধারণ করে।
এখন কাহিনী হচ্ছে যে,তিনটি অভিযানের অভিজ্ঞতাপূর্ণ বেঞ্জামিন ব্রিগস জাহাজটির নতুন ক্যাপ্টেন নিযুক্ত হন।১৮৭২ সালের ৭ নভেম্বর ক্যাপ্টেন ব্রিগস,তার স্ত্রী,মেয়ে এবং ৮ জন ক্রু নিয়ে মেরী কেলেস্টে যাত্রা শুরু করে নিউ ইয়র্ক থেকে।১৭০০ব্যারেল আমেরিকান মদপূর্ণ জাহাজটির গন্তব্য ছিল জেনোয়া।ক্যাপ্টেন,তার পরিবার এবং ক্রু দের আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায় নি।জাহাজটি জিব্রাল্টার প্রণালীর কাছে ভাসতে দেখা যায় প্রাণশূণ্য অবস্থায়। এমনকি জাহাজে কোন ধস্তাধস্তির চিহ্নমাত্র ছিল না।শুধুমাত্র ক্যাপ্টেনের লগবুক নিখোজ ছিল।
১৮৭৩ সালে স্পেনে দুটি লাইফবোট পাওয়া যায় ৫ টি মৃতদেহ নিয়ে ভাসছে।যদিও কখনও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি লাশগুলোকে।
প্রশ্ন হল,সবাই কই গেল????প্রাকৃতিক কোন কারণ হলে কি সামান্যও চিহ্নও থাক্তো না???এরকম উধাও হবার মানে কি???
টাওস হামঃ
মৃদু একটা শব্দ যা অসংখ্য জায়গায় বিশ্বব্যাপী বিশেষত আমেরিকা,ইংল্যান্ড এবং উত্তর ইউরোপে শোনা গেছে। মৃদু ডিজেল ইঞ্জিনের মত শব্দটি শোনা যায় নীরব পরিবেশে। আশ্চর্যের বিষয় হল যে, শব্দটির উৎস হল অজানা।কোন কিছুই নাই এমন সময় হঠাৎ শব্দটি শোনা যায়।শব্দটি মাইক্রোফোনে বা কোন অ্যান্টেনায় ধরা যায় না শব্দটিকে।
১৯৯৭ সালে একদল গবেষক শব্দটিকে শোনেন মেক্সিকোর টাওস শহরে।সেখানে প্রায়ই শনা যায় শব্দটি। শব্দটির নাম হল “হাম” যার অর্থ সমাধানের সন্ধান।আজ পর্যন্ত শব্দটির কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় নি।
কেন শব্দটি হয়????কে বা কারা করে????কিভাবে শব্দটি হয়???সারা বিশ্বে এত বড় বড় বিজ্ঞানী থাকতে কেনই বা তারা কোন কুল্কিনারা খুঁজে পাবেন না????
ব্ল্যাক ডাহলিইয়াঃ
১৯৪৭ সালে ২২ বছরের এলিজাবেথ শর্ট কে লস অ্যাঞ্জেলসের এক পার্কিং লটে দ্বিখন্ডিত অবস্থায় পাওয়া যায়।শর্ট এর নাম ব্ল্যাক ডাহলিয়া হয় ১৯৪৬ সালে কারন সে এই নামে একটা মুভিতে(blue dahlia) অভিনয় করেছিল।কিন্তু জেলা অ্যাটর্নি মনে করে মৃত দেহ কে সাংবাদিকেরা নাম দিয়েছিল।লস অ্যাঞ্জেলসের ইতিহাসে এত বড় তদন্ত আর হয় নি।কিন্তু কাহিনী হল শর্টের দ্বিখন্ডিত মৃতদেহ আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায় নি।যে মর্গে রাখা হয়য় সেখান থেকে কড়া পাহারা সত্ত্বেও বেমালুম উধাও হয়ে যায়।তার বাড়িটা ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়।সেই ভুতুরে বাড়ি থেকে নাকি শর্টের ব্ল্যাক ডাহলিয়া চরিত্রের ডায়লগ শোনা যায়।
এরকম ঘটনা গুলি আসলে কোন ব্যাখার আওতায় পড়ে না।ব্যাখা দেয়া যায় না।কেউ কেউ দিলেও তা যথেষ্ট না।আরো কিছু রহস্য এবং পরে সেগুলির এখন পর্যন্ত পাওয়া সেরা যুক্তিগুলো নিয়ে আবার হাজির হব।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ২:৪৯