somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শততম পোস্টের তিনটি সিনেমা রিভিউ!

১২ ই মে, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা আমার শততম পোস্ট!
সামহোয়্যারইনব্লগে লিখছি দশ মাস পাচ দিন। দশ মাস দশ দিন থেকে পাচ দিন কম - তাতে সমস্যা নেই, সিজারের এই যুগে বোধহয় খুব কম মাই দশ মাস দশ দিন সন্তানকে পেটে পুষে রাখেন, বেশির ভাগই সাড়ে আট মাসের পর নিয়ে আসেন সন্তানকে এই পৃথিবীতে। সে নিয়মের সবচেয়ে বড় ব্যাঘাত ঘটিয়ে আমি সামোয়ারে ফাস্ট পাতায় এক্সেস পাই মাত্র তিন দিনে। এই দশ মাস পাচ দিনে পোস্ট লিখলাম মাত্র ১০০ টা, মন্তব্য করেছি ৭৮৯ টি (আমি বোধহয় বেশ কৃপণ, এক্ষেত্রে), পেয়েছি ১২৫৬ টি আর ব্লগ দেখা হয়েছে মোট ১৮৫০৪ বার। আমি সন্তুষ্ট। আমার জগত একান্তই আমার।

শততম পোস্ট উপলক্ষে তাই তিনটি মুভির রিভিউ!

Ronin (১৯৯৮)


"সামুরাই যোদ্ধাদের একটি গ্রুপ ছিল যাদের লিডার অন্য এক লিডারের বিশ্বাসঘাতকতায় মারা যায় এবং যোদ্ধারা হয়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন এবং বিশৃঙ্খল। তারা ডাকাতিসহ নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এ সকল লোক যাদের কোন নেতা ছিল না তাদের বলা হত রোনিন!"

জন ফ্রাঙ্কেনহেইমার এর পরিচালনায় রোনিন মুভির একদম শুরুতে এই টাইটেল পরিচিতির মাধ্যমেই আভাস পাওয়া গেল যে মুভিটি ভালো হবে। ঘটনাস্থল প্যারিসে। আছেন রবার্ট ডি নিরো। একটি ক্যাফেতে জড়ো হয় কিছু মানুষ - জনা চারেক দুর্ধর্ষ বন্দুকবাজ, একজন টেকনোলজি এক্সপার্ট - এরাই রোনিন। আর আছে ডিয়েড্রা, চোখা মুখের অধিকারি মেয়েটি যে কিনা এই পাচজনকে দিয়ে একটি কাজ করিয়ে নিতে চায়। বিনিময়ে পাওয়া যাবে ডলার।

কাজটি কঠিন, একটি বক্স উদ্ধার করতে হবে একটি সশস্ত্র গ্রুপের কাছ থেকে। কাজ শেষে পাওয়া যাবে টাকা। কিন্তু সমস্যা হল বাক্সের সাথে কতলোক থাকবে, তারা কি ধরনের সে বিষয়ে কিছু জানা নেই। সুতরাং কাজ শুরু হয়ে গেল। এর মাঝে অস্ত্র কিনতে গিয়ে সংঘর্ষ এবং পুলিশের তাড়া। বাক্স উদ্ধার হয়ে গেল স্যামের বুদ্ধিতে (নিরো) কিন্তু ফাকি দিয়ে নকল বাক্স নিয়ে পালাল গ্রেগর, টেকণলজি এক্সপার্ট। এদিকে জানা যাচ্ছে না বাক্সে কি আছে, জানা নেই স্যাম এর ব্যাকগ্রাউন্ড কি। তবে সাথে আছে ভিনসেন্ট (জ্যা রেনো, দি দ্যা ভিঞ্চি কোড) । দুজন আর ডিয়েড্রা মিলে খুজে বেড়ায় গ্রেগরকে, একসময় ডিয়েড্রাও বেইমানী করে।

টানটান উত্তেজনার মুভি। দুটো কার চেজ আছে, গোলাগুলি আছে বেশ কবার। থিম মিউজিক টা অসাধারন। বিনা দ্বিধায় উপভোগ্য একটি মুভি!

Body of lies (২০০৮)


রাসেল ক্রো আর লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও এই দুই অসাধারন প্রতিভাবান অভিনেতাকে যিনি একত্রিত করে 'মিথ্যার বেসাতি' সাজিয়েছেন তিনি আরেক প্রতিভাবান পরিচালক রিডলি স্কট যিনি কিনা এর আগে এলিয়েন, গ্লাডিয়েডর, ব্লাক হক ডাউন এবং আমেরিকান গ্যাঙস্টারস এর মত অসাধারন ফিল্ম বানিয়েছেন। তবে এই মুভিটি ভিন্ন, এই প্রথম রিহলি স্কট টেররিজম, বিশেষ করে মুসলিম টেররিস্টদের নিয়ে মুভি বানিয়েছেন।
মুভিতে ক্যাপ্রিও একজন সিআইএ এজেন্ট, নাম ফেরিস, কাজ করে মধ্যপ্রাচ্য সহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে। আর ক্রো হলেন তার বস, নাম হফম্যান, স্যাটেলাইট ক্যামেরার মাধ্যমে সর্বক্ষন নজরে রাখছে ফেরিস কে। ইরাক, তুরস্ক, সিরিয়া, জর্ডান - দেশগুলোতে ঘুরে বেড়ায় ফেরিস, তার অসাধারন সব যোগ্যতা, আরবীতে কথা বলতে পারে, জিহাদ নিয়ে কোরানের আয়াত পাঠ করতে পারে অবলীলায়। জর্ডানের ইনটেলিজেন্স এর সহযোগিতা নিয়ে ধরতে চেষ্টা করে আল সালিম কে। এক পর্য়ায়ে সখ্যতা গড়ে উঠে আম্মানের মেয়ে আইশার সাথে। কিন্তু সব মুভিতে যা হয়, আইশাকে বাচাতে গিয়ে ধরা পড়ে ফেরিস, জবাই দেয়ার জন্য শোয়ানো হয় টেবিলে, চালু করা হয় ক্যামেরা, আর তলোয়ার নিয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানী দেয়ার জন্য তৈরী হয় মুজাহেদীনরা।

পুরা মুভি জুড়ে পরিচালক একটি ব্যাপারকেই প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করেছেন - সবই মিথ্যা। সিআইএ সহ অন্যান্য ইনটেলিজেন্স আর ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ - সবই মিথ্যাকে আশ্রয় করে, নিজেদের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য।
ভালো লাগতে পারে।

Atonement (২০০৭)


ব্রিটিশ ফিল্ম । অভিনয় করেছেন প্রাইড এন্ড প্রেজুডিস এর সেই সুন্দরী কায়রা নাইটলি। অসাধারন সব ল্যান্ডস্কেপ আর যুদ্ধোত্তর ধংসস্তুপের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে মুভিটিতে।

একই নামের উপন্যাসের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই এই মুভিতে চারটি অংশ। সময়টা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ব থেকে শুরু করে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। তেরো বছরের বালিকা যে একজন উঠতি বালিকা, ব্রাইওনি ট্যালিস, তার বড় বোন সিসিলিয়ার সাথে রবির সম্পর্কের ভিন্ন ব্যাখ্যা দাড় করায়। রবি তাদের ভৃত্যের ছেলে যে কিনা সিসিলিয়ার সাথেই ক্যামব্রিজে পড়েছে এবং এখন মেডিকেলে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনটি ঘটনাকে, তিনটিই যৌনতা সম্পর্কিত, ভুল ব্যাখ্যা করার ফলে ফেসে যায় রবি, ধর্ষনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়, সাজা হয়। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়, আর তাই যুদ্ধে যোগ দিতে হয় রবিকে।
এদিকে পরিবারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে রবির জন্য অপেক্ষায় থাকে সিসিলি। সময় কেটে যায়। বড় হয় ব্রাইওনি, সে এখন একজন নার্স। এবং একদিন জানতে পারে, রবি নয়, বরং তার ভাইএর বন্ধু পল মার্শাল।
পরের পর্ব ১৯৯৯ সালের। ব্রাইওনি এখন বৃদ্ধা, তার শেষ উপন্যাস এটনমেন্ট, যা একই সাথে তার প্রথম উপন্যাসও বটে, এবং বাস্তব উপন্যাস যার শেষটা বাস্তবের মতো নয়।

খুব ভালো লেগেছে মুভিটা দেখে। ভালোবাসার যে আবেগ তা সহজেই ছুয়ে যায়। মাস্ট সি মুভি!

শততম পোস্টের শুভেচ্ছা সবাইকে।
সিনেমাখোর গ্রুপে যোগ দিন!
৯টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×