somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাব্য কণা (৯৩-১০২)

১৬ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



৯৩।
ভালোবাসা অথবা ফাগুন বসন্ত সে তো একদিনের নয়,
ভালোবাসা মানে একে অন্যের প্রতি রইতে হয় বিনয়,
ভালোবাসা পেতে, দিতে তবে কেন করতে হবে অনুনয়;
মনের সাথে মিললে মন, তবেই বাড়ে ভালোবাসা, প্রণয়।

৯৪।
আত্মীয় স্বজন, বাড়ীতে কী সংসারে, একসঙ্গে থাকতে গেলে,
ঝগড়া বিবাদ, কথা কাঁটা, খোঁচাখুঁচি থাকেই, সংসার কখনো এলেবেলে;
তবুও বিপদ এলে, অথবা অসুখ ছুঁয়ে দিলে কারো,
সেবাযত্ন আদর, তার জন্য দোয়া, ভালোবাসার রঙ হয় গাঢ়।

কেউ অভিমান পুষে, কেউ নেয় মুখ ফিরিয়ে,
তবুও এক সঙ্গে সবার মিলেমিশে বসবাস, সুখের হাওয়া বয় সংসারে থিরথিরিয়ে।
একসঙ্গে বসবাস, নিয়ে কাঁটা কথা, ঝগড়া বিবাদ, যেমন কাঁটামুকুট ফুল,
একই সঙ্গে ফুটে থাকে, একই সঙ্গে সুখে ডানা মেলে, মাড়িয়ে সব বিতৃষ্ণা ভুল।

৯৫।
শিউলী ফুলের মতই জীবন, জীবন যেন দিনের মতই,
একদিন ঝরেই যেতে হয়, মনে বেঁচে থাকার অহংকার পুষি যতই;
একদিন শুভ্র ফুলের মতই, শুভ্র বসনে সেজে চলে যেতে হয় অচীনপুরি;
সময়... ফুলের আয়ূ আর মানুষের বয়স চুপিচুপি করে নেয় চুরি।

ধুলো মাটিতে মিশে যায় যেমন শুভ্র শিউলী ফুল,
মানুষের দেহও তেমন কাঁদা হয়, মাটি হয়, অন্ধকারে তলিয়ে যায়
মানুষের সত্য মিথ্যা শুদ্ধতা আর ভুল।

৯৬।
সুতোয় বাঁধা যদি থাকতো মেয়েবেলার দিনগুলো,
নিয়ে আসতাম টেনে কাছে
ফড়িংয়ের পিছন ছুটতাম ফের উড়িয়ে পথের ধুলো,
দোলনাটা টানাতাম গিয়ে উঁচু গাছে
যদি আসতো ফিরে আমার দিনগুলো সেই
পেরেশানী ঠেলে সময় কেটে যেতো আনন্দেই।

৯৭।
জারুল ফুল প্রহর পেরিয়ে শিমফুল প্রহরে এসে গেঁড়েছি জীবন ঘাঁটি,
একদা খালি পায়ে স্নিগ্ধতার আবেশ পেতে মাড়িয়েছি শিশির ভেজা মাটি,
জারুল প্রিয় তাই, এই রঙ ফুল দেখে আপ্লুত হই আবেগে,
সুখগুলো কী কেবল কৈশোরেই রাখা, তারুণ্যে অথবা প্রৌঢ় বেলা
ঢাকা পড়ে গেলো কালো মেঘে,
জীবনের সিঁড়িতে হোঁচট খেয়েও মনে ফিরিয়ে আনি জারুল রঙ,
এখন প্রেম খুঁজি না, কেউ ফুল দিক চাই না,
মনটারে উচ্ছল, কুঁড়িতে রাখতে চাই বরং।

৯৮।
তোমার মন সমুদ্দুরে কেবল গুয়ার্তুমির ঝড়,
তোমাতে মন রাখলে আমার মনে
বিতৃষ্ণা ঝরে অঝোর,
কী করে দেবো পাড়ি তোমার মন সমুদ্দুর,
আমি বৃষ্টি চাই আর তুমি হও গ্রীষ্ম রোদ্দুর!

খুব ইচ্ছে ঝড় ঝাপ্টা ঠেলে সে সমুদ্দুর দেবো পাড়ি,
মন বানিয়েছি তাই রঙধনু রঙ জাহাজ,
একশত দুই রঙের পাল টানিয়েছি মন বাড়ী,
উপেক্ষায় রোদ্দুর ঝাঁঝ
প্রেম হাওয়ার তোড়ে রঙবাহারী জাহাজ যাবে ভেসে,
ভিড়বে মন ঘাটে তোমার, বরণ করো ভালোবেসে।

৯৯।
নারীর জন্য এনে দাও নি বকুল বেলী শেফালী কিংবা হাসনাহেনা,
অথচ নারী তোমার জন্য কী না করেছে সেটুকুও যে বলবেনা;
নারীকে দাও নি ফুরসুত, সংসারের জালে রেখেছো বন্দি;
কখনো নারীকে করতে হেয় আঁটো মনে কত ফন্দি!

কেউ নারীকে ভালোবাসে, রাখে তার মনের খোঁজ,
কেউ নারীর জন্য আনে বেলীর মালা অথবা বকুল রোজ;
কেউ নারীকে দিয়ে সম্মান রাখে বুকের বামে,
আর কেউ নারীকে ব্যবহার করে ফেলে দেয় ডাস্টবিনে চামে।

১০০।
যদি রাখো মন বিষণ্ণ, তবে বিষাদই রবে তোমার জন্য
যদি ভাবো অসুখী তুমি, শুকনো খরায় যাবে ছেয়ে
তোমার মনোভূমি;
যদি ভাবো আমার নেই কেউ,
বুকে ভাঙ্গবে নিরন্তর ব্যথার ঢেউ।
যদি ভাবো আমি দুঃখী, কিছুই আমার হয়ে নেই,
তুমি আর নেই তোমাতে, রইবে না আর আনন্দেই।

যদি ভাবো ভালোবাসা, যদি ভাবো সুখী,
দেখতে পাবে সুখ ঝরে হলেই উর্ধ্বমুখী।
যদি ভাবো বিষাদ ঠুনকো, বিষাদের চেয়ে বড় আমি,
সময়গুলো তোমার হবে হীরের চেয়ে দামী।
যদি ভাবো ভালোবাসা, খুলে বসো সুখের খাতা,
দেখবে চারিদিকে সুখী হৃদয়,কী সুন্দর তাদের
জীবনের একেকটি পাতা।

১০১। শ্রমজীবীর জন্য........
কারো শ্রমের ঘাম ঝরে ঠিক দুপুর বেলা,
লোভের মূল্য কেউ কিনে খায় লোভনীয় ফল,
হিসেব করে জমানো পয়সায় কেউ তুলে সংসারের ঘানি
আর আহ্লাদ ছুঁয়ে বাপের পকেট হতে আগত ইনকাম
দিয়ে কেউ কিনে স্বাদ,
দাঁতে দাঁত পিষে কেউ করে সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য আনার কর্ম,
কী রোদ কী তুফান.... কী ঠান্ডা তবুও ঝরে তার দেহে শ্রমের ঘর্ম;

১০২।
মন কেন হবে শুকনো পাতার মতন
কেউ ছুঁয়ে দিলেই মর্মর ধ্বনিতে বুকে উঠবে ব্যথার রিনরিন সুর;
মন কেন হবে বিবর্ণ রঙ আকাশ
ছাই রঙা মনে কেন ভেঙ্গে পড়বে সহসা ব্যথার পাহাড়,
মন কেন অন্যের দেয়া ব্যথায় রবে কুঁকড়ে?

মন হবে ফুটা ফুল যেমন, স্বাধীনতায় পাপড়ি মেলা মন
যত ব্যথা যত বিষাদ সব ছুঁড়ে ফেলে মন থাকবে খঞ্জনা
মন হবে নাটাই ছেঁড়া ঘুড়ি,
মন হবে ডানা মেলা পাখি;
মনকে রাখতে হবে ফুরফুরে,
একটাই তো জীবন মন থাকবে সুখী হরদম নিজের মতন
মানুষের দেয়া কষ্টে মন কেন থাকবে অযথা বিমর্ষ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:১৯
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম বিহীন বিশ্ব গড়ার চেষ্টা বিশ্ব জনসংখ্যা অনেক কমিয়ে দিবে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৫০



নেতানিয়াহু বলেছে তাদের সাথে অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র আছে। সে মুসলিম বিশ্বকে বড় রকমের হুমকি দিয়েছে। সে গণহত্যা চালাচ্ছে। আত্মরক্ষায় মরিয়া মুসলিমরাও গণহত্যা চালাবে। তখন আর সভ্যতার বাণীতে কাজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার মিরর ডোল, নিজের মনের অশান্তি অন্যের উপর চাপিয়ে দিয়ে ফ্যাসিস্টের মতো আচরণ করবেন না

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৩৫

ব্লগার মিরর দৌলাকে বলছি।
আপনাকে কিছু কড়া কথা আজ বলবো। ব্লগে বর্তমানে আপনার কোন অবদান নেই। সামুর যে ব্লগপেইজটা আপনি চালান, সেখান থেকে সব পোষ্ট আপনি ড্রাফটে নিয়েছেন। সেটা আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এত হট্টগোল এত সুরাসুর এখানে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:২৬



নিত্যতই লেগে থাকে হট্টগোল, রাজপথে জায়গা নেই,
হাঁটতে গেলেই মানুষের ধাক্কায় হারাই খেই,
বিশৃঙ্খল নগরীর বুকে স্বার্থপরতার বসবাস;
এখানে মাটিতে পা ফেললেই বুকে মুহুর্মূহু দীর্ঘশ্বাস।

বাস, কার, রিক্সা, ভ্যা ন, ম্যা ক্সি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এনসিপিনামা - যে যায় লংকায় সেই হয় রাবণ ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩১


জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে অসংখ্য রাজনৈতিক দল আত্নপ্রকাশ করেছে। সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি) কে নিয়ে। জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিয়ে এই দল গঠিত হয়েছে। প্রচলিত রাজনৈতিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

হারিয়েছি অনেক কিছু....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৫৪

হারিয়েছি অনেক কিছু....

আমি প্রতিদিন নিয়ম করে বেশ কয়েক কিলোমিটার হাটি। তবে ইদানিং হাটাহাটিতে অপ্রত্যাশিত ছন্দপতন হচ্ছে! এই যেমন, হাটাহাটির টার্গেট মিসিং! যে পথে হাটার কথা, সে পথে না গিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×