আগের পর্ব দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
বর্ডার পর্ব-২
মোস্তাফির মোড় থেকে লালমণিরহাট রাস্তাটি খুব একটা প্রশস্থ নয়। ঠিক যেন উপজেলা শহরে ঢুকছি। বিপরীত দিক থেকে বড় কোন গাড়ী আসলে উভয় গাড়ীকেই গতি কমিয়ে পার হতে হয়। সৈয়দপুর ছেড়ে নীলফামারীর রাস্তারও একই দূর্গতি দেখেছি।
রাস্তার ন্যায় লালমণিরহাট জেলাটিও একদিক থেকে আরেক দিকটায় সরু। জেলা শহর হওয়ায় মাথার দিকটা মাগুর মাছের মাথার মত কিঞ্চিৎ মোটা। এরপর একপাশে তিস্তা আর অন্যপাশে ভারতের সীমান্তের চাপে চিলে চ্যাপ্টা হয়ে শেষটাতে দহগ্রাম-আঙ্গপোতার কল্যাণে লেজটা মাথার ন্যায় খানিকটা বেশি জায়গা নিয়েছে।
লালমণিরহাট পেতে বেশি সময় নিল না। কিন্তু এ তো কেবল শুরু।এরপর আদিতমারী,কালিগঞ্জ,হাতিবান্ধা তারপর পাটগ্রাম। আর বুড়িমারী পাটগ্রামের একেবারে শেষ মাথায়।
সকালের রাস্তায় রিক্সা –ভ্যান কিছুই নেই। তার উপর ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভারজারের কথাবার্তায় বুঝলাম ওরা সবাই এই এলাকার। রাস্তা-ঘাট,নিয়ম-কানুন,শাসন সব মুখস্ত।ফাঁকা রাস্তায় মহাসড়কের মত বিদ্যুৎবেগে ছুটছে গাড়ী।সামনের সিট ফাঁকা পেয়েই বসে গেছি।পিছনে অর্ধেক গাড়ী যাত্রীর অধিকাংশই ঘুমে অচেতন।তাই ড্রাইভারকে গতি কমানোর অনুরোধে কারও সার্পোট পেলাম না।
দু’ধারে সকাল ঝরা নিরব শান্ত প্রকৃতি।অপেক্ষাকৃত হালকা জনবসতি।তাই খোলা মাঠের অনেকটা দূর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে।সবে মঙ্গার কোল থেকে উঠে দাঁড়ানো জনপদ।অনেক বাড়ীরই সীমানা বেড়া নেই।গাড়ী থেকেই বাড়ীগুলোর দরজার খিড়কিট পর্যন্ত দেখা যায়।
অনেকক্ষণ থেকে বামপামে একটা সরুখাল রাস্তা মিলিয়ে সাথে সাথে আসছিল।একটা ব্রীজের নীচ দিয়ে ডানপাশে পার হয়ে তাও দূরের বসতিতে ঢুকে গেল।দু’ধারে নতুন গাছপালায় ঘেরা একটা রাস্তাও পাল্লা দিয়ে সাথে সাথে আসছিল।খালটি মিলিয়ে গেলে রাস্তাটি আরও কাছে আসতেই চোখে পড়ল এটি রেল লাইন।একবার ডানপাশ আরেকবার বামপাশ।এভাবে কয়েকবার পাশ পরিবর্তন করেও বুড়িমারী পর্যন্ত এটি আর পিছু ছাড়েনি।পড়ে বুঝলাম সীমান্তের ধাক্কা-ধাক্কিতে সড়কপথটি ক্ষণে ক্ষণে বাক নিতে পারলেও রেললাইনটি ডান-বাম করে নিজের সরল পথটি ধরে রেখেছে।
পাটগ্রামের বাউরা হাট পেরুতেই বামপাশে ভারতের কাঁটাতার।গাড়ীতে বসেই ভারতীয় বাড়ীগুলির আঙ্গিনা দেখা যায়।সীমান্তের তালে তালে কাঁটাতারের বেড়াটি মাঝে মাঝেই উঁকি দিয়ে আবার দূরে মিলিয়ে যাচ্ছিল।একই মাটির মাঝখানে কাঁটাতার দাঁড়িয়ে দৃশ্যটিকে আসলেই দর্শনীয় করে তুলেছে।আর কিছুদূর এগুতেই কিছুটা জাফলং এর দৃশ্য।পাহাড় নেই কিন্তু রাস্তার দুইধারে কেবল পাথর আর পাথর।অধিকাংশই ভারত থেকে আসছে বাকীটা পাশের ধরলা নদী সেঁচে তোলা।
ঘড়ির কাটায় সকাল ৮টা ২০মিনিটে বুড়িমারী পৌছে গেলাম।সারি সারি ট্রাকের পিছনে গাড়ী দাঁড়িয়ে গেল। খানিকটা পায়ে হেঁটেই পরিবহন কোম্পানীর নিজস্ব যাত্রীনিবাসে ঢুকে পড়লাম। এখানকার প্রতিটা পরিবহন কোম্পানীরই নিজস্ব যাত্রীনিবাস আছে। পাকা যাত্রীনিবাসগুলির প্রতিটা রুমেই খাট আর তাতে বিছানা-বালিশ পাতা।ল্যাট্রিন-বাথরুম লাগোয়া।পরিশ্রান্ত যাত্রীদের ফ্রেশ হওয়ার জন্যই এ ব্যবস্থা।মন থেকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারলাম না।
প্রতিটা বিছানায়ই যাত্রীতে ঠাসা।সবাই যে যার মত ফ্রেশ হয়ে নিচ্ছে। দেখা যায় এমন স্থানে ব্যাগ নামিয়ে বাথরুমের দরজা খুলা রেখেই হাত-মুখ ধূয়ে নিলাম।বের হয়েই দেখলাম পরিবহন অফিসের একজন কর্মকর্তা সবার পাসপোর্ট পাশে রেখে টাকা গননা করছেন।তবে কি ইমিগ্রেশন-কাস্টম এখান থেকেই হবে? পরিবেশ বোঝার জন্য খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম।আরেক যাত্রীর বদান্যতায় আমিও কর্মকর্তাটির দৃষ্টিগোচর হলাম। ভদ্রলোক আমার পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের একখানা Departture Card(বর্হিগমন কার্ড) দিয়ে তা পূরণ করতে বলে ৬৫০টাকা চাইলেন।কিসের টাকা জানতেই বললেন-“৫০০টাকা সরকারী ফি আর ১৫০টাকা প্রসেসিং ফি।”
(৭) আমার ট্রিপসঃ-অপরিচিত জায়গায় আমার মত এরকম একা হলে পরামর্শ দিব-ব্যাগপত্র কারও জিম্মায় রেখে না যাওয়াটাই ভাল। কোন উপায় না থাকলে ব্যাগ নিয়েই টয়লেটে ঢোকা উত্তম। কিছু পেলে তার উপর রেখে নয়ত কিছুতে ঝুলিয়ে বা বেঁধে রেখে প্রাকৃতিক কার্য্যাদি শেষ করুন।আর যদি প্রাকৃতিক কাজ না হয়ে কেবল হাত মুখ ধোয়ার প্রয়োজন হয় তো- সহজে দেখা যায় এমন স্থানে নামিয়ে দরজা খোলা রেখে ব্যাগের উপর দৃষ্টি রেখে কাজটি সেরে নিন।
বলা বাহুল্য আমি ভদ্রলোকের কথায় রাজি হলাম না।কারণ বর্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বড়জোড় ৩০০ কি ৩৫০টাকা লাগে বলে জেনে এসেছি।তারপর প্রতিটা লেনদেনের স্লিপ নিতে হয় শুনেছি যাতে ফিরতি পথে কোন ঝামেলা না হয়।ভদ্রলোক কোন স্লিপই দিবেন না।তাছাড়া তখনও ব্যাংকই খোলেনি।তবে আশ্চর্য্য লোকটির মধ্যে তেমন কোন পীড়াপীড়িও নজরে পড়ল না।পাসপোর্ট চাইতেই ফেরত দিয়ে দিলেন।সাথে Departture Cardও (বর্হিগমন কার্ড) দিয়ে দিলেন। তাও আবার একটি নয়,দুটি।
মাত্র কয়েক পা সামনে গিয়েই হাতের বামে হানিফ,বিআরটিসি,এস আর কাউন্টার।এখান থেকে ৯০ ডিগ্রি বাঁক খেয়ে রোডটি সোজা জিরো পয়েন্টে চলে গেছে।চারপাশের পরিবেশ অনেকক্ষণ আগে থেকেই গোস্মা ধরে ছিল।ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হতেই দৌড়ে বাম পাশের বিল্ডিং এ ঢুকে গেলাম। নতুন রং বার্নিশ করা বিল্ডিংটিতে ঢুকতেই ডানবামের রুমগুলিতে পুলিশের পোষাক পড়া অফিসার গোছের কিছু লোককে বসে থাকতে দেখলাম। ভাবলাম থানা বা পুলিশ ফাঁড়ি হবে হয়ত।ভূল ভাঙল সামনের রুমের কাছে যেতেই। ডান পাশের একটি রুমের দুইটি চেয়ারে পোষাক পড়া দু’জন অফিসার বসা।টেবিলে স্তূপ করে রাখা পাসপোর্ট। আসল জায়গায় এসেছি! কারণ এটাই বুড়িমারী স্থল বন্দর প্রশাসনিক ভবন।
রুমের ডানপাশটাতে ওয়াল ঘেঁষে কয়েকজন দালাল দাড়িয়ে।কারও কারও হাতে গাঁটি ধরা পাসপোর্ট। টেবিলের সামনের দিকটা ফাঁকা। কেবল বামপাশের চেয়ারে বসা লোকগুলিই পাসপোর্টের সিরিয়ালে ডাক পেয়ে সামনে গিয়ে ছবি তুলে রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।পাশের রুমে গিয়ে সাথে থাকা একখানা Departture Card (বর্হিগমন কার্ড) পুরণ করে পাসপোর্টে গুঁজে উনাদের মত সামনে রেখে বামপাশের চেয়ারে বসে পড়লাম।
স্তূপগুলি শেষ হলে অফিসারটি আমারটি হাতে নিলেন।পাসপোর্টের দু’এক পাতা উল্টিয়ে আমার নাম ঠিকানা ও পিতার নাম জিজ্ঞেস করলেন। সব ঠিকঠাক বললাম। এবার Departture Card টি হাতে নিয়ে ডান পাশের দালালদের উদ্দেশ্যে চেঁচিয়ে বলে উঠলেন-” এটা কার লোক রে?” কোন শব্দ নেই। কেবল মুখ চাওয়া চাওয়ি। শেষে আমিই বললাম-” স্যার, কোন ভূল হয়েছে”? আমার কথা শুনে অফিসারটি আরও উত্তেজিত হয়ে আগের কথাটি পুনঃব্যক্ত করলেন। এবার একজন দালাল টেবিলের উপর থেকে পাসপোর্টটি নিয়ে আমাকে হাত ধরে বাইরে নিয়ে এসে জানতে চাইলেন আমি কোন গাড়ীতে এসেছি।শুভ বসুন্ধরায় এসেছি শুনে লোকটি কাকে যেন ফোন দিলেন।মহুর্তে শুভ বসুন্ধরার সেই দালালটি এসে সব কথা শুনলেন। ”আপনাদের বললেও আপনারা শোনেন না”-বলেই লোকটি আমার পাসপোর্টটি নিয়ে পাশের রুমে বসে আরেকটি Departture Card পুরণ করে তাতে আমার স্বাক্ষর নিয়ে নিলেন। স্বাক্ষর দিতে গিয়ে দেখলাম আমি যেটি পূরণ করেছিলাম তার সাথে কোন পার্থক্য নেই।বরঞ্চ লোকটি পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণের ঘরটি পূরণ করতে গিয়ে কাটাকাটি করে ফেলেছেন।সেখানে ইনিশিয়াল ছাড়াই পাসপোর্ট জমা হয়ে ছবি তোলার ডাক পেলাম।
ছবি তোলা শেষে অফিসারটির(পুলিশের কর্মকর্তা) সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়লাম-
-স্যার,অনুমতি দিলে কয়টা তথ্য জানার ছিল।
-বলুন, কি তথ্য জানতে চান? মাথা না উঠিয়েই অফিসারটি কথা বলছেন।
-স্যার, আমি যে Departture Card টি পূরণ করেছিলাম তাতে তো কোন ভূল ছিল না।
-আর কি জানতে চান?
-স্যার, পাসপোর্ট আমার।ইন্ডিয়া যাচ্ছি আমি। আর আমি কার লোক সেটাই মুখ্য হয়ে গেল? এবার অফিসারটি কাজ ফেলে আমার মুখের দিকে তাকালেন।ততক্ষণে পাশের অফিসারটি বলতে শুরু করে দিয়েছেন-
-আপনি কি সাংবাদিক?
-হওয়াটাই কি উচিৎ ছিল?
-কথায় বোঝা যাচ্ছে।
-কথাগুলো কি কেবল সাংবাদিকদের হতে পারে? সাধারণ মানুষকি বলতে পারে না?
-সে অনুমতি তো আগেই দিয়েছি। মাঝ থেকে বলে উঠলেন আগের অফিসার।
-আপনি বসুন। চাপটা কমলে বুঝিয়ে বলছি। ততক্ষণে পাসপোর্টে সিল হয়ে আমার হাতে ফেরত এসেছে। কিন্তু অফিসারটির বসার কথায় আমি সত্যই বসে পড়লাম।কেউ আশ্চর্য্য আবার কেউ বিস্ফোরিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
-স্যার, এখানে টাকা পয়সা কত লাগবে তার কোন ডকুমেন্টারী নোটিশ কোথাও দেখছি না।
-কেন, জেনে আসেননি?
-যা জেনে এসেছিলাম তার থেকে তো বেশি লাগছে। সে রকম কোন ডকুমেন্টারী নোটিশ ঝুলানো থাকলে এমন কৌতুহল হত না।
-ওনাকে ঐ রুম থেকে দেখিয়ে আনো।
দালাল লোকটি আমাকে সাথে করে ভেতরের রুমে নিয়ে গেলেন।সেখানে টেবিলের গ্লাসের নীচে নোটিশটি পেলাম।সার্কুলেশনটির ৪ নং পয়েন্টে স্থল পথে প্রযোজ্য ভ্রমণ কর:- “বাংলাদেশ হইতে স্থল পথে অন্য কোন দেশে গমনের ক্ষেত্রে প্রতি যাত্রীর নিকট হইতে পাঁচ শত (৫০০)টাকা হারে ভ্রমণ কর আরোপ ও আদায়যোগ্য হইবে।”
অতএব নি:শঙ্ক মনে ওখান থেকেই দালালকে দাবীকৃত অর্থ (৬৫০ টাকা) দিয়ে দিলাম।
পাসপোর্টে সিল পড়েছে।অতএব,দালাল ভদ্রলোক আমাকে সামনে এগুতে বলে নিজে পাসপোর্ট ও টাকা হাতে খানিক সময়ের জন্য কোথায় যেন মিলিয়ে গেলেন।সৌজন্যের খাতিতে সেই অফিসারদের রুমে ঢুকে আরেকখানা সালাম দিয়ে বের হয়ে এলাম।
রোডের বামপাশে ইমিগ্রেশান অফিস বিল্ডিং আর ডানপাশে সারি সারি দোকান। দোকানগুলির প্রতিটিই ভারতীয় পণ্যে ঠাসা। কিছু দূরেই বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট লেখা নামফলক। নামফলকের অপর পাশে অর্থাৎ রাস্তার বিপরীত পাশে একটা পাকা সীমান্ত যাত্রী ছাউনী।সাথেই বিজিবির সীমান্ত চেকপোস্ট(টিনের ছাউনি)।
কিছুক্ষণ পর দালাল ভদ্রলোক বের হয়ে আসলে আমাকে বিজিবির সীমান্ত চেকপোস্টের টিনের চৌ চালা ঘরে নিয়ে গেলেন। পাসপোর্টের সিল সামন্ত চেক ও ব্যাগপত্রে কি আছে জেনে ছেড়ে দিলেন। দু.মিনিট পর দালালও তার কাজ সেরে বের হয়ে এলেন।
বিজিবির সীমান্ত চেকপোস্টের পরেই ”নো ম্যানস ল্যান্ড “ এলাকা। শেষ মাথায় বাংলাদেশের বর্ডারের লাস্ট চেক পোস্ট।মাথার উপরে পতপত করে উড়ছে মাতৃভূমি বাংলাদেশের পতাকা।এখানে বেশ খানিকটা ভীড়।কারণটা হল একটু সময় নিয়ে সব কিছু চেক করা হচ্ছে।সব শেষে পাসপোর্টটি যখন স্থায়ীভাবে ফেরত পেলাম তখন দেখলাম তাতে আরেকটি গোল সিল পড়েছে।
পাসপোর্ট হাতে পেয়ে ভারতের সীমানায় ঢুকে পড়লাম।মাত্র হাত তিনেক ব্যবধান। ওপাড়ে আমি এপাড়ে দালাল।আমি যখন সেই মহা আত্বীয়ের কাছ থেকে বিদায় নিব তখন দেখলাম ভদ্রলোক ওপাড়ের ভারতীয় আরেক দালালের নাম ধরে ডাক দিয়ে কাছে এনে আমাকে তার হাওলা করে দিলেন।
বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে ভারত
ভারতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ
ভারতীয় দালালটি আমাকে হাত ধরে টেনে আরেকটু ভিতরে নিয়ে পরিচয় পর্ব শেষে হ্যান্ডশেকের জন্য হাতটি বাড়িয়ে ধরলেন।আমিও ততস্থে হ্যান্ডশেকটি সেরে নিলাম।ডানপাশে বিএসএফের চেক পোস্ট। সেখানে পাসপোর্টখানি দেখিয়ে সাথের লোকটির দেখানো রাস্তায় ভারতীয় ইমিগে্রশন এলাকায় ঢুকলাম।
টিনের চৌচালা ও বেড়ায় ঘেরা ভারতীয় কাস্টম ও ইমিগ্রেশন (চেংড়াবান্ধা) অফিসটি।বাংলাদেশের বুড়িমারীর মত পাকা বা মজবুত নয়।বেশ ব্যস্ত।এখানেও বুড়িমারীর মত পর্ব।দালাল ছাড়া বর্ডারের কর্তা ব্যক্তিরা পাসপোর্টের হিসাব রাখতে চান না।আলাদা সাদা খাতায় তারিখ দিয়ে দালালের নাম লিখে তার পাশে পাসপোর্টের সংখ্যা লেখা।কার নামে কয়টা পাসপোর্ট বেরুলো আর কয়টা ঢুকল তার সুন্দর হিসাব রাখা।দালাল পোষার মোজেজা ওপাড় গিয়ে মিলিয়ে নিলাম।
ভারতীয় ইমিগ্রেশন পর্বে খুব একটা সময় নিল না।দেখলাম বুড়িমারীর মত এখান থেকেও পাসপোর্টে দুইখানা সিল পড়েছে।ভারতীয় লোকটিকে সাথে নিয়ে সামান্য দূরে টিনের ছোট খুপড়ির মত ঘরে সাথে থাকা ডলার ও বালাদেশী টাকা ভাঙিয়ে ভারতীয় রুপি করে নিলাম।আর ভারতীয় লোকটির চাহিদা মতন বাংলাদেশী ১০০টাকা দিয়ে বিদায় হলাম।বলা বাহুল্য, পাসপোর্টে কয়েকখানা সিল ছাড়া উভয় পাশে অর্থ লেনদেনের কোন স্লিপই পেলাম না।
আরও কিছু ছবিঃ-(এখানে ভারতে যাওয়া ও আসা, উভয় সময়ের ছবি যুক্ত হয়েছে)
(চলবে)