মহান স্বাধীনতা দিবস কবিতা সংকলন।
শৃঙ্খল বেঁধেছ পায়ে
লিখছন মনিরা সুলতানা
====================
সমবেত সুহৃদ !!!
অগ্নি ঝড়া মার্চের গল্প পড়
সে গল্প কবিতা তোমায় গর্বিত করুক
রক্তে আনুক উদ্যম
তবে কেন এই মার্চে নিস্পাপ শিশুর কেটে ফেলা আঙুল
তোমার রক্তে আগুন ঝরায় না !!
৭১ এ ধর্ষিতার আত্ম চিৎকার স্মরণে
ঘৃণিত পশুরদের প্রতি ঘৃণা বাড়ায়
প্রতিবাদ প্রতিরোধে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হও
কেন তনু’র চিৎকার ভাবনা তোমাকে ভাবায় না
পথে নামায় না ??
২৫শে মার্চের কালো রাত্রি ‘র ঝাঁপিয়ে পড়া শকুন দেখ;
কেন জয় বাংলা বলে বোনের গায়ে ঝাঁপিয়ে পড়া শুঁকুন গুলো
তোমার কাছে কেন দিন দিন খুব স্বাভাবিক হয়ে উঠছে ???
অতীত ইতিহাস যদি তোমার গর্ব আর ভিত্তি হয়
বর্তমান তোমার সেই গর্বিত ইতিহাস চর্চার চারণ ভূমি।
বলতো কোথায় কোন সে কুলুর ঘানি টানা তুমি !!!
চোখে পড়ে আছো চেতনার ঠুলি ?
স্বাধীনতা কে তুমি কিসে দেখো !!
আমি দেখি ব্যালট বাক্সটায়
তুমি খোঁজ কোথায় স্বাধীনতা
আমি খুঁজি দিন শেষে সাজানো ভাতের থালায়
আর কেঁপে উঠি দশ টাকায় জুঁই সাদা ভাতের ভোটের বানিজ্যে।
শুনেছ কখনো স্বাধীনতা’র শব্দমালা !!
আমি শুনেছি রেসকোর্স আর কালুর ঘাটের
দরাজ নির্ভিক রক্তে বান আনা উদারতায় ।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
আর
উই রিভোল্ট ধ্রুপদী কাব্যে।
৫৭আর ৩২ ধারা যখন তোমায় মাজল মি নট এর
প্রতিবাদ ভুলিয়ে দেয়
তুমি তখন কেবলি একজন নিরাপত্তা বলয়ে থাকা
কুসুম কুসুম প্রতিবাদী।
যুদ্ধে জীবনবাজি রাখা তোমার বাবা , দাদু ;
অথবা ভাই কোনদিন কি ভেবেছিল
তাদের মহান আত্মত্যাগ কে তুমি -
সামান্য কোটা ‘য় বিসর্জন দেবে !!!!
তিলতিল করে বুকের রক্তে গড়া স্বদেশের শিক্ষা ‘র ধ্বংস কে
তুমি মন্ত্রীর কাঁধে চাপিয়ে অনুজ কে নিয়ে-
হাস্য পরিহাস্যে মেতে উঠ কোন শঠতায় !!
নির্লজ্জ তুমি বলে উঠ “আই এম জি পি এ ফাইভ” !!!
বিরোধী মত ছাত্রের রিমান্ডে রাস্ট্রযন্ত্রের নির্যাতনে গত প্রান;
আর সাধারন সহপাঠি র ন্যায্য দাবী তে হারানো চোখ -
যদি না তোমাকে পথে নামায়
তহলে এখন তোমার ই অপেক্ষায় সেই ফ্রাকেস্টাইন।
লক্ষ বেকার আর চৌদ্দ কোটি ক্ষুধার্ত চোখ কে অগ্রাহ্য করে
মেতে উঠো কোন হাজারো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত
আর উন্নয়ন উৎসবে!!!
সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতা কে তুমি বন্দী রেখেছ;
শৃঙ্খল বেঁধেছ তার পায়ে।
স্বাধীনতার স্বাদ
লিখেছেন জাহিদ অনিক
------------
মুক্তির স্বাদ পেতে হলে রয়ে যাও কিছুদিন বন্দি
ক্ষুধার তীব্রতা মাপতে হলে কিছুদিন পার কর না খেয়ে,
ভালোবাসা পেতে হলে দীর্ঘদিন থাকতে হবে ভালো না বেসে
বেচে থাকতে হলে ফিরে যেতে হবে মৃত্যুর খুব কাছ থেকে।
কিন্তু স্বাধীনতা?
স্বাধীনতা পেতে হলে থেকে যেতে হবে আজীবন পরাধীন,
নিজের বলে যেখানে থাকবে কিছুই,
মতামত, চলাফেরা এমনকি ভালোবাসা-
কিছুই করা যাবে না ইচ্ছেমত।
এমন স্বাধীনতা কে পেয়েছে কবে,
ইচ্ছে হলেই দিয়েছে উড়িয়ে কয়েক-হাজার প্রাণ
কে পেয়েছে রক্ত বিনে এমন কোন স্বাধীনতা,
মিটেছে আশা হয়নি রিক্ত প্রাণ !
হঠাত যদি টুপ করে মিলে যায় স্বাধীনতা,
পথে যেতে যেতে যাবে ভুলে কেমন ছিল পরাধীনতা।
স্বাধীনতা সেখানেই মিলেছে
যেখানে চলেছে পা- হেঁটেছে পথ অজানা,
স্বাধীনতা সেখানেই ব্যর্থ,
যেখানে ভুলেছে মানুষ কেমন ছিল পরাধীনতা।
মুক্তির স্বাদ
লিখেছেন ভ্রমরের ডানা
===============
যারা স্বপ্ন দেখেছিল একটি পতাকা পেলেই
ঘরে ঘরে বইবে সুখের সফেন অর্ণব,
বাহারি পাতার গাছে গাছে শালিকেরা উড়বে
তারা ভুল ছিল!
কেননা সকল কুড়ে মজুরের, টোকাই কিংবা ছিন্নমূলের
একটি পতাকার পাশাপাশি দরকার ছিল কিছু মৌলিক অধিকার..
তাই যারা স্বপ্ন দেখেছিল বাস্তবতা ফেলে
কিসব বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তনে মুছে যাবে
ইতিহাসের পাতা থেকে ছিয়াত্তরের দুর্ভিক্ষপীড়িত পুনরাবৃত্তি..
তারা ভুল ছিল...
আফসোস এখনো সেই দুর্ভিক্ষপীড়িত জনপদে
ভয়াবহতম বুভুক্ষিত মানব মনের কংকাল..
পরিবর্তন কিছু হয়েছে শুধু পাকস্থলীর বিলাপে...
নেতার বাগানের গোলাপে..
মননে নয়, হৃদয়ে নয়..
তাই, এখনো এই উপমহাদেশ
পরাধীনতার নব্যউপনিবেশ
এখানে যারা ভাগ হয়েছি শাখায় শাখায়..
যারা স্বপ্ন দেখেছি স্বাধীন পতাকার স্বপ্নে..
আজ কি হল মুক্তি নেই মুক্তি নেই..
কেন নেই, কিভাবে নেই..
এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর সহজে মিলবে না..
স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ কোথাও কি নেই...
সেই কালো রাত
লিখেছেন কি করি আজ ভেবে না পাই
=============
নিথর গুমোট রাত
কি হয় কি জানি!
নেতা নেই,কেউ নেই
একি পেরেশানি!!
দিশেহারা পুরো জাতি
চাপা উৎকন্ঠা;
কালরাতে বেজে উঠে
প্রলয়ের ঘন্টা।
অবিরাম গুলাগুলি
মরে স্রেফ বাঙ্গালী;
পিলখানা,রাজপথ
খুনে তোরা রাঙ্গালি!!
খুন চাস আর কতো
কিসে হবি তুষ্ট?
কে বাঙ্গালী?পাকিটা কে?
ব্যবধান পষ্ট।
এমনি ছিলো সে রাত
নরকের যাত্রা;
বুঝানো যায় সে লিখে
বিভীষিকা মাত্রা?
দিকহীন দিশেহীন
অজানার গল্প;
স্বাধীনতা ভাবনা যে
অলীক এক কল্প।
বীর এক দেয় ডাক
'স্বাধীনতা' দমকায়;
থমকিত জাতি ফের
সেই ডাকে চমকায়।
ত্বরিৎ তাড়িত জাতি
শুনে সেই জাগানিয়া;
ইথারে ভেসেছে যে-ই
''আয়্যাম মেজর জিয়া''।
ধূসর স্বাধীনতা
লিখেছেন ধ্রুবক আলো
==============
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।
মাননীয় ক্ষমতাসীন চেয়ারপার্সন,
এবারেও কি আমরা মুক্তি পাবো?!
এবারেও গণতন্ত্র মুক্তি পাবে কি?
স্বৈরাচারও কি এবার নিপাত যাবে?!
দুঃখিত একসাথে এতো প্রশ্ন করা
আমার, আমাদের শোভা পায় না!
আমরা তো নিম্ন শ্রেণীর লোক,
দেশ তো সেই কবেই বিভক্ত হয়ে গেছে
নদী ভাঙ্গনের সময়, সেই খোরস্রোত বন্যার সময়
অবশ্য সেটা ছিলো রক্তের বন্যা!
লাখ লাখ মানুষের রক্ত,
আমার ভাইয়ের তাজা রক্ত,
আসাদের টি-শার্টে লেগে থাকা রক্ত,
বীরশ্রেষ্ঠের রক্ত,
মা বোনের ইজ্জতের রক্ত,
এতো এতো রক্ত, কয়েক শত কোটি
ব্যারেল রক্তের স্রোত!
সেই স্রোতের ভাঙ্গনে একটা দেশ জেগে উঠেছে
আর বিচ্ছেদ হয়ে গেছে মানবীয় সব চরিত্রের!
আপনি কি জানেন রক্তে কোনো ধনী গরিব লেখা থাকে না!
রক্তে থাকে হিমোগ্লোবিন
একদম গরম জোয়ানের রক্তে
স্বাধীনতার ডাক!
থাক সেসব কথা, এতো গরম রক্ত
এখন মাইথোলজির গল্প
ঠিক যেমন টা স্বাধীনতা কিংবা গণতন্ত্র!
আপনাদের তো জোয়ান সৈনিক আছে
যাদের আপনারা চোখের মণি
কিংবা ধন রত্ন বলেন,
কি চমৎকার দেখুন, মানুষ এদের ভয়ে ঘরে বন্দি হয়ে থাকে!
ঐ কাল রাত্রিতেও যাদের ভয়ে ঘরে বন্দি হয়ে ছিলো,
আহারে, জীবনের কতটা মিল!
সত্যই দেশ স্বাধীন হয়নি!
আমরা একটি জীবনকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি
যুদ্ধের পর আবার লড়াই করি,
গণতান্ত্রিক লড়াই, অস্তিত্বের লড়াই,
আব্রাহাম লিঙ্কনের ভুল সূত্র ধরে,
একটি অথবা অজস্র,
মায়ের কোলে যে শিশুটি বড় হচ্ছে
তার জন্যেও!
উর্ধমূল্যের বাজারে এতো সস্তায় স্বাধীনতা পাওয়া যাবে
তা কি হতে দেয়া যায়!
বছরের পর বছর মাথার ঘাম রাস্তায় মিশিয়েও
স্বাধীনতা আজ আলোকবর্ষ দূরে
নক্ষত্রের মতন,
ধরা যায় না ছোয়া যায় না
যত টুকু আলো ছড়ায়
তা মানুষের জন্য মাটিতে এসে পৌঁছোয় না!
যেটুকু পৌঁছনোর দরকার
ক্ষমতার দালানে তা ধামা চাপা পরে যায়!
আপনি কি জানেন, মাননীয় ক্ষমতাসীন চেয়ারপার্সন?
বাক স্বাধীনতা কাকে বলে?
সত্যকে মিথ্যা বানানো বাক স্বাধীনতা বলে না!
এটা অবশ্য ক্ষমতাসীনদের চিন্তা ভাবনা!
মানুষ আজন্ম বলতে চায়,
তার অধিকারের কথা,
তার প্রয়োজনের কথা,
যা সত্য সেই কথা,
আপনাদের কামান গোলা
আমাদের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করে দেয়।
আপনারা নিশ্চয় জিউস কিংবা ট্রাম্প
ভাবেন নিজেদেরকে, ভাবতেই পারেন!
আমরা একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী
যুদ্ধ করে বেঁচে থাকি ইহকালের জীবন!
গলা টিপে ধরবেন ধরতেই পারেন
কেউ বাধা দিবে না
বাধা দেয়ার মত জন শক্তি
আপনারা গুম করে যাচ্ছেন!!
আমি কেন বলছি এসব কথা,
আসলেই তো, কেন আমি লিখছি, কেন আমি বলি?
আমার ভেতর ক্ষুদা, না বলতে পারার ক্ষুদা, মস্তিকে অজস্র কষ্ট জমিয়ে রাখার হাহাকারের সব ক্ষুদা!
আমার শরীরে রক্ত নেই, নেই পানি।
আমি উঠে দাঁড়াতে পারছি না তাই ডেবে যাচ্ছি,
মেরুদন্ড বাঁকা হয়ে যাচ্ছে,
ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে মাংসপেশি,
তীব্র লড়াই করে বেঁচে থাকা জীবন
আজ হুমকির শরণাপন্ন,
দেয়ালে পিঠ ঠেকে ঠেকে থমকে গেছে
ঘা হয়ে গেছে, পচন ধরছে শরীরে
অন্তরাত্মা চিৎকার দিয়ে বলে উঠছে
বারবার,
এরপরও কি মুক্তি নেই!?
স্বাধীনতা তুমি
লিখেছেন নাঈম জাহাঙ্গির নয়ন
স্বাধীনতা তুমি পাগলের উম্মুক্ত হাসি, ভোরের
নীরবতা ভেঙে গেয়ে উঠা পক্ষী-কোকিলের গান;
স্বাধীনতা তুমি মুক্ত,তরঙ্গ-গর্জন-ঢেউ সাগরের,
আঁধারের বুকচেরা স্বর্ণাভ প্রভাত-সূর্য ঊদীয়মান।
স্বাধীনতা তুমি ফুলের পাপড়িতে ভ্রমর-গুঞ্জন,
ষোড়শীর যৌবনারম্ভে প্রেমিকের প্রতি ভালোবাসা;
স্বাধীনতা তুমি কলম কবিদের-সাধকের সাধন,
ভূমিষ্ঠ শিশু-কূলে মায়ের বুকে জেগে উঠা আশা।
স্বাধীনতা তুমি শোষকের বুকে বিঁধা বিষ তীর,
প্রাণে প্রাণে মুক্তির স্বাদ-দুর্বলের পাওয়া অধিকার;
স্বাধীনতা তুমি দুরন্ত-দুর্বার মুক্তি-তৃষ্ণায় অস্থির
স্বপ্নময় এ'প্রাপ্তি-বৈষম্যবিহীন সমাজের দাবিদার।
স্বাধীনতা তুমি মুক্ত সুনীল আকাশ-শুভ্রতুষার
সীমাহীন-সুবিন্যস্ত বাঁধনহারা পৃথিবীপৃষ্ঠ প্রান্তরে;
স্বাধীনতা তুমি সকল প্রাণের মানব-বৃক্ষলতার
কামনাবাসনা চিন্তাজগত ইচ্ছে পথ প্রকারান্তরে।
স্বাধীনতা তুমি সুমহান-কাঙ্ক্ষিত হৃদয়ের গান,
গৌরবময় ইতিহাসে গর্বিত বাঙালি জাতি-বিজয়;
স্বাধীনতা তুমি পতাকায় শেখ মুজিবুর রহমান,
বাংলার বুকে মিশে থাকা শহীদ দেশপ্রেমি হৃদয়।
ইলোরা
লিখেছেন সেলিম আনোয়ার
================
স্বাধীনতার নেশা লেগেছে যার চোখে
সে কি আর তখন থেকেছে ঘরে বসে?
আশু স্বাধীনতার ডাকে, বাংলার বীর জনতা যারা
পাগলপারা—দেশের তরে নিজের প্রাণ করিতে বিসর্জন,
ইলোরার জনক অকুতভয় সেনা ,
ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক, তাদেরই একজন।
কালোরাত্রিতে পাকহানাদার যখন হিংস্র হায়েনা
ইলোরা তখন মায়ের উদরে বিলোয় স্বপ্নিল জোছনা,
ইলোরার বাবা শহীদ হয়েছিলেন স্বাধীনতার এই দিনে
ভীষণ বিয়োগ ব্যথা তখন তাঁর অসহায় জননীর প্রাণে
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছিল সব খানে ইলোরার মা তখন
কঠিনতরো জীবন সংগ্রামে, মনে ব্যথা দেহে ব্যথা, তার
ব্যথার শেষ নাই, কেবল ইলোরা আর স্বাধীনতার সূর্যটা
গর্ভধারিনী মায়ের বুকে আশার আলো বিলিয়ে যায় ,
মহান একাত্তরের অক্টোবরে,
ইলোরার জন্ম হলো সোনার বাংলাদেশে ।
আজ ইলোরা বড় হয়েছে ইলোরাদের বড়ো হতে হয়
কারণ ইলোরাদের জন্ম ইতিহাসের মহেন্দ্র এক সময় ।
ইলোরা বড় হয়েছে চাঁদের মতন রূপে ইলোরা আজি বিজয়ীর বেশে
পুলিন্দা বাহিয়া বাংলার উন্মুক্ত প্রান্তরে, লাল-সবুজ পতাকা—
পত পত করে পতাকা উড়ে আজি ষড় ঋতুর প্রতিটি পরিক্রমায়
এমনি করে প্রজন্ম একাত্তর স্বাধীনতার স্মরণিকা সোনার বাংলায় ।
স্বাধীনতার নেশা লেগেছে যার চোখে
সে কি আর তখন থেকেছে ঘরে বসে?
আশু স্বাধীনতার ডাকে, বাংলার বীর জনতা যারা
পাগলপারা—দেশের তরে নিজের প্রাণ করিতে বিসর্জন,
ইলোরার জনক অকুতভয় সেনা ,
ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক, তাদেরই একজন।
কালোরাত্রিতে পাকহানাদার যখন হিংস্র হায়েনা
ইলোরা তখন মায়ের উদরে বিলোয় স্বপ্নিল জোছনা,
ইলোরার বাবা শহীদ হয়েছিলেন স্বাধীনতার এই দিনে
ভীষণ বিয়োগ ব্যথা তখন তাঁর অসহায় জননীর প্রাণে
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছিল সব খানে ইলোরার মা তখন
কঠিনতরো জীবন সংগ্রামে, মনে ব্যথা দেহে ব্যথা, তার
ব্যথার শেষ নাই, কেবল ইলোরা আর স্বাধীনতার সূর্যটা
গর্ভধারিনী মায়ের বুকে আশার আলো বিলিয়ে যায় ,
মহান একাত্তরের অক্টোবরে,
ইলোরার জন্ম হলো সোনার বাংলাদেশে ।
আজ ইলোরা বড় হয়েছে ইলোরাদের বড়ো হতে হয়
কারণ ইলোরাদের জন্ম ইতিহাসের মহেন্দ্র এক সময় ।
ইলোরা বড় হয়েছে চাঁদের মতন রূপে ইলোরা আজি বিজয়ীর বেশে
পুলিন্দা বাহিয়া বাংলার উন্মুক্ত প্রান্তরে, লাল-সবুজ পতাকা—
পত পত করে পতাকা উড়ে আজি ষড় ঋতুর প্রতিটি পরিক্রমায়
এমনি করে প্রজন্ম একাত্তর স্বাধীনতার স্মরণিকা সোনার বাংলায় ।
কবিতা আমার
বিলিয়ার রহমান
================
কবিতা আমার,
চোখ খুলে দেখ এ বিজন আঁধার,
রাত নেই তবু আজ যেন রাত,
স্বাধীনতা পেয়েও কেমন অধীন বরাত।
শূণ্য দেখো সবি, স্বপ্ন আর দাবি,
ধেঁয়ে আসা কোন এক অনাহূত ঝড়ে।
ডুবু ডুবু দ্বীপ, নিভু সপ্ন প্রদীপ
তবুও কি শুনবেনা মোরে?
কবিতা আমার,
এখনো কি ইচ্ছে তোমার,
হতে অশ্রু পিতার চোখের,
ভয় কিশোরীর মুখের,
অসহায়ত্ব বেকার জীবনের,
দীর্ঘশ্বাস ব্রোথেল ঘরের,
অধীনতা ক্ষমতার দাপটের।
কবিতা আমার,
এ কেমন নিরবতা তোমার
তুমি তো বেকারত্ব নও,
অধিনতা নও, কুশিক্ষা নও,
নও তো তুমি প্রশ্ন ফাঁস।
তুমি তো স্বপ্ন, তুমি আশা
তুমিই তো মহান বিশ্বাস ।
ভিসুভিয়াসের তেজে,
দিব্যাস্ত্রধারী অর্জুন সেজে,
তাই আর একবার
কবিতা আমার,
বারুদ হয়ে এসো।
বুলেট হয়ে এসো।
মুজিব হয়ে এসো।
মুক্তিযোদ্ধা হয়ে এসো।
কবিতা আমার,
চোখ খুলে দেখ এ বিজন আঁধার,
রাত নেই তবু আজ যেন রাত,
স্বাধীনতা পেয়েও কেমন অধীন বরাত।
মনিরা আপি:
বরাবরের মতোই আজকেও আসাধারন ছিলেন।স্বাধীনতার মাথা কুটে মরা কিংবা দ্রোহের বারুদের নিস্তেজ হয়ে যাওয়া অথবা এতো বছর পরেও স্বাধীন দেশের কি করুন পরিনতি কিইবা ছিলোনা আপনার কবিতায়।অনন্য অসাধারন পরিবেশন!থামজ আপ।
জাহিদ অনিক :
স্বাধীনতাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন তার চির চেনা কাব্যিক স্টাইলে। স্বাধীনতা মানেই যে এক ধরনের অধীনতা এমন একটা প্রচ্ছন্ন ম্যাসেজ তার কবিতা থেকে পেয়েছি।বলার এমন ধরন ভালো না লেগে পারে না অনিক ভাইয়া!
ভ্রমরের ডানা:
স্বাধীনতাকে পরিসংখ্যান আর ডেবিট ক্রেডিটের খাতায় নিয়ে এসেছেন এবং যারা স্বাধীনতায় যাবতীয় হিসেব মেলানোর স্বপ্ন দেখেছেন তারা যে ভুল ছিলো সেটিই প্রকারন্তরে বলে গেলেন।এমন জাদরেল কবির সাথে লিখতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত।
কি করি আজ ভেবে না পাই
অসাধারন ছন্দে ভাইয়া ঠিক সেই ভয়াল পরিস্থিতিটাকে স্মরণ করেছেন। যখন বঙ্গবন্ধু মুক্ত ছিলেন না, ছিলো না কোন কিছুই গোছানো। সেই অবস্থায় মেজর জিয়ার গর্জিত কন্ঠ কিভাবে একটা জাতিকে চাঙ্গা করেছিলো। তবে আমাকে একথাও বলতে হচ্ছে যে স্বাধীনতার স্বরূপ ভাইয়ার কবিতায় পুরোপুরি ফুটে উঠেনি।
ধ্রুবক আলো:
কবিতায় যেন সবাইকে আয়নার সামনে দাড় করিয়েছেন ধ্রুবক ভায়া। একে একে সবাইকেই যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাইলেন স্বাধীনতা শব্দটি কেবল কারো কারোই তবে!!অসাধারন ধ্রুবক ভায়া!
নাঈম জাহাঙ্গির নয়ন:
উনি স্বাধীনতাকে দেখেছেন প্রথাগত চোখে। স্বপ্ন হিসেবে, মুজিব হিসেবে, বিশ্বাস হিসেবে, আশা হিসেবে।আমার কছে ওনার দৃষ্টিভঙ্গিও ভালো লেগেছে।
শেষের পঠনটা করেছেন নাঈম জাহাঙ্গির নয়ন ভাই। বাকি গুলো মনিরা সুলতানা আপির।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬