আজকের বুড়িগঙ্গা নদী পঁচে যাওয়া এক বৃদ্ধা। কিন্তু তারও যৌবন ছিল। তার জোয়ারেও দুকূল প্লাবিত হত। দু’পাশ দিয়ে উড়ে যেত সাদা বক!!হয়তো কোনো মাঝি নৌকা বেঁয়ে বেঁয়ে আনমনে গেয়ে উঠত কোনো ভাটিয়ালি গান! এখন সেই বুড়িগঙ্গা কেবলই মৃত্যুর প্রহর গুনে চলেছে !!!( উপরের ছবিটি ১৮৮০ সালের বুড়িগঙ্গার।)
তুরাগ সেতুর নিচ দিয়ে প্রবাহমান তুরাগ নদীও এককালে প্রকৃতি প্রেমিদের মনে নৈসর্গিক আনন্দ দিত। জলের উপর রোদের খেলায় অল্পকালের জন্য হলেও হয়তো অনেকের মন ভাবুক হয়ে উঠত। আজকের তুরাগের দুর্গন্ধ কি সেই সাক্ষ্য দিচ্ছে??
নিচের ছবিটি ১৮৮৫ সালে তোলা পুরান পল্টনের। পুরান পল্টনের রাস্তায় এখন বেরুলে হয়তো ভাবেন কখন এখান থেকে বাসায় ফিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন। আপনার জন্মটা ১৮৮০ দিকে হলে ওকথা কি কল্পনাও করতেন??
ফুলবাড়িয়া রেল স্টেশনের ছবি।ফ্রেম বন্দী ওই মানুষগুলো কেবলই নির্বাক ছবি হয়ে আছে । তাদের শেষ দেহাবশেষও হয়তো বিলীন হয়ে গেছে। তবে একদিন তাদের কন্ঠে যে গর্জন ছিল আর বাহুতে ছিল বল সে সাক্ষী বয়ে বেড়াচ্ছে এই ছবি! জীবন কতই না ছোট তাই না!!
১৯০১ সালের রমনা গেট বর্তমানে এখানে দোয়েল চত্ত্বর অবস্থিত।সত্যিই সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না!
লালবাগ কেল্লা। পরিত্যক্ত, নির্জন তবুও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে । পাশে দুজন মানুষকেও দেখা যাচ্ছে। তারা জানতেই পারছেন না যে আজও আমি আপনি তাদের দেখে চলছি!!
ঢাকেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদী। কি অপরূপ নির্মল সুন্দর!!!!! যারা কেবল কিছুটা বাড়তি আয়ের লোভে এই অপরূপ নদীটিকে প্রতিনিয়ত ধ্বংস করে চলেছে তারা আসলেই কি মানুষ???
১৮৭২ সালে তোলা চকবাজার মোড়ের ছবি। ছবিতে কিছু ঘোড়ার গাড়িকে অপেক্ষমান দেখাযাচ্ছে, হয়তো অপেক্ষা ফুরানোর নয়। !
ধোলাইখালের লেহার ব্রীজ। একজন মেমকে অস্পস্ট দেখা যাচ্ছে। ওনার সাম্রাজ্যবাদী প্রভুরা আমাদের এখান থেকে বিদায় হয়েছেন। উনিও তবুও বন্দী এই ছবির ফ্রেমে। আরো কতকাল থাকবেন কেউই জানে না!
১৮৭২ সালের ঢাকা শহরের কোন এক অজানা রাস্তা । রাস্তার পাশে কিছু দোকান ও কর্ম ব্যস্ত মানুষ। জীবন ফুরিয়েছে, ফুরিয়েছে ব্যস্ততা। শেষ হয়েছে জীবনের সকল লেনদেন তবুও স্মৃতিগুলো রয়ে গেছে!!!
বেশিরভাগ ছবিই ব্রিটিশ লাইব্রেরির, এছাড়াও কোন কোন ছবি ওল্ড ইন্ডিয়ান ফটো,উকিপেডিয়া, পিকচারসফিল্ড থেকেও নেয়া। যারা এই ছবিগুলো ফ্রেমবন্দী করে আজো আমাদের দেখার সুযোগ তৈরি করে দিয়ে গেছেন তাদের প্রতি অকৃতিম ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৪৫