বিয়ে নিয়ে আমি নাকি বড়ই খুঁতখুঁতে স্বভাবের। আর একারনেই কিনা আমার বিয়ের বয়সটা মধ্যাহ্ন পেরিয়ে দিগন্তের দিকে হেলে পড়েছে। অথচ বিয়ের পাত্রীর জন্য আমার কোন শর্তই ছিল না কেবল তিনটে ছাড়া । দেখতে সুন্দরী, বুদ্ধিমতী, আচরণে ভদ্র ও উচ্চশিক্ষিত। এতেই আমি মহা খুঁতখুতে হয়ে গেলাম!!!!
অন্য কারো দোষ দিয়েই বা কি লাভ? কারন আমার কোন পাত্রী সুন্দরী তো বুদ্ধিমতী নন কোনটা বুদ্ধিমতী এবং সুন্দরী তো আচরনে ভদ্র নন। কোনটা আচরনে ভদ্র, শিক্ষিত , বুদ্ধিমতী তো সুন্দরী নন।তাই আমার জন্য বিয়েটা খোঁড়া পায়ে এভারেষ্ট জয় করার মতোই কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল!
তবে পোড়া কপাল জোড়া লাগার মতো করে হঠাৎই আমার পাত্রী পাওয়া গেল।যিনি দেখতে সুন্দরী, বুদ্ধিমতী, আচরণে ভদ্র ও উচ্চশিক্ষিত। ভীষণ উৎসাহ, আবেগ আর আগ্রহ নিয়ে নিয়ে তাই বিয়ে ও ফুলসজ্জা দুটোই দ্রুত সেরে নিলাম। তবে আমার এই উৎসাহ, আবেগ আর আগ্রহ অতি দ্রুতই জলের তোড়ে উবে গেল।আর এহেন কম্মের জন্য দায়ী আমাদের বেসিন। খুলেই বলছি, নতুন বউ সকালে উঠে যখন মুখোমন্ডল জল দিয়ে ধুতে শুরু করলো তখন জলের সাথে সাথে ধুয়ে গেল তার মুখে লেপ্টে দেয়া বিউটি পার্লারের আটা আর ময়দা এবং তার সৌন্দর্য সাথে সাথে আমার পরম আগ্রহও।
ভেজালের বাজারে মাছ ভেজাল হয় কারন ওতে ফরমালিন দেয়া থাকে, টমেটো ভেজাল হয় কারন হরমোন দেয়া থাকে, জিলাপিও ভেজাল হয় কারন হাইড্রোজ দেয়া থাকে! আজ দেখলাম বউয়ের সৌন্দর্যও ভেজাল হয় কারন ওতে বিউটি পার্লারের আটা ময়দা মাখা থাকে!
সে যাই হোক বিয়ে যখন করেছি তখনতো সে তো আমার বউই হয় নাকি? তাই ভালোবাসায় কমতি দেখিয়ে সুপুরুষের(পড়ুন পত্নীভক্তের) তালিকা থেকে আমার নামটা কাঁটা দিতে চাই না।বউকে চমকে দিতে তাই প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে একটা হিরের লকেট নিয়ে আসলাম। তবে বাসায় এসে বউকে পরাতেই আসল ব্যাপারটা টের পেলাম। লকেটটা হিরের ছিলনা ছিল কাচের। ভেজাল সবই ভেজাল!!
ভেজাল লকেটের জন্য আমার বউ কি পরিমান অভিমান করেছেন সেইটুকুন আজ না হয় নাই বললাম। তবে এইটুকুন বলি যে রাগ ভাঙাতে না পেরে বাজার থেকে আনা গোমাংস আমার নিজ হাতেই রান্না করতে হয়েছিল।বহুবার সেধেসুধে বউকে যখন রাজি করিয়ে খেতে বসলাম তখনই আসল মজাটা টের পেলাম ! মাংসটা গরুর ছিল না ছিল মহিষের!
চারদিকের এতো সব ভেজালের ভীর আর সইতে পারলাম না! তাই সাথে সাথেই বুকের বাম পাশে ব্যাথা অনুভব করলাম। দ্রুতই আমাকে নিয়ে যাওয়া হল বিখ্যাত ডাঃ হাবলু মিয়ার চেম্বারে ।মাত্র আড়াই ঘন্টা অপেক্ষা করার পর ডাঃ হাবলু মিয়া আমাকে টানা আড়াই মিনিট ধরে পরীক্ষা করলেন এবং মাত্র সতেরো খানা টেস্ট ধরিয়ে দিয়ে হাজারটা টাকা নিয়ে বিদায় করিলেন। পরের দিন যখন সকল টেস্টই নরমাল স্টাডি দেখাল তখন হাবলু মিয়ার ভেজালের ব্যাপারটাও টের পেলাম।
ভেজালের শহরে থাকতে থাকতে আমি বড় বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।শেষে শহর ছেড়ে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিলাম।তাই লেকের পাড় দেখে মনোরম একটা বাড়িও কিনে নেই। তবে সেখানেও সেই ভেজালের হানা। আমি সহ জমির দাবিদার মাত্র একুশজন। তাই ভেজালটা অবশেষে আদালত পর্যন্ত গড়াল। আর কোর্ট!!!! জমা দেয়া সকলের দলিল দস্তাবেজই ভেজাল বলে রায় দিয়ে দিল। কারন জমির মালিক নাকি বদি মিয়া আর সবার কাছে জমি বিক্রি করেছে গদি মিয়া।
তবে ওই গ্রামে যখন গদি মেয়ার খোঁজ পড়ল তখন তার হদিস মিললো না। আরো চমকের ব্যাপার হলো জায়গার মূল মালিক বদি মিয়ারও কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাহলে কি কোর্টের রায়ও......
ভেজাল সবই ভেজাল!!!!!
বিলিয়ার রহমান
ঢাকা
১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১
ছবি সূত্রঃ ইন্টার নেট
আপডেট:-
আপনাদের অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে এই লেখাটা কপি হয়ে গেছে। একজন ভারতীয় ভাই সেই কপি করা গল্পটি অন্য কেউ যাতে কপি করতে না পারেন তার জন্য কপি রাইটের হুমকিও দিয়ে রেখেছেন!
তিন নম্বরের ভাইজান তার বন্ধুর পোস্ট শেয়ার করেছেন আর চার নম্বরের জন অবশ্য( জানানোর পর) আমার নাম দিয়েছেনএবার একটা
অনলাইন পত্রিকাও এই একই কাজ করে ফেলল
বাংলা নিউজ, অস্ট্রেলিয়া; ভেজাল সবই ভেজাল!!!!
আমার লেখা প্রকাশের জন্য অনুমতি নেয়া তো দূরের কথা আমার নামটা পরযন্ত দেননি!!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:০৪