((অনেক দিন পর লিখলাম, কেমন হল জানাবেন))
মুহাম্মদ মশিউর রহমান
অনেক দিন থেকেই পায়ে হাঁটা ছেড়ে দিয়েছি নানান ব্যস্ততা আর জীবনের একটা সন্ধিক্ষনে না পৌঁছাতে পারার আক্ষেপ, প্রতি মূহুর্তের বেঁচে থাকা পৃথিবীতে আজ শখের বসেই হাঁটতে বেড়িয়েছি।
• ঘটনা-১
রাতে ঝুম বৃষ্টি হয়েছে। এত বৃষ্টিই বর্ষণ হয়েছে গ্রামের রাস্তাঘাট ব্যাকাচ্যাকা অবস্থা। মাথার উপর ছাতা গুজে রাস্তার একপ্রান্ত ধরে সামনে হাটছি। ততটা কাদা রাস্তায় জমেনি যতটা জমার কথা ছিল। রাস্তার ফাঁকে ফাঁকে উঁচু-নিচু ভূমিতে পানি জমেছে। একটা ক্রকশ গতিতে আসা মটর বাইক রাস্তার ময়লা পানি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়ে দিল; যদিও আমি রাস্তার একদম প্রান্তে ছিলাম। বাইকওয়ালা রাফ গলায় বলতেছে, রাস্তায় হাটা শেখেননি বুঝি?? চোখ আকাশে না রেখে মাটিতে রাখুন না হলে রাস্তার ময়লা পানি আপনার উত্তম খাবারে পরিনত হতে পারে।
ভিতর ভিতর প্রচুর রাগ হচ্ছিল তবুও মুখে হাসি ফুটিয়ে একগাল হেসে বললাম, সরি ভূল হয়ে গেছে রাস্তার পাশ ধরেও যে পথিক হাঁটতে পারবে না এমন আইন কবে থেকে কার্যকর হল আমার জানা নেই ! আমার হাঁটতে বেড়ানোটাই উচিৎ হয়নি। বাইকওয়ালা বলল, ঠিক আছে যান সমস্যা নেই। আমি কিছু বললাম না। শুধু তাকিয়ে তার বাইক নিয়ে চলে যাওয়ার দৃশ্যটা দেখছি। মনে মনে একঝাঁক বৃষ্টি আশা করেছিলাম কিন্তু এল না। টিপ্পনী দিয়ে দু-একটা ফোটা বৃষ্টি পড়তেছে। বিরক্তিমাখা মুখখানায় উচ্ছ্বাসের হাসি জুড়ে দিয়ে হাটছি। মিনিট দশেক হাটার পর রাস্তার মধ্যে একটা কোলাহলের মত দৃশ্য দেখতে পেলাম। আবেগের বশবতী হয়ে সামনে গেলাম। দেখে আমার চক্ষু তো চড়কগাছ!
সেই বাইকওয়ালা মাগো! বাবাগো! বলে চিল্লানী দিচ্ছে। রাস্তার পাশের খাড়া পুকুরে তার বাইকের হেডলাইটের একটা চোখ জ্বলে আছে। আমার শরীরে বাইকওয়ালার দেয়া রাস্তার ময়লা এখনো শোভা পাচ্ছে।
ভীড়ের মধ্য থেকে বাইকওয়ালা আমাকে দেখে বলে, ভাইজান আমাকে মাফ করে দেন। (আমি মনে মনে বলছি, এই প্রকৃতি! তুমি এত দুষ্ট কেন! যার যা প্রাপ্য তা সাথে সাথে বুঝিয়ে না দিলে বুঝি তোমার হত না??) বাইকম্যানের হাত ধরে তাকে দাঁড়াতে সাহায্য করতে চাচ্ছি কিন্তু কিছুতেই সে দাঁড়াতে পারছে না। কয়েকজন মিলে হসপিতালে স্থানান্তর করে আসলাম। তার পায়ের কি কনডিশন হয়েছে আগামী তিনদিন পর জানা যাবে। তাছাড়া ডক্টর তার শরীরের বিভিন্ন ছিড়ে যাওয়া অংশ জোড়াতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। লোকটি ব্যথায় চিৎকার করছে আর আমার হাতটি তার বুকের উপর টেনেটেনে নিচ্ছে কেউ যদি দেখত তবে ধরেই নিত আমি তার অতি আপন কেউ। আজকের আগ পর্যন্ত তাকে আর কখনো দেখা হয়নি।
• ঘটনা - ২
একটা পরিচিত টং দোকানে প্রায় সময়ই বসে চা সিগারেট পান করতাম। এককাপ চা আর একটা সিগারেট নিয়ে টং এর নিচে বেঞ্চের উপর বসে গেলাম। আরামচে চা ও সিগারেট একত্রে পান করছি। একটা একশত টাকার নোট তাকে দিলে সে চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ এনে বলে, ভাংতি নেই তাহলে আগে বলে কেন খেলেন না। আপনারা কুকুরের চেয়ে অধম। আপনাদের মধ্যে সামান্যটুকু ভদ্রতা নেই যাহা কুকুরেরও আছে। সামান্য একটা বিষয় নিয়ে কুকুরের সাথে তুলনা! মাথার মধ্যে ফোর-ফোর্টি ভোল্টেজ আগুন লেগে গেল। নিজেকে রাগ থেকে কোন রকমে সামলে বললাম, তোমাকে টাকা ফেরত দিতে হবে না আমার কাছে ভাংতি টাকা আছে তোমাকে বকশিস দিব বলেই ঐটা দিয়েছি, রেখে দাও। লোকটি অসহায় দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে গেল। আমার সেই বিখ্যাত বিড়ম্বনার হাসি হেসে চলে আসলাম। আর মনে মনে বলছি, তুই তোর স্বাভাবিক আচরণ দেখিয়েছোস! তোর কথার সাথে জওয়াব দেয়া আমার সাথে যায় না। আর তোর দোকানেই আসব না! এতে আমার তেমন কোন ক্ষতি হবে না কিন্তু তুই একটা ক্রেতা হারালি। কিছুদিন পর শুনতে পেলাম স্থানীয় লোকজন লোকটার দোকান ভেঙে দিয়েছে। অনেকটা আফসোস হল কিন্তু কেন দোকান ভেঙে দিল জানার আগ্রহ বোধ করলাম না।
• ঘটনা - ৩
এইবার কলেজে নতুন এক ছাত্রী ভর্তি হল। দেখতে ছিমছাম ও অপরূপ সুন্দরী। মেয়েটি যেমনি সুন্দরী তেমনি মেধাবীও বটে। সুন্দরের প্রতি আকৃষ্টতা আমাদের আধুনিক যুগের মানুষের একটু বেশিই। পাড়ার বখাটে কিছু ছেলে মেয়েটিকে প্রায়ই ডিস্টার্ব করে। মেয়েটি আমার প্রতি একটু উয়িক ছিল। আমার পিছনে এই ব্যাপারে বাজে অভিজ্ঞতা থাকার কারনে আমার মন ওর দিকে কিছুতেই ধাবিত করতে পারছি না (যদিও মেয়েদের ইগনোর করাটা সহজ কাজ নহে)। চিন্তা-ভাবনা করে মেয়েটিকে ইগনোর করা শুরু করলাম। ইগনোরে নাকি ভালবাসা বাড়ে এটা আমার জানা তবুও ইগনোর করা শুরু করলাম। আমার ইগনোর নাকি ওর কাছে নির্ভরতার মতই লাগে এটা কি ওর মিথ্যা প্রয়াশ নাকি আমার ইগনোরে সমস্যা বুঝতে পারলাম না। একটা পর্যায়ে মেয়েটি
পাড়ার ছেলেরা যে ওকে ডিস্টার্ব করে তা আমাকে অন্য মাধ্যমে জানাল। আমিও তার উত্তরে ছেলেদের সাথে কথা বলার জন্য বলে দিলাম যাতে একটু রাগ করে হলেও আমার থেকে দূরে সরে যায়। আমি কিছুদিন নির্বিকার ভঙ্গিতে ছিলাম। হঠাৎ একদিন রাস্তার মাঝে মেয়েটির সাথে দূর্ভাগ্যক্রমে দেখা হয়ে গেল। আমি হেটে চলেই যাচ্ছিলাম এমন সময় আমার সামনে এসে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল কয়েক মূহুর্ত। শেষে ভদ্রতাসূচক তাকে জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছ?
সে আমার প্রশ্নের ধার ধারল না। উল্টো আমাকে বলল, কিভাবে পারেন? আপনাকে আমি যত দেখছি ততই অবাক হচ্ছি। আপনি আমাকে ইগনোর করেন বেশ! মেনে নিয়েছি কিন্তু একটা নারীর সম্মান কি আপনার হাতে নয়? যে বখাটে ছেলেগুলি আমাকে ডিস্টার্ব করে আপনাকে ওরা আদর্শ মানে এটা আমি জানি তবুও আপনি চুপ থাকতে পারলেন? ঠিক আছে, আমি আপনার আত্মীয়তার দিক বিচার করলে কিছুই হই না তবে যদি আমি আপনার পরিবারের একজন হতাম তবে কি এভাবে চুপ থাকতে পারতেন, বলুন??
আমি কি জবাব দেব ভেবে পাচ্ছি না, (মেয়েটি তো ঠিকই বলছে, ভালবাসার ব্যাপার দূরে থাক সামাজিক দায়বোধ থেকেই এইটুকু তো আমি করতেই পারতাম। কেন করলাম না!)
শেষে ভঙ্গিমা রেখে বললাম আচ্ছা ঠিক আছে আমি ব্যাপারটা দেখছি। কথাটি শুনে মেয়েটি মনে হল হাফ ছেড়ে বাঁচল। সেকি তার চেহারা ও মুখে আনন্দের ছাপ। আমি কথা না বাড়িয়ে চলে এলাম।
পরেরদিন কলেজ আওয়ারের একটু আগেই সকাল সকাল সেই পাড়ার ছেলেদের পেয়ে গেলাম। আমি একা আর ওরা ছ-সাত জন। ওরা আমাকে দেখে যথেষ্ট সংযমী ও বিনয়ী স্বরে বলল, কেমন আছেন ভাইয়া?? আমি স্বাভাবিক স্বরেই তাদের সাথে কুশল বিনিময় করলাম। যতটা নরম গলায় বলা যায় ওদেরকে বিষয়টি বুঝিয়ে বললাম। ওদের থেকে একজন বলে উঠল, মেয়েটি আপনার কি হয়? আমি ওদের কথার ধরন দেখেই বুঝতে পারলাম ওরা একরোখা ও শ্লেষ টাইপের। আমি সত্যিটাই বললাম, মেয়েটি আমার কিছুই হয় না। আরেকজন বলে উঠল, বুঝছ না ভায়া বুইড়া বয়সে নয়া প্রেমিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। দেখ তোমরা কি বলছ! তোমরা তো আমাকে ভাল করেই চিনো আমি তোমাদের বলছি না, তোমরা ওর সাথে রিলেশন কইরো না আমি বলছি, তোমরা ওকে রাস্তাঘাটে বিরক্ত করো না। আগের জন বলে উঠল, তোর কাছ থেকে তো সাজেশন নেয়ার কিছু নেই। পাশ থেকে আরেকজন বলল, কানের নিচে কয়েকটা দিয়ে ভায়ারে ভদ্রতা শিখাইয়া দে। পিছন থেকে একজন এসে হঠাৎ করেই শার্টের কলার চেপে ধরে বলল, ভাল চাইলে বুঝ দেয়া বন্ধ করে এখানে থেকে ভাগ। আমি লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কিছুক্ষণ পর নিজেকে ধূলোর মধ্যে আবিষ্কার করলাম। আর ওরা হাসাহাসি করছে, আর একটি কথা কানে ভেসে এল, কি ভায়া বুঝ হইছে!
আমি কথার জবাব দেয়ার প্রয়োজন অনুভব করছি না। রাগ হলেও লজ্জায় তা ঢাকা পড়ে গেল। চোখ বন্ধ করেই বাসায় চলে আসলাম। খাটের উপর অর্ধ-শোয়া অবস্থায় ঝুলে আছি আর ভাবছি "এ কেমন সামাজিক দায়বদ্ধতা! এ দায়বদ্ধতা কোনক্রমেই আমার ছিল না"। পৃথিবীর চতুর্দিকে কতই তো আনাচার-পাপাচার চলছে। সবাই তো দেখছে কই কেউ তো প্রতিবাদ করছে না। আজকালকের যুগে মানুষ হচ্ছে হাঁসের মত। হাঁস যেমন গোসল করলে গায়ে পানি লাগে না; মানুষও তেমনি আশপাশে অপরাধ দেখলেও প্রতিবাদ করে না, গায়ে মাখে না। যেন কারো কোন সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই। কোথা যেন পড়েছিলাম, "এই পৃথিবী কখনো খারাপ মানুষের খারাপ কর্মের জন্য ধ্বংস হবে না; ধ্বংস হবে যারা খারাপ কর্ম দেখেও প্রতিবাদ করেনি তাদের জন্য।" ঘন্টাখানেক পার হতেই মেয়েটি কোথা থেকে যেন ঐ কাহিনী শুনে ফেলল। দৌড়ে আমার বাসায় চলে আসল। তার চোখের কোনে জলের আভা দেখে আমার এতই হাসি পেল যে আমি হেসেই ফেললাম। ওর চোখের জল যতই ভারী হচ্ছে আমার হাসিও বেশি চাপছে। হাসব নাকি ওকে শান্ত্বনা দিব বুঝতে পারছি না! এখানে কান্নার তো তেমন কিছু ঘটেনি।
পরের ঘটনা, কিভাবে যেন ইউ.পি চেয়ারম্যান এই ঘটনা শুনল! তার কাছে নাকি ওদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু নালিশ এসেছে। চেয়ারম্যান সাহেব ওদেরকে অনেকবার সাবধান! হতে বলেছিলেন। কিন্তু ওরা সাবধান হয়নি। চেয়ারম্যান সাহেব উপস্থিত জনতার সামনে বলে দিলেন, ওদের বেয়াদবি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, আর মেনে নেয়া যায় না। ওরা এলাকায় অনেক খারাপ কর্ম করে বেড়িয়েছে। শেষমেশ আমাদের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকেও অপমান করেছে। মাফ করাটা ঠিক হবে না। কেউ ওদের জন্য সুপারিশ নিয়ে আসবেন না।
অবশেষে ঐদিন সন্ধ্যার মধ্যে পুলিশ এসে তাদের ধরে নিয়ে গেল। শোনা যায়, ওদের বিরুদ্ধে ইভটিজিং ও নারী উত্যক্ত করনের দায়ে মামলা হয়েছে। ওদের প্রত্যেকের তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
পূনরায় বলতে ইচ্ছা করছে, এই প্রকৃতি! তুমি এত দুষ্টু কেন?
আমার কথা:
পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং কাজ হচ্ছে নিশ্চুপ থাকা। খুব কম মানুষ আছে বিশেষ মূহুর্তে নিশ্চুপ থাকতে পারে। অনেক সময় নিশ্চুপ থাকাটাও একটা প্রতিবাদ। আরে একটা কথা মনে রাখবেন, দাপট দিয়ে কথা বলতে পারলেই আপনি বীর হয়ে গেলেন বিষয়টা এমন নয়। আপনি যদি সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকেন তবে পৃথিবীর সবাইও যদি আপনার বিরুদ্ধে থাকে একজন মানুষ হলে পাবেন যিনি আপনার সাথে একমত হয়ে আপনার পক্ষে কথা বলবে। নীরবতা সবসময়ই সম্মতির লক্ষণ নয় মাঝেমাঝে তা প্রতিবাদ হিসেবেও কাজ করে থাকে। শুধু আপনাকে বুঝতে হবে, নীরবতা কখন সম্মতি আর কখন প্রতিবাদ।
আপনাকে অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে। পরবর্তী লাইফে আপনি কি হবেন বা কতদূর যাবেন সেটা ঠিক করবে আপনি কতটা বিনয়ী ছিলেন। যারা বলে অতীতের সাথে বর্তমান বা ভবিষ্যতের কোন মিল নেই আমি তাদের সাথে সহমত নই। অনেক লেখক ও বিখ্যাত মনীষিগন বলেছেন অতীতকে ভূলে যাও আমিও বলব আপনি অতীতকে ভূলে যান তবে কোন অতীতকে ভূলবেন সেটা আপনাকে বুঝে শুনে ভূলতে হবে। একটা সহজ কথা হচ্ছে সাময়িক সময়ের জন্য আপনি অতীতকে মনে না করে পারবেন কিন্তু আদৌ কি ভূলতে পারবেন? একটু ভেবে বলুন আসলেই কি অতীতকে ভূলতে পারবেন? পারবেন না। লোকে যদি আপনার ভাল কিছু করাকে ঈর্ষান্বিত চোখে দেখে তবে ধরে নিন পূর্বে আপনি বিনয়ী ছিলেন না। ভবিষ্যত সর্বদাই অনিশ্চিত জেনেও মানুষ কেন কঠোর পরিশ্রম করে বলতে পারেন? কারনটা হচ্ছে, তারা "অনিশ্চিত" শব্দটার "অ" টা বাদ দিতে চায়। এবং অনেক সময় মানূষ "অ" টা বাদ দিতে সফলও হয়ে যায়।
আপনি জানেন আপনি পারবেন। কি সুপ্ত প্রতিভা আছে আপনার মাঝে! প্রতিনিয়ত পরিচর্যা করুন। ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারন করুন সেটাতে সফল হলে আস্তে আস্তে লক্ষ্যকে বড় করুন। প্রথমেই বিশাল কিংবা অবান্তর লক্ষ্য সেট করবেন না। এতে আপনি সফল হতে হলে অনেক সময় ব্যয় হবে এবং আপনার মনের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরতে পারে। সফল হওয়ার নির্দিষ্ট কোন রুলস নেই, আপনি সফল হলে তারপরে বলতে পারবেন আপনি কোন রুলে সফল হয়েছেন। তবে এক্ষেত্রে কিছু বিষয় মেনে চললেই হল।
পূনশ্চ:
১. বিনয়ী হতে শিখুন। এটা আপনাকে সবক্ষেত্রেই এগিয়ে রাখবে।
২. কঠোর পরিশ্রম করুন। অবশ্যই তা বুঝে শুনে করবেন। অযথা কিংবা অবান্তর পরিশ্রম করার মানে নেই।
৩. প্রচুর পড়াশোনা করবেন। তবে একদিনে না করে প্রতিদিন করার অভ্যেস করুন। এতে আপনার বিরক্তি কিংবা ক্লান্তি আসবে না।
৪. নিশ্চুপ থাকুন। ভাল কিছু করার পূর্ব পর্যন্ত নিশ্চুপ থাকতে হবে। তবে ভাল কিছুু করলেই এমনভাবে কথা বলবেন না যাতে আপনার বিনয়ী ভাবটা কেটে যায়।
৫. রাগকে নিয়ন্ত্রন করুন। আপনি অত্যধিক রাগী হোন তবে যে বিষয়ে রাগ করবেন তখনকার মূহুর্তে কোন কথাই বলবেন না।
৬. অবসর সময়ে মোটিভেশনাল বই বা গল্প পড়ুন। ইন্টরনেট থেকে সার্চ করেও পড়তে পারেন। কারন, স্কিল+ মোটিভেশন= সাকসেস।
৭. কারো প্রতি নির্ভরশীলতা এড়িয়ে চলুন। নিজে সামান্য কিছু হলেও আয় করে সীমিত টাকায় চলার অভ্যেস করুন। এক্ষেত্রে, নিজের চাহিদাকে সীমিত করে ফেলুন। কৃত্রিম টাকার সংকট করেও চলতে পারেন।
৮. যে কাজটি করা দরকার সে কাজটির প্রতি জেদী হোন, এমনভাবে জেদী হবেন যেন কাজটার শেষ দেখেই ছাড়বেন। না হলে কাজটি করবেনই না মাঝামাঝি কোন অপশন না রাখাটাই ভাল।
৯. গুছিয়ে কথা বলুন। যে বিষয়ে কথা বলবেন সম্মক ধারনা রাখবেন। অযথা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলবেন না।
১০. আপনি ছোট এটা মেনে নিন। এটাই আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে। ছোট হওয়ার অর্থ এই নয় যে, আপনি হেরে গেলেন।
১১. লোভ- লালসা এড়িয়ে চলুন। যেটা আপনার নেই সেটা পাওয়ার জন্য আফসোস করবেন না।বরং সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করবেন আপনাকে যাতে কারো কাছে মুখাপেক্ষী না হতে হয়।
১২. গাম্ভীর্য ভাব এড়িয়ে চলুন। সর্বদাই হাসি-খুশি থাকার চেষ্টা করুন। এতে মন ভাল থাকবে।
১৩. প্রতিযোগিতা করুন নিজের সাথে। আপনার প্রতিযোগিতা আপনার নিজের সাথেই। গতকালকের আপনি আর আজকের আপনার মধ্যে পার্থক্য গড়ে তুলুন।
১৪. সবার মন রক্ষা করে চলতে যাবেন না। আপনি যত ভাল মানুষই হোন না কেন সবাই আপনাকে ভাল বলবে এমনটা আশা করা বোকামী। তাই আপনি নিজেকে সন্তুষ্ট রাখুন।
১৫. নিজেকে ভালবাসুন সবচাইতে বেশি। নিজেকে গুরুত্ব দিন। ছোট ছোট কাজে সফল হলে নিজেকে পুরষ্কৃত করুন। জিএফ, বিএফকে গিফট করার দরকার নেই।
এটা কোন উপদেশ নহে। আপনি আপনার মত করে লাইফ লীড করবেন। আপনার লাইফ, আপনার রুলস। আল্লাহর ভরসা রেখে এগিয়ে যান।
শুভ কামনা রইল।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:২১