১.
রবীন্দ্রনাথ বাস্তব জীবনে কতোটা কী সুখী ছিলেন জানি না। রবীন্দ্র-গবেষকেরাও হয়তো বলতে পারবেন না, কারণ রবীন্দ্রনাথ এতো বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মানষের অনুভূতিগুলোকে স্পর্শ করে গেছেন যে, সবকিছু মিলিয়ে তাঁকে বুঝে ওঠা মুশকিল বলেই মনে হয়।
আমার ছেলেবেলায় কখনো তেমন করে গান শোনা হয় নি। আসলে শোনার সুযোগ ছিল না। গান শোনার যন্ত্রপাতিই ছিলো না আসলে। টেনেটুনে চলা অনেক বড় একটা পরিবারে মানুষ, ভাইবোন হাফ ডজন। কাজেই এইসব জীবনযাপনের অপ্রয়োজনীয় বাহুল্যের সাধ-আহলাদ কেউ করতোও না। তাই সেভাবে গান শোনাও হয়ে উঠে নি।
কিন্তু জীবনের একটা সময়ে একলা হয়ে পড়া জীবনে, সেই গানই হয়ে উঠলো জীবনের অনেকটাই। সব ক্লেশ যেন এক গানেই মুছে যায়, সব কষ্টের উত্তর যেনো দিয়ে রেখেছেন ওই এক রবীন্দ্রনাথ। মাঝে মাঝে ভাবি, উনি সব কষ্ট অনুভব করে বসে আছেন, স্রেফ সুর আর কথা দিয়ে জীবন নামের এই অর্থহীন যাতনাকে সংজ্ঞায়িত করে যাবার দায়িত্বটুকু করে গেছেন।
সেই রবীন্দ্রনাথেরই একটা গান শুনি অনেকদিন। "হ্রদয় আমার প্রকাশ হলো "।
বারবার লুপে পড়ে একই গান বাজে। তারপরও বিরক্তি জাগে না। শুনি, আর মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা কুয়োগুলোর একেকটায় উঁকি দিয়ে দেখি। আর ভাবি, এইখানে আমি কী করছি? এই অযাচিত ভার্চুয়াল রঙ্গমঞ্চে?
২.
দেশে গিয়ে গান খুঁজছিলাম বিভিন্ন সিডি-ডিভিডি র দোকানে। অতুলপ্রসাদ এর গান এর কথা শুনে বেশিরভাগ দোকানেই এমন দৃষ্টি নিয়ে তাকালো, মনে হলো আমি কোন বড় অপরাধ করে ফেলেছি।
অতুলপ্রসাদ এর এই গানটা মাঝেমাঝেই খুঁজে বের করি। তব চরণতলে সদা রাখিও মোরে । সংশয়বাদী হয়েও শুনি ভক্তিগীতি। মাঝে মাঝে ঈশ্বরভক্ত মানুষদের জন্যে ঈর্ষাই হয়। ঈশ্বরে ডুব দেবার লোভ জাগে। মানুষ কী সুন্দর সব ঈশ্বরে সমর্পণ করে দিন কাটায়।
৩.
উপরের প্যানপ্যানে পোস্ট এখানেই শেষ। এই পোস্টের কোন ভূমিকা নেই, বক্তব্য নেইও, থাকার কথাও ছিলো না।
নোট-
জীবনে ভার্চুয়াল অনুসঙ্গগুলোকে একেকটা করে বিদায় জানানোর একটা ছোটখাটো প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেই প্রাক্কালেই অনেকগুলো জিনিষ মিলেমিশে ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়ে গেলো। সামহোয়্যারইনব্লগ ফিডব্যাক বলেছে, তাদেরকে মেইল করে অনুরোধ করলে তারা ব্লগ মুছে দেবে। এবং আমার ব্যবহৃত পুরনো নিকও আছে কয়েকটি, সেগুলোও মুছে দেবার একটা ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে, মনে করছি।
এই ব্লগে যাদের ভালোবাসা পেয়েছি, তাদের কাছে ক্ষমা চাইবার সাহস করবো না। ভালো থাকুন, প্রিয় মানুষগুলো।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৪:০৯