মানুষের পুরো শরীরটা যেন ওয়ান হান্ড্রেড ট্রিলিয়ন হিউম্যান বিয়িংস-এর একটা বিশাল কলোনি । সায়েন্সের ভাষায় যাকে বলা হয় হিউম্যান সেলস। ঐ সেলগুলোর সমষ্টিই আমরা। প্রতিটি সেলেরই আলাদা জীবন রয়েছে। মাইন্ড আছে, স্লিপ আছে, সোজা কথায় ইচ সেল কেন ডু এভরিথিং। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার-এই সেলগুলো সবকিছু করতে পারে কিন্তু আবার একা একা কিছুই করতে পারেনা। তাই একটি বিশেষ পরিকল্পনায় সেলগুলো একসাথে হয়। দে কাম টুগেদার। আর তৈরী হয় হিউম্যান বডি। অর্থ্যাৎ টুগেদার না হলে কিছুই হতোনা। আমি, আপনি, আমরা কিছুই না। পৃথিবী বিখ্যাত সেল বায়োলজিস্ট ব্রুস লিপটন। উইসকনসি ম্যাডিকেল স্কুলের অধ্যাপক। সারা জনম ধরে এথিস্ট। শুধু তত্ত্ব আর তর্ক না করে জীবনের বিশাল অংশ ল্যাবে কাটালেন। উদ্দেশ্য স্রষ্টার অস্তিত্ব বিলীন করা দেয়া। ল্যাবে প্রমাণ করা -"স্রষ্টা দূর্বল মানুষের মনের কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়"।
লাইভ সেল নিয়ে গবেষণা চললো দিনের পর দিন। নতুন বর্ণ হওয়া সেলকে বলা হয় জাইগোট যার ওজন .১২০১ গ্রাম। এর কোনো জীবন নাই। তারপর Integral membrane protein এর মাধ্যমে অনেকটা টিভির এ্যান্টনার মতো এই সেল ইউনিভার্সাল কনসাসনেসের সাথে সম্পর্কিত হয়। এরপর পরই এই সেলের মধ্যে প্রাণ আসে। সেল সবকিছু করা শুরু করে। তিনি সেলের ওপর এক ফোঁটা বিষের ড্রপ ফেলে দেখলেন সেটা খুব দ্রুত দূরে সরে যাচ্ছে। আবার ভালো কোনো খাবার দিলে দ্রুত খাবারের কাছে চলে আসছে। মিঃ লিপটন বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন- সায়েন্স এর কোনো কূল কিনারা করতে পারলোনা। এই কনসাসনেস কীভাবে তৈরি হলো। কীভাবে প্রাণের সৃষ্টি হলো!! কেমন করে হলো? তিনি লিখলেন-" আই থট সায়েন্স রান দ্য ওয়ার্ল্ড"। বিশ্ব মানেই সায়েন্স। সায়েন্সই বিশ্ব পরিচালনা করে। কিন্তু না-এর বাইরেও এক বিশাল রহস্য আছে। যার কূল কিনারা করা মানুষের পক্ষে সম্ভব না। জীবন ল্যাবে তৈরী হয়না। এটা কেউ তৈরী করে। আর যিনি তৈরী করেন-তিনিই স্রষ্টা। বিজ্ঞান না স্রষ্টাই বিশ্ব পরিচালনা করেন। জীবন দেন, জীবন বিনাশ করেন। ছিলেন -পুরো এথিস্ট। হলেন একেবারে বিশ্বাসীদের একজন। এরপর লিখলেন-তাঁর বিখ্যাত বই- "Biology of Belief"- ২০০৫ সালে প্রকাশিত। আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করার মতো টনিকের খোঁজ পাবেন-এই বইয়ের ভিতরে। আমি মনে করি- কোরআন, হাদীস আর ফাজায়েলে আমল ইত্যাদি পড়ার পাশাপাশি এসব বইও পড়া দরকার। কেউ চাইলে বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য সুন্দর, সহজ করে প্রাণবন্ত অনুবাদ করতে পারেন যাতে আমার মতো ম্যাডিকেল সায়েন্সে না পড়া মানুষরাও সহজে বোধগম্য করতে পারেন। জঙ্গী না হয়ে বইকে সঙ্গী করুন। খতম তারাবী পড়ার কথা কোথাও বলা হয়নি। কিন্তু জ্ঞান অর্জন করা ফরজ বা বাধ্যতামূলক বলা হয়েছে। যেটা বলা হয়েছে সেটা করিনা। যেটা করার কথা না সেটা করি। মাংসের টুকরো, গাছের বাকল, মাছের আঁশ, ফলের ভিতর, উটের চামড়ায় স্রষ্টার অলৌকিকত্ব না খুঁজে বইয়ের ভিতর খুঁজুন। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মনের ভিতর এক রকমের স্বর্গীয় শান্তির সন্ধান পাবেন। সবার প্রতি হিংসা, প্রতিহিংসা, জিঘাংসা দূর করে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করি। শুভ রমজানুল মোবারক।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৮:২৭