সহ ব্লগার এস্কিমো একটা দুই পর্বের সিরিজ করেছেন । বলার কিছু নেই , ইতিহাস এমন একটা বিষয় যে যার মতো ব্যাখ্যা করতে পারেন ।
আমি শুধু একটা গল্প এড করি ।
১৯৮৪ সালে এরশাদের ক্ষমতা দখলের পরে যে তীব্র ছাত্র আন্দোলন ধীরে ধীরে দানা বাঁধতে থাকে , সিলেটের মুজিবুল হক সেই আন্দোলনের একজন ছিলেন । তিনি ছিলেন এম.সি কলেজ ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক । আওয়ামী ছাত্রলীগের অন্যতম লড়াকু নেতা , এবং একই সাথে ধীরস্থির মাথার একজন মানুষ ।
আরেকটা দিকে তার খুব দক্ষতা ছিল , হাতের লেখা ছিল খুব সুন্দর ।
"চিকা মারা"র যে শৈল্পিক ক্ষমতা কিছু মানুষের মাঝে আছে , মুজিব তাদের একজন ।
১৯৮৬ সালের গল্প বলছি । এরশাদের বিরুদ্ধে একাট্টা হচ্ছে সারাদেশ । হাসিনা খালেদা ১৫০টি করে আসনে লড়বেন শুনে এরশাদ এক রাতের মাঝেই সিদ্ধান্ত দিল যে কোন প্রার্থীই ৫ আসনের বেশি নির্বাচন করতে পারবেন না । এই সিদ্ধান্তের পরে এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ক্ষীণ সম্ভাবনাটিও তিরোহিত হয়ে গেল ।
আম্বরখানা গার্লস স্কুলের দেয়ালে মুজিব এক রাতে বড় করে লিখলেন - "ভোটের বাক্সে লাথি মারো , গনতন্ত্র কায়েম কর । ছাত্রলীগ "
তার পরের সপ্তাহেই হঠাৎ করে আওয়ামীলীগ নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । সবাই হতাশ ।সবাই মুষড়ে পড়ে ।
সিলেট-১ এ নির্বাচনে দাড়ান সামাদ আজাদ ।
গার্লস স্কুলের সেই দেয়ালে আগের কথাটিই চুনকাম করে মাত্র একটি শব্দ বদলে দেয়া হলো । লাথির জায়গায় চলে এলো নৌকা ।
লেখা হল-"- "ভোটের বাক্সে নৌকা মারো , গনতন্ত্র কায়েম কর । ছাত্রলীগ "
মুজিব সেই দেয়াল লিখনটি দেখলেন । সেখানে দাড়িয়ে বুঝি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন একটা । তারপর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি নিলেন । অনেক অনুরোধের পরেও কেউ আর তাকে দিয়ে ছাত্রলীগ করাতে পারেনি । পরবর্তীতে তিনি হুট করে একদিন কানাডা চলে যান ।
-------------
এই গল্পটি এখানেই শেষ ।
ইতিহাস লেখা হবে । সেই ইতিহাসে কেউ বলবে হাসিনা ঠিক ছিলেন , কেউ বলবে খালেদা ঠিক ছিলেন ।
কিন্তু সেই গল্পে এসব মুজিবের হতাশা আর ক্ষোভের কথা কেউ কোনদিন জানবে না ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৪৬