অদিতির সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিলো চৈত্রের ভর দুপুরে।
আমি ইন্দিরা পার্কের পাশে দাঁড়িয়ে ফুটপাতের চায়ের দোকেনে দাঁড়িয়ে চায়ের মধ্যে বিস্কিট ডুবিয়ে খাচ্ছিলাম ঠিক তখন অদিতি পিছন থেকে শার্টের কলার ধরে এক টানে রিকশায় উঠিয়ে এক ধমকে চুপচাপ বসতে বললো। ব্যাপারটা এক প্রকার এমন ছিলো যে আমি ছিনতাইকারী আর অদিতি কোনো থানার মহিলা এসআই। পুলিশের সাথে তর্ক করা যাবে না, বলা যাবে না আমার অপরাধ কি, আমাকে কেনো ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। অদিতি কে এখন আমার থানার একজন মতো মহিলা এসআই মনে হচ্ছে।
রিক্সাওয়ালা ব্যাটা যেভাবে হা করে তাকিয়ে ছিলো ইচ্ছে করছিলো ব্যাটার মুখে এক কাপ গরম চা ঢেলে দেই। কিন্তু সেটা এই মুহুর্তে করা যাচ্ছে না, অঙ্গভঙ্গি দিয়ে বুঝিয়ে দিলাম, বাটে পেলে এক চুমুকে এক গরম চা খাওয়ে তোকে শাস্তি দিবো ব্যাটা। রিক্সাওয়ালা ব্যাটাকে অদিতি ধমকের সুরে সংসদ ভবনের সামনে যেতে বললেন। তারপর শুরু হলো অদিতির সেই মহান উক্তি আপনাকে না কতোবার নিষেধ করেছি চায়ের মধ্যে বিস্কিট ডুবিয়ে খাবেন না?
চৈত্রের ভরদুপুরের তাপমাত্রার থেকেও এই মুহুর্তে অদিতির রাগের তাপমাত্রা বেশি। যে কোনো মুহুর্তে এই তাপমাত্রা আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাই আপাতত বিটিভির দর্শকের ভূমিকায় অভিনয় করাই ভালো৷
আমি মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলাম হ্যা। অদিতি এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে কি করবে নিজেই এখন দিশেহারা।
- আপনি আমার ফোন ধরেন না কেনো?
- অদিতি আমি মোবাইল ফোনটাকে এড়িয়ে চলি। আমি সব সময় ফোন সাথে রাখি না৷ এই যে এখনো নেই।
- ফোন কোথায় রাখেন?
- ফোন সফিকের প্যান্টের পকেটে।
- সফিকের প্যান্টের পকেটে আপনার ফোন থাকে কেনো?
- সফিকের ফোন নেই ও আমার ফোন দিয়ে ওর মায়ের সাথে কথা বলে। আমি শুধু বলে দিয়েছি আমার ফোন আসলে যেনো না ধরে।
- আপনাকে নিয়ে না আর পারা যায় না। আপনি নিজেকে অনেক বুদ্ধিমান মনে করেন, কিন্তু আপনি কি জানেন যে আপনি আগাগোড়াটাই বোকা।
- না জানতাম না, এখন জানলাম।
- পকেটে কি?
- সিগারেট এর প্যাকেট।
- সিগারেটের টা কি না খেলে চলেই না?
- এই প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই অদিতি, জানলে আমি তোমাকে ফোন দিয়ে জানাবো৷
(চলবে......)
- আরিফ রুমি
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:১৪