somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এআর আরিফ রুমি
আমি মানুষ হিসেবে মর্মান্তিক বোকা। বোকা মানুষেরা ভালো হয়। আমিও ভালো। আমি জানি একদিন আমি থাকব না। একজন আরিফ রুমির অনুপস্থিতিতে কারো বিশেষ কিছু যাবে আসবে না। এ শহরে আগের জ্যাম লাগবে, বর্ষায় কদম ফুটবে, লোডশেডিং এর রাতে ফিনিক ফোটা জোছনা আসবে- কি অদ্ভুত প্রকৃতি

'' ভয় পেলেই ভয় , ভয় করো জয় "

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রাইমারি থেকে আমাদের শিক্ষা দেয়া হয়েছে কিভাবে মানুষের সাথে কথা বলতে হবে। রাস্তাঘাটে মানুষকে দেখলে সালাম দিতে হয়।
এমন কোনো কথা বলা উচিত না যাতে মানুষ কষ্ট পায়।

ছোটো বেলায় যেটা শিখেছি অংক, একটু বড় হলাম সেটা দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেলো গণিত । এরপর নাইন - টেন এ আসলাম হয়ে গেলো জেনারেল ম্যাথা - হায়ার ম্যাথ।

প্রাইমারীতে গণিত স্যার একটা শাস্তি দিতো, অংকের হোম ওয়ার্ক না করে আনলে পরেরদিন কালো ব্লাকবোর্ড এ চক দিয়ে সেই অংক করে স্যারের সামনে বুঝিয়ে দিতে হবে।
এর চেয়ে হোম ওয়ার্ক করাই তো ভালো।
কিন্তু হোম ওয়ার্ক, ধূর মর গিয়া, কালকে ব্লাকবোর্ড এ গিয়া বুঝিয়ে দিবো।
এটা ছিলো শাস্তি।

হাইস্কুল জীবনে ৫ বছরে যতোগুলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে প্রত্যেকটা অনুষ্ঠানে প্রত্যেকটা আইটেমে আমার নাম ছিলো।
ব্যান্ড সঙ্গীত ( তখন ব্যান্ড সঙ্গীত কি জানতাম না,ক্লাস টেনে উঠে জানলাম ব্যান্ড সঙ্গীত কি?), গজল, রবিন্দ্র সঙ্গীত (ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে " এই একটা গানই পাড়তাম) , আধুনিক গান, কমেডি মানে কৌতুক।
সব শেষে "নাচ" সব আইটেমে আমার নাম থাকবেই।
১০ টা আইটেমের মধ্যে যেকোনো ৫ টায় নাম দেয়া যাবে। আর সেই ৫ টার আইটেমে আরিফ নামে একটা নাম সব সময় থাকবেই।

গান পাড়ি কি না ওটা দেখার বিষয় না, ষ্টেজে উঠতে হবে। আর আমি সবসময় ষ্টেজ উপভোগ করতাম।
এলাকায় মেলা হলে মাইকে গান গাইতাম, যে কোনো যায়গায় সুযোগ হলেই গান গাইতাম।
এই জন্য পরিচিতিটা অন্য রকম ছিলো।

তা কথা হচ্ছে ভাই আপনি গান গাইতেন, নাচতেন, ব্লাকবোর্ড এ অংক করতেন ভালো কথা এগুলো আমাদের শুনিয়ে লাভ কি?

কয়েকটা ষ্টেজ শো করার পর কিছু ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করার পর ইনবক্সে কিছু মেসেজ আসে ভাইয়া, আপনিতো ষ্টেজ শো করেন। মানুষকে হাসান, ভালো ভালো কথা বলেন।
আমি নিয়মিত মিরাক্কেল দেখি, এনটিভির হাসো দেখি কমেডি শেখার খুব ইচ্ছা কিন্তু ষ্টেজে উঠতে ভয় লাগে।

আমি যখন কোনো ষ্টেজে কমেডি করতে উঠি বা গান গাইতে উঠি সবাই বলে তোমার সাহস আছে।
আমি বলি কিসের সাহস?
এই যে তুমি এতোগুলা মানুষের সামনে উঠে কথা বলো, মানুষকে হাসাও, গান গাও, ষ্টেজে উঠে অর্নগল কথা বলতে থাকো এটা অনেক সাহসের দরকার।
আমি তো ভয়েই ষ্টেজের ধারে কাছে যাই না।
কিন্তু আমার তো ভয় লাগে না, আমি নাচতে নাচতে ষ্টেজে উঠে যাই।
মনে মনে বলি আজকে হাসিয়ে গড়াগড়ি খাওয়াবো বা আজকে গান গেয়ে ষ্টেজ ফাটিয়ে ফেলবো। আজ গান গেয়ে ষ্টেজের নিচের মানুষগুলোকে নাচাবো।

আরেকটা কমন কথা শুনি,
ভাইয়া, আমি গুছিয়ে কথা বলতে পাড়িনা।
আমি ভালো প্রেজেন্টেশন দিতে পাড়িনা।
মানুষের মাঝখানে গেলে কি বলতে কি বলে ফেলি এই জন্য তেমন মানুষের সাথে মিশি না। আগ বাড়িয়ে মানুষের সাথে কথা বলি না।
ভয় লাগে।

তাদের কে বলি,
ওই যে বললাম ব্লাকবোর্ড, চক দিয়ে অংক করিয়ে সেটা আবার কতোগুলা ছাত্র-ছত্রীদের মাঝে বুঝিয়ে দিতে হতো। ওখান থেকেই ভয়টা পালিয়ে গেছে।
তোমরা যারা এখন যেটাকে প্রেজেন্টেশন বলো ওটা আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শাস্তি সরূপ ব্লাকবোর্ড এ অংক করে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি।

তোমরা ষ্টেজে উঠতে ভয় পাও সেই ভয় আমি স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে রেখে এসেছি।
আজকে ক্লাসের দেয়া পড়া হয়নি তারপরো সেই ভয়ে কখনো শেষ বেঞ্চে গিয়ে বসিনি।
সব সময় প্রথম বেঞ্চটাই দখল রাখার চেষ্টা করেছি।
ওখান থেকেই ভয়টা পালিয়ে গেছে।
স্কুলে একবারে ভালো ছাত্র ছিলাম না আবার খারাপ ছাত্র ছিলাম না।
বাঁদরামিতে এক্সট্রা পরিচিতি ছিলো।
এখন বলতে গর্বই হয়, হয়তো লেখা পড়ার পিছনে লেগে থাকলে এতো কিছু শিখতাম না।
হয়তো যেটার হওয়ার কথা ছিলো সেটাই হয়েছি।
আপসোস করি না।
কখনো কোনো কিছুতে ভয় করিনি।
ইংলিশ এক্সামের আগের রাতে বিয়েতে নাচানাচি করে সকাল ১০ টায় এক্সাম দিতে গিয়েছি।তারপরো ফেল আসেনি, কনফিডেন্স ছিলো।
পরীক্ষা তো কি হয়েছে, ভয় পাওয়ার কি আছে?
পরীক্ষা পরীক্ষার যায়গায়, আমি আমার যায়গায়।

সব শেষে একটা কথাই বলবো,
ভয় পেলেই ভয়।
ভয়কে করো জয়।
এখন কি হয়েছি, সেটা বড় কথা নয়।
জীবন মানে যে টাকা না সেটা বুঝতে শিখেছি।
জীবনে মানে কতোটা সুখি আছি সেটা বুঝতে শিখেছি।
দিন শেষে কতো টাকা পকেটে আয় করেছি বা আছে সেই হিসাব করি না, দিন শেষে কতোটুকো মানুষ হতে পেড়েছি সেটাই হিসাব করি।
মৃত্যুর পর আমার কতো টাকা আছে এটা যাতে কেউ গুনতে না পাড়ে, মৃত্যুর পর মানুষ হিসাবে কতোগুলো ভালো কাজ করেছি সেটা মানুষ হিসেব করে আমাকে যেনো মনে করে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৫৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×