মাঝ রাতে অনঘ এর মোবাইল টা যুদ্ধ ক্ষেত্রে অস্ত্রের শাণিত শব্দের মত ঝনঝন করে শব্দ করে উঠলো। এই রিং টোন সেট করা শুধু মাত্র তার প্রমিকার জন্য। এই যুদ্ধ ক্ষেত্রে অস্ত্রের শাণিত শব্দের মত ঝনঝন শুরু হলে অনঘ বুঝতে পারে যে যুদ্ধ এসে গেছে। যুদ্ধে জয় হতে গেলে যেমন বিভিন্ন কৌশল আয়ত্ব করতে হয় ঠিক তেমনি প্রমিকার সাথে ও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে গেলে ও নানা পন্থা অবলম্বন করতে হয়।
অনঘ এর কাছে মনে হয় প্রেম করা আর যুদ্ধ করা একই কথা। আর প্রমিকার সাথে কথায় জেতা তো অনেকটা যুদ্ধ জয়ের স্বরুপ।
অনঘ মোবাইল এর কলটা রিসিভ করে কানের কাছে নিতেই শুনতে পেল
-হ্যাঁ জান কি করছ… ?
অনঘ কোন উত্তর না করেই কানের থেকে মোবাইল নামিয়ে ঘড়ির দিকে তাকালো
রাত তখন ১ টা।
সময় দেখে অনঘ এর মেজাজ চটে গেল
-নয়লি রাত ১ টার সময় মানুষ কি করে ?
- যাহ্ কি যে বলো না। এই জানো আকাশে না আজ ইয়া বড় একটা চাঁদ উঠেছে। চলো ছাদে যায় আর দুইজন গল্প করি।
- আমি ইচ্ছি আঁতেল গোত্রের মানুষ, তাই চাঁদ নিয়ে আতলামি করা আমার সাজে না।
নইলি এবার সেই যুদ্ধ ক্ষেত্রের অস্ত্রের শাণিত শব্দের মত ঝনঝন করে উঠলো।
- উল্লুক এর মত কথা বলো কোন? ভাল ভাবে কথা বলতে পারো না? তোমার সাথে সম্পর্ক রাখা সত্যি খুব কঠিন ব্যাপার। আমার পক্ষে আর সম্ভব না। আজ থেকে তোমার আমার কোন সম্পর্ক নেই। সামান্য একটা কথা বললাম আর যে ভাবে কথা বললে; ভাবতেই বমি আসে আমার। আর কখনও আমাকো ফোন করবা না।
- ঠিক আছে ফোন করবো না। আর হ্যাঁ ব্রেকাআপ করো আর যাই করো সকাল সাতটায় যদি ডেকে না দাও তোমার সাত গুষ্ঠিকে আমি দেখে নেবো। মনে থাকে যেন...।
নইলি গজগজ করতে করতে লাইন কেটে দিলো। আর অনঘ লাইন কাটার মিনিট দুইপর থেকে আবার ও নাক ডাকতে শুরু করলো।
সকাল সাতটা বাজতে না বাজতেই আবার ও সেই যুদ্ধ ক্ষেত্রের ঝনঝনানির শব্দ শুরু হয়ে গেল মোবাইলে।
অনঘ ঘুম মাখা গলায় কল রিসিভ করে আলতো স্বরে বলল
-হু আড়, এবার শুরু করতে পারো ব্রেকাআপ সেশন। ততখনে আশা করি আমার অফিস শেষ হবে যাবে।
নইলি খ্যাচখ্যাচ করে উঠল ‘এত আতলামি করতে হবে না, কামলা খাটতে যাও’।
অনঘ হাসতে হাসতে আবার ও উত্তর দিলো
অফিস থেকে ফেরার পথে তোমার সাথে দেখা করে আসবো। আমি কল করলে রুম থেকে নিচে নেমে এসো।
নইলি চেঁচিয়ে বলল ‘বলেছিনা তোমার সাথে আমার আর কোন সম্পর্ক নেই’। এই কথা বলে সে আবারও লাইন কেটে দিলো।
অনঘ অদ্ভূত একটা হাসি মাখা মুখ নিয়ে বিছানা ছাড়ল।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে ভাবতে লাগলো ‘আজ আর সেভ না করলে চলবে না, আড় এই ভাবে আমাকে দেখলে নিশ্চত এই খোঁচা খোঁচা দাড়ি টেনে টেনে ছিড়বে’।
আর ঐ দিকে নইলি তার বাক্সপ্রাট্টা খুলে দেখতে লাগলো আজ সে কোন শাড়িটা পরবে। উল্লুকটা আবার শাড়ি পরা দেখলে খুশি হয়।
---
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯