somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অর্বাচীন পথিক
https://www.facebook.com/fresh.wayfarer nলেখার কোন অংশ লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। বানান ভুল পাওয়া যেতে পারে এর জন্য আগে থেকেই ক্ষমা চাই । ভুল বানান গুলো ধরিয়ে দিতে সাহায্য করলে সেটা ঠিক করে দেওয়া হবে। (ব্লগের লিংক ফেসবুক শেয়ার করা

চম্পাকলির ছলাকলা (পর্ব- হাত পাখার বাতাস)

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চম্পাকলি ফুলেফেঁপে গজগজ করছে স্বামীর গায়ে বাতাস করতে করতে। রাতের এই ভ্যাঁপসা গরমে মধ্যে গবগব করে ঘামছে নিজে কিন্তু তারপর ও স্বামী কে তাল পাখার বাতাস করতে হচ্ছে তার। চম্পাকলি ব্যাপার টা কোন ভাবে হজম করতে পারছে না, যে স্বামী নাক ডেকে ঘুমাবে আর সে শুয়ে বসে বাতাস করবে সারা রাত।

চম্পাকলির জান পুরাই কয়লাখনি বানিয়ে দিয়েছে তার স্বামী। কোন কিছু নিয়ে তার মাথা ব্যথা নেই তাই তাকে মাঝে মাঝে একটু অধটু টাইট দেয় চম্পাকলি অতিষ্ঠ হয়ে।

চম্পাকলি খুব বিখ্যাত তার স্বামীরর কাছে, দজ্জাল বউ হিসাবে। তবে তার সেই দজ্জাল রুপ শুধু মাত্র দেখতে পায় তার স্বামী। তার স্বামী বহুত কাকুতি মিনতি করে ও কখনও তাকে সবার সামনে প্রমান করতে পারেনি যে, সে খারাপ বউ। এমন কি তার শাশুড়ি পর্যন্ত এটা মানতে নারাজ যে তার ছেলের বউ খারাপ।

চম্পাকলি কিছুখন পাখা দিয়ে বাতাস করার পর একটা বুদ্ধি আটলো স্বামীকে শায়েস্তা করার জন্য। কারন তার অবহেলার কারনে শুধু মাত্র এই বাড়ীতে কারেন্ট আসছে না। চম্পাকলি হাতের পাখার ডাটি দিয়ে তার স্বামীর পায়ের তলায় কসে দিলো একটা কশান। সাধের আরামের ঘুমের মধ্যে এমন ব্যাথা পেয়ে কাঁচুমাচু করতে করতে ঘুম থেকে ঠেলে উঠলো বেচারা চম্পাকলির স্বামী। চম্পাকলি জানে তার স্বামী সরল মনের মানুষ আর একটু শক্ত করে ধরে ঝাঁকালে কলকল করে সব সত্যি কথা বলে দেবে। আর এখন সে এই সুযোগটা কাজে লাগেবে, এটা সে আগেই ভেবে নিয়েছে।

-তুমি আজ দুপুরবেলা বাজারে কি খেয়েছিলে?
ব্যাথা কু- কু করতে করতে স্বামী বেচারা বলল
- এই মাঝ রাতে মেরেধরে এই প্রশ্ন কোন করছিস তুই?
- ধান বিক্রি করা টাকা দিয়ে যে আজ বাজারে বিরিয়ানি খেয়েছো সেটা জানে আম্মা?
স্বামী বেচারা আমতাআমতা করে বলল- না।

চম্পাকলি এবার রাক্ষসির মত চোখ বড় বড় আর খামচি দিয়ে তার হাত ধরে বলল- এখন যদি আমি আম্মা কে কথাটা বলি তাহলে কি হবে বুঝতে পারছো?

স্বামী বেচারার প্রাণ এবার বধ হবার জোগাড় হল...
- না না... তুই বলিস না। মা তাহলে আমাকে কাঁচা কুঞ্চি দিয়ে পিটাবে।
- ঠিক আছে বলবো না তাহলে, যদি তুমি এখন আমাকে বাতাস করো। আর ফজরের আজান পর্যন্ত তুমি বাতাস করবা। এরপর আমি ঘুম থেকে উঠে বাতাস করবো তোমাকে।

বোকা স্বামী বলে উঠলো আজানের পর তো সব জানালা দরজা খুলে দিস। তখন তো আর বাতাস করা লাগে না।
দজ্জাল চম্পাকলি পাখার ডাটি দিয়ে আর একটা কশান দিয়ে বসলো তার স্বামী হাতের উপর আর বলল
- তখন কি করতে হয় সেটা আমি বুঝবোনে। কথা না মানলে কিন্তু এখনি আম্মা কাছে গিয়ে সব বলে দিবো। তখন বুঝবে মজা কাকে বলে। আম্মাকে না জানিয়ে ধান বেচা টাকা দিয়ে বিরিয়ানি খাওয়ার মজা।
স্বামী বেচারা জানে তার মা তার বউ এর থেকে ও অনেক বেশি শক্ত। আর তার মা এই বয়সে ও তাকে মারতে দ্বিধা করবে না বিনা কাজে টাকা খরচ করার জন্য।

বেচারা স্বামী বুঝলো আবার ও সে চম্পাকলির বুদ্ধির কাছে সে হেরে গেল আর অত্যাচারের স্বীকার হল। তবে সে কোন ভাবে বুঝতে পারছে না সে কি ভাবে বুঝলো যে "আমি বাজার থেকে বিরিয়ানি খেয়ে এসেছি"। আমি তো তাকে বলিনি !?"
এখন আর বউ এর কথা না মেনে বিপদে পড়তে হবে আর সেই বিপদের নাম "মায়ের হাতের কাঁচা কুঞ্চির কশান"। আর তার মায়ের পক্ষে এই বয়সে ছেলে কে পেটানো অসম্ভব কিছু না।

বেচারা স্বামী তার বউ এর কাছে খুব নরম সুরে প্রশ্ন করলো "বউ তুই বুঝলি কিভাবে আমি বাজার থেকে বিরিয়ানি খেয়ে এসেছি ? আমি তো তোকে কিছু বলিনি ? "
চম্পাকলি কোন উত্তর করলো না শুধু বড় বড় চোখ করে আলাভোলা স্বামী কে শাসালো। চম্পাকলি পাখাটা স্বামীর হাতে গুজে দিয়ে শুয়ে পড়লো আর মুখ লুকিয়ে হাসতে লাগলো বিজয়ের হাসি। আর মনে মনে বলতে লাগলো "আরে বোকা খাওয়ার সময় এখানে ওখানে দাগ লাগালে কে না বুঝবে, আর দাগের সাথে তো কিছু টা হলে ও থাকে বিরিয়ানির ঘ্রাণ "

স্বামী বেচারা পাখা হাতে নিয়ে বাতাস করতে করতে চিন্তায় অস্তির, কিভাবে জানলো তার বউ এই গোপন খবর ? বউ এর ঘাড়ে আবার জিন-টিন আছে নাকি, যে খবর দিয়ে গেছে ?

অন্যদিকে চম্পাকলি আলাভোলা স্বামীকে চিন্তায় ফেলে নিশ্চিন্তে ফোস ফোস করে নাক ডাকে ঘুমাত লাগলো।
আর বেচারা স্বামী ঘুমিয়ে-ঘুমিয়ে ঝিমিয়ে-ঝিমিয়ে তার দজ্জাল বউ কে বাতাস করতে লাগলো ও চিন্তা করে বের করতে লাগলো কিভাবে বউ এই গোপন খবর জানলো।

-----
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×